ক্যানসারের ভ্যাকসিন? পশুদের শরীরে ইনজেক্ট করে কী দেখলেন বিজ্ঞানীরা

ক্যানসারের মতো মারণ রোগের ভ্য়াকসিন (Cancer Vaccine) তৈরি সম্ভব কিনা সে নিয়ে বহু বছর ধরেই চর্চা চলছে। ক্যানসারের ভ্যাকসিন যদি বানানো যায় এবং তা মানুষের শরীরে কার্যকরী হয়, তাহলে সেটা হবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম বড় আবিষ্কার। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরাই এই গবেষণায় মাথা ঘামিয়ে যাচ্ছেন।

আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিজের (NIAID) গবেষকরা ক্যানসারের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছিলেন। ল্যাবরেটরিতে ইদুরের শরীরে ভ্যাকসিন ইনজেক্ট করে দেখা হচ্ছিল টিউমার কোষকে তা আদৌ নির্মূল করতে পারে কিনা। পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারবে কিনা সে নিয়ে সংশয়ও ছিল। এতদিনে আশার সামান্য আলো দেখেছেন বিজ্ঞানীরা।

 cancer immunotherapy

ক্যানসার ভ্যাকসিন (Cancer Vaccine) কি কার্যকরী হচ্ছে?

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পুরোটাই এখনও গবেষণার স্তরেই আছে। দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিন শিরায় ইনজেক্ট করলে শরীরের প্রতিরোধ শক্তি (Immune System) সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই ভ্যাকসিন টি কোষকে (Cytotoxic T cells) সক্রিয় করে, আর টি কোষ টিউমার কোষগুলিকে আক্রমণ করে তাদের নির্মূল করার চেষ্টা করে।

বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, পশুদের শরীরে এই ভ্যাকসিন (Cancer Vaccine) ইনজেক্ট করার পরেই টি কোষ বা টি লিম্ফোসাইট কোষ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। টিউমার কোষগুলির বিভাজন বন্ধ করতে টাইপ ১ ইন্টারফেরন (Type I interferon) তৈরি করেছে শরীরের ইমিউন সিস্টেম। টাইপ ১ ইন্টারফেরন এক ধরনের সাইটোকাইন যা শরীরের প্রদাহ, জীবাণুর সংক্রমণ, টিউমার কোষগুলিকে চিহ্নিত করতে কার্যকরী ভূমিকা নেয়। 

 cancer vaccines

টি-কোষের নিজস্ব রিসেপটর থাকে(TCR) । এই রিসেপটরের কাজ হয় ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা সংক্রামক প্যাথোজেনকে চিহ্নিত করে তাদের ধ্বংস করা। এই টি-কোষও আবার রিসেপটর প্রোটিনের উপর ভিত্তি করে দুই রকমের হয়। সাধারণত CD8 রিসেপটর প্রোটিন যুক্ত হলে টি-কোষ সাইটোটক্সিক হয়ে ওঠে (Cytotoxic) । তখন তাকে বলে ঘাতক কোষ। এই কোষের কাজ হল টিউমার কোষগুলিকে নষ্ট করে ফেলা। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ক্যানসার ভ্যাকসিন (Cancer Vaccine) তাই এই কোষগুলিকেই জাগ্রত করে ক্যানসার নির্মূল করার চেষ্টা করছে। পশুদের শরীরে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল কিছুটা হলেও সফল হয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।