লিভার ক্যানসার সারাতে সার্জারি আর রক্ত দেওয়া, আবার সেটাই বাড়িয়ে দেয় ক্যানসার ফিরে আসার ঝুঁকি

দ্য ওয়াল ব্যুরো: লিভার ক্যানসার হয়েছে।  ডাক্তারি পরিভাষায় ‘হেপাটোসেলুলার কারসিনোমা’।  সার্জারি ছাড়া গতি নেই।  আর সার্জারি করতে গেলে ব্লাড ট্রান্সফিউসন করতে হবে।  আর সেখানেই লুকিয়ে আছে আরও বিপদ।

এই ট্রান্সফিউসন বরং বাড়িয়ে দেয় ক্যানসার ফিরে আসা বা রেকার করার বিপদ। এবং তড়িঘড়ি মৃত্যুর সম্ভাবনা। রক্ত দেওয়ার পরিমাণ যদি খুব কমও হয়, তবুও এর বিপদ কমে না। যে গবেষণা বা সমীক্ষায় এই তত্ত্ব উঠে এসেছে, সেটির প্রকাশ পেলভিয়েনায়, ‘ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ এনেস্থেসিওলজি’ র আলোচনাসভায়।

এই সমীক্ষা আরো দেখিয়েছে, ব্লাড ট্রান্সফিউসনের পরিমান যদি খুব কম হয়, তা হলেও রক্ষে নেই। মাত্র এক ইউনিট থেকে চার ইউনিট রক্ত ট্রান্সফিউজ করতে হলেও ক্যানসার রেকার করার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ২৩ শতাংশ, আর মৃত্যু এগিয়ে আসার সম্ভাববনা বেড়ে যায় ৫৫ শতাংশ।

তাইওয়ানের তাইপেই মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির ডক্টর ইং সুয়ান তাই এই সমীক্ষাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর কথায় ” কোনও সার্জারির প্রয়োজনীয় ব্লাড ট্রান্সফিউসন ক্যানসারের বিপদ আখেরে উল্টে বাড়িয়ে দেয়, সেটা এখনও অবধি খুব স্পষ্ট নয়।” কিন্তু এটা মনে হচ্ছে , ট্রান্সফিউসন যে কোনওভাবেই হোক না কেন, প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেমকে কোনওভাবে দাবিয়ে দেয়।

গোটা বিশ্বের নিরিখে এই হেপাটোসেলুলার কারসিনোমা সবচেয়ে ‘কমন’ ক্যানসারগুলোর মধ্যে পঞ্চম এবং মৃত্যু ঘটানোর ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে আছে। হেপাটাইটিস বি বা সি তে আক্রান্ত হয়ে বা মদ্যপানের জন্য যাদের লিভার সিরোসিস হয়, তাদেরই এই ক্যানসার সবচেয়ে বেশি হয়। সার্জারি করে বাদ দেওয়া হয় ক্যানসার আক্রান্ত টিস্যু তো বটেই, এমন কী চারপাশের তথাকথিত ভালো টিস্যুও।

ডক্টর তাই-এর দল পরীক্ষা চালিয়েছে ১৬৪৯ জন রোগীর উপরে, যাদের সার্জারি হয়েছে, এর মধ্যে তিরিশ শতাংশ রোগীকে সার্জারির সময়ে বা সাতদিনের মধ্যেই এক থেকে চার ইউনিট রক্ত দিয়ে তাঁদের উপর ৪৫ মাস ধরে নজর রাখা হয়েছে।

দেখা গেছে, যাঁদের ব্লাড ট্রান্সফিউসন করতে হয়নি, তাঁদের তুলনায় এই গোত্রের রোগীদের ক্যানসারফিরে আসার সম্ভাবনা ২৩% বেশি।  এবং প্রিম্যাচিওর মৃত্যুর সম্ভাবনা ৫৫ % বেশি।