
ভারতে ৮০% স্কুল পড়ুয়া পরীক্ষার আতঙ্কে ভুগছে, স্ট্রেস-অবসাদ বাড়ছে: এনসিইআরটি
গুড হেলথ ডেস্ক
পরীক্ষা নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে স্কুল পড়ুয়ারা, বাড়ছে মানসিক চাপও (Child Mental Health)। সমীক্ষায় এমনটাই দাবি ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (এনসিইআরটি)। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, করোনার এই দু’বছরে ঘরবন্দি দশায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্থিতিতে অনেক বদল এসেছে। একেই স্কুল বন্ধ, মেলামেশা, খেলাধূলা বন্ধ, তার ওপরে অনলাইনে পড়াশোনার অভ্যাসের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেনি অনেকেই। ফলে স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি, পড়াশোনা নিয়ে আতঙ্ক বেড়েছে। শুধু তাই নয়, সমীক্ষা বলছে, ভবিষ্যত নিয়ে এখন বেশি চিন্তিত স্কুল পড়ুয়ারা। বেশিরভাগের মধ্যেই আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দিচ্ছে।
গত দু’বছর ধরে প্রায় ৩ লাখ ৭৯ হাজার ছাত্রছাত্রীদের ওপর সমীক্ষা চালিয়েছে এনসিইআরটি। মূলত ক্লাস ফাইভ থেকে হাইস্কুল অবধি পড়ুয়াদের নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অন্তত ৮১ শতাংশ পরীক্ষা নিয়ে অ্যাংজাইটি, টেনশনে ভোগে (Child Mental Health)। পরীক্ষার সময় এগিয়ে এলে তাদের মানসিক চাপ, উত্তেজনাও বাড়ে। সিলেবাস কীভাবে শেষ হবে, পরীক্ষা খারাপ হলে কেরিয়ারের কী হবে, ইত্যাদি চিন্তায় স্ট্রেস প্রচণ্ড বেড়ে গেছে এখনকার স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে। ফলে কমবয়স থেকেই অবসাদ বাড়ছে অনেকের।
সমীক্ষা আরও বলছে, করোনা পরিস্থিতি বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলেছে। আগে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করা, খেলাধূলায় অভ্যস্ত ছিল বাচ্চারা। পরীক্ষার আগের সময়টা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই গাইড করতেন। তাই পরীক্ষা নিয়ে ভয় থাকলেও এতটা অ্যাংজাইটি হত না বাচ্চাদের। কিন্তু করোনার এই গত দু’বছরে স্কুলের সঙ্গে সম্পর্ক অনেকটাই ঘুচেছে ছাত্রছাত্রীদের। অনলাইনে পড়াশোনাও ঠিকমতো হয়নি অনেকের। তাই পরীক্ষা নিয়ে ভীতি মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। পড়াশোনা করার অভ্যাসেও বদল এসেছে। সে কারণে এখন থেকেই কেরিয়ার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বাচ্চাদের।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় বসে কম্পিউটারে কাজ? হাড়-পেশি-স্নায়ুর ক্ষতি এড়াতে কী করবেন
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইরের পরিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েরা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে (Child Mental Health)। মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের নেশা বাড়ছে। সারাক্ষণ ইন্টারনেটেই মজে আছে তরুণ সমাজ। যার ফলে বর্তমান সময় সাইবার ক্রাইমের ঘটনাও অনেক বেড়েছে। মানসিক অবসাদের শিকার হচ্ছে কমবয়সীরা। ইন্টারনেটে ডিপ্রেশন কমানোর উপায় খুঁজতেও দেখা গেছে কমবয়সীদেরই। এমনকি স্কুল পড়ুয়াদের অনেকেই নিজেদের চেহারা নিয়েও অবসাদেও ভুগছে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা এবং লকডাউনের কারণে বাচ্চারা সামাজিক মেলামেশা ভুলেছে। ঘরকুনো হয়ে পড়েছে (Child Mental Health)। এখন খেলাধূলার থেকে ডিজিটাল মিডিয়াতেই বেশি সময় কাটে বাচ্চাদের। এক ধরনের ডিজিটাল অ্যাডিকশন তৈরি হচ্ছে যা তাদের ভবিষ্যতের ওপর খুবই খারাপ প্রভাব ফেলবে। মেজাজ খিটখিটে হচ্ছে বাচ্চাদের, অবাধ্য হচ্ছে। অনলাইন গেম হোক বা পর্নোগ্রাফি সাইট, বাচ্চারা এখন এমন কিছু দেখছে বা শুনছে যা তাদের বয়সে হওয়া উচিত নয়। বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের সমস্যা আরও। দেখা গেছে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে কমবয়সীদের মধ্যে। সাইবার অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েছেন অনেকে। আবার ডিজিটাল মাধ্যমে অপরাধ চক্রের শিকারও হতে হয়েছে অনেককে। তার থেকেও গভীর মেন্টাল ট্রমার শিকার হয়েছে জেন এক্স-জেন ওয়াই।