
মোমো, চাউমিন, এগরোল, পিৎজা, বার্গার, চপ, পাকোড়া, বিরিয়ানি- এ সব শুনলে কার না জিভে জল আসে? ভাল মন্দ এত সব খাবার কিন্তু কারও কারও প্রতিদিনের অভ্যেসও বটে। ব্যস্ততার দিনে কি নেসেসিটি আর লাক্সারির বিভেদ করার সময় আছে? পকেটে রেস্তো থাকলে রোজই ফাস্টফুড, রোজ মন্ডা-মিঠাই ভুরিভোজ। এ দিকে পেটও মাঝে মাঝে জবাব দেয়। হঠাৎ করে বেঁকে বসলেই একটা দুটো আমাশার ওষুধ। এ দিকে চুপিসারে বাড়তে থাকে ক্যানসারের উপসর্গ।
‘কলোরেক্টাল ক্যানসার’ নামটা রাশভারী হলেও অধিকাংশ মানুষ প্রথমে তেমন পাত্তা দেন না। তারপর যখন ৫০ পেরোলে পেটের অসুখ এটা সেটা লেগেই থাকে, তখন মালুম পাওয়া যায় এই অসুখের কত জ্বালা!
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিমাত্রায় চর্বিজাতীয় খাবার, ফাস্টফুড ও কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ার অভ্যাস এই ক্যানসারের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। শারীরিক পরিশ্রম কম করলে, অলস জীবনযাপন করলে বা ওজন বেড়ে গেলে কলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এ ছাড়া অ্যালকোহল আসক্তি, ধূমপান কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
প্রাথমিকভাবে এই ক্যানসারের কারণ নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন। প্রথম দিকে এ রোগের কোনও উপসর্গই থাকে না। যদিও কোলন বা মলাশয়ের কোন জায়গায় ক্যানসার রয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে উপসর্গের বিভিন্নতা দেখা যায়। যেমন, খিদে কমে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা, মাথা ঘোরা, কানে শব্দ হওয়া ও ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি। কখনও কখনও মলের সঙ্গে তাজা রক্ত পড়া, মলের আকৃতিতে পরিবর্তন, মলত্যাগের অভ্যাস পরিবর্তন (কখনও ডায়েরিয়া, কখনও কষা), রক্তশূন্যতা, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, উদর বা অ্যাবডোমেনে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা, ডায়েরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, অজানা কোনও কারণে শরীরের ওজন কমতে থাকার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা , কোলনোস্কোপি , সি টি স্ক্যান বা এম আর আই (ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং) করে কোলরেক্টাল ক্যানসার ধরা পড়লে অপারেশন করেই তার চিকিৎসা করা হয়। তাই কোলরেক্টাল ক্যানসারকে সহজভাবে নেবেন না। আগে থেকে সচেতন হোন। জানবেন, সুস্থ অভ্যাসই সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি।