
Cervical cancer: মেনোপজের পরেও রক্তপাত, সাদা স্রাব, জরায়ুমুখের ক্য়ানসার নয় তো!
গুড হেলথ ডেস্ক
জরায়ুমুখের ক্যানসার বা সার্ভিকাল ক্যানসার (Cervical cancer) নিয়ে সচেতনতা চলছে নানা দিকেই। ভারতীয় মহিলাদের সব থেকে বেশি এই ক্যানসারই হয়। জরায়ুর একেবারে নীচের অংশকে বলে জরায়ুর মুখ বা ‘সার্ভিক্স অব দ্য ইউটেরাস’। এখানেই ক্যানসার হয়। একেই সার্ভিকাল ক্যানসার বলে।
কেন জরায়ুমুখে ক্য়ানসার (Cervical cancer) হয়?
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) (Human papillomavirus infection)-এর সংক্রমণে এই ক্যানসার হয়। জরায়ুর নীচের অংশ যোনির সঙ্গে যুক্ত, সংক্রমণ হয় এখানেই। তবে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা ছাড়াও সারভাইকাল ক্যানসারের আর একটি প্রধান কারণ অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক। সাধারণত ৩৮ থেকে ৪২ বছর বয়সিরাই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বয়স ৬০ পেরলেও এটি হতে পারে, তবে সংখ্যা তুলনামূলক কম (Cervical cancer)।
এইচপিভি ভাইরাস শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভেঙে তছনছ করে দেয়। বহুদিন অবধি টিকে থাকতে পারে এই ভাইরাস। জরায়ুর কোষের অস্বাভাবিক বিভাজন ঘটিয়ে ক্যানসার তৈরি করতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কে বা একাধিক সম্পর্কে থাকলে জরায়ু-মুখের কোষগুলি পরিরর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনই ক্যানসারকে ডেকে আনে। অনেকক্ষেত্রেই যোনিতে সংক্রমণ হলে, লজ্জা ও অস্বস্তির কারণে রোগ এড়িয়ে যান মহিলারা। ডাক্তারের কাছে যেতে দেরি হয়। ফলে চিকিৎসাও দেরিতে শুরু হয়। ক্যানসার তার অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তাই সচেতনতা সবচেয়ে আগে দরকার।
Vitamin Deficiency: চোখের কোল ফুলছে, ত্বক শুষ্ক, সারাদিন ক্লান্তিভাব? এই ভিটামিনেরই অভাব হচ্ছে
লক্ষণ চিনে নিন
সার্ভিকাল ক্যানসার আগাম বোঝা মুশকিল। তবে কিছু লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে।
১) অস্বাভাবিক রকমের ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং হলে সতর্ক হতে হবে। মাসে এক বার পিরিয়ডের সময়ে ব্লিডিং স্বাভাবিক। কিন্তু দু’টি পিরিয়ডের মাঝে এক বার ব্লিডিং হলে সতর্ক হতে হবে।
২) মেনোপজের পরেও যদি ব্লিডিং হতে থাকে, সহবাসের পরে রক্তপাত হয় তাহলে সাবধান হতে হবে।
৩) অস্বাভাবিক সাদা স্রাব, থকথকে সাদা এবং দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হলে সতর্ক হতে হবে।
৪) তলপেটে ব্যথা, পিরিয়ডের দিনগুলিতে প্রস্রাবের সময় ব্যথা হলে বুঝতে হবে বিপদ ঘনাচ্ছে।
দেরি নয়, প্যাপ টেস্ট করিয়ে নিন
ত্রিশের বেশি বয়স হলে এবং এইসব অস্বাভাবিকতা ধীরে ধীরে দেখা দিলে দেরি না করে প্যাপ টেস্ট (PAP Test) করিয়ে নিতে হবে। গড়ে তিন বছর অন্তর সব মহিলারই এই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।
কীভাবে হয় প্যাপ টেস্ট? চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী কাঠির আগায় তুলো দিয়ে সার্ভিক্স থেকে সামান্য রস তুলে নেন। তা কাঁচের স্লাইডে কিছুক্ষণ রাখা হয়। এর পরে তা গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হয়। কোষের কোনও পরিবর্তন ধরা পড়লে তা হলে চিকিৎসা শুরু করে দিতে হয়।
এ ছাড়াও ভিসুয়্যাল ইনস্পেকশন উইথ অ্যাসেটিক অ্যাসিড (VIA Test) আছে।
মেয়েরা কীভাবে সাবধান হবেন?
খুব কম বয়স থেকে যৌন সম্পর্ক বিপদ ডেকে আনতে পারে। নাবালিকা বিয়ে ও গর্ভধারণ বন্ধ করতে হবে।
মুঠো মুঠো ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে পরবর্তীকালে সমস্যা হতে পারে।
মেয়েদের বেশি করে ভিটামিন-সি, মিনারেল ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
ভ্যাজাইনাল হাইজিনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নোংরা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকেও ভাইরাল ইনফেকশন (Human papillomavirus infection) হতে পারে। পিরিয়ডের সময় বেশি করে পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
যোনিতে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা, সমস্যা হলে লজ্জায় লুকিয়ে না গিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। প্রথমেই বিপদ বুঝে পরীক্ষা করিয়ে নিলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু হবে।