
শিশুর ত্বকে লাল লাল র্যাশ, সঙ্গে হাঁচি-কাশি, কী কী ধরনের অ্যালার্জি হতে পারে বাচ্চাদের
গুড হেলথ ডেস্ক
একেবারে ছোট বয়স থেকে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত যে কোনও সময়ে ত্বকে অ্যালার্জির (Child Allegy) সমস্যা দেখা দিতে পারে বাচ্চাদের। লালচে র্যাশ, ফুসকুড়ি, চুলকানির সমস্যা অনেক বাচ্চারই হয়। সে সঙ্গেই হাঁচি-কাশি, শ্বাসকষ্ট হতে দেখা যায়। শুরুতেই আসল সমস্যা ধরতে পারা যায় না অনেক সময়েই। গরমের কারণে ত্বকে চুলকানি বা ঠান্ডা লেগে হাঁচি-কাশি হচ্ছে ভেবে এড়িয়ে যান বাবা-মায়েরা। পরে সেটাই বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেয়।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর ত্বকে যদি ধারাবাহিক ভাবে ফুসকুড়ি, চুলকানির সমস্যা চলতেই থাকে তা হলে গুরুত্ব নিয়ে দেখা প্রয়োজন (Child Allegy)। এ ছাড়াও হাঁচি, শ্বাসকষ্টও অ্যালার্জি তো আছেই। বুঝতে হবে নির্দিষ্ট কিছু অ্যালার্জির সমস্যা হচ্ছে বাচ্চাদের। প্রথম থেকেই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে তার ট্রিটমেন্ট শুরু করলে অ্যালার্জি সেরে যেতে পারে।
কী কী ধরনের অ্যালার্জি হতে পারে বাচ্চাদের?
রাইনাইটিস অ্যালার্জি
রাতে ঘুমোতে গেলেই নাক বন্ধ, ঘুম থেকে উঠেও নাক বন্ধ। বছরভর মাথা ব্যথা, হাঁচি ও সর্দির সমস্যা যদি লেগেই থাকে, তা হলে সতর্ক হতেই হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালার্জিক রাইনিটিস বা অনেক সময় সাইনাসাইটিসে ভোগে বাচ্চারা।
গরমের র্যাশ, মিলিয়ারিয়া
তাপ বাড়লে অনেক সময়েই লাল র্যাশ দেখা যায় শিশুদের শরীরে। বিশেষ করে কাঁধ, পিঠ, গলায়। প্রচণ্ড গরমে স্কিন অ্যালার্জি হয় ছোট বাচ্চাদেরও।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং: ঘড়ি ধরে অল্পসল্প উপোস করে ওজন কমিয়ে ফেলুন, সেলিব্রিটিরা করছেন
একজিমা
কজিমা সাধারণত শিশু বয়স থেকেই শুরু হয় (Child Allegy)। রাসায়নিক, ডিটারজেন্ট, ধুলাবালি বা পশুপাখির মলমূত্রের সংস্পর্শে এলে ত্বক লাল হয়ে যায়, শুষ্ক হয়ে পড়ে, কখনো ফেটে যায় এবং চুলকায়।
আরটিকেরিয়া বা হাইভস
খাবার থেকে এই ধরনের অ্যালার্জি হতে পারে। ওষুধপত্র বা পোকামাকড়ের কামড় থেকেও এই সমস্যা হয়। ত্বকের জায়গায় জায়গায় ফুলে ওঠে, প্রচণ্ড চুলকায়। আরটিকেরিয়ায় ত্বকে প্রদাহ হয়, ত্বক লাল হয়ে ফুলে যায়।
কেন হয় অ্যালার্জি?
শিশুদের বিভিন্ন খাবার থেকে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি (Child Allegy)। দুধ, ডিম, বাদাম, চিংড়ি মাছ, কাঁকড়ার মতো খাবার থেকে অ্যালার্জি ছড়ায়। তবে ধুলো-বালিও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। ঠান্ডা লেগে কোল্ড অ্যালার্জি হয় বাচ্চাদের। ঋতু পরিবর্তনের সময়ে বাতাসে ভাসমান ফুলের রেণু, ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জি বাড়তে পারে। অনেকের ধারণা, অ্যালার্জি হলে শুধু ত্বকে র্যাশ বের হয়। এই ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। চিকিৎসকদের মতে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন সর্দি-জ্বর আসতে পারে শিশুর।
কীভাবে সতর্ক হবেন বাবা-মায়েরা
বাচ্চাদের হাল্কা সুতির পোশাক পরান। অ্যালার্জির ধাত থাকলে বাইরে বেরনোর সময় মাস্ক অবশ্যই পরাতে হবে।
রাস্তার কোনও খাবার খাওয়াবেন না, যেমন রাস্তায় বানানো রোল-চাউমিন, শরবত, আইসক্রিম, লস্যি-কোল্ড ড্রিঙ্কস এগুলো অ্যালার্জির সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
বাড়িতে বানানো কম তেলে রান্না করা খাবারই খাওয়াতে হবে বাচ্চাদের। বেশি করে সব্জি, ফল, দানাশস্য খাওয়াতে হবে। বাড়িতেই বানিয়ে দিন শরবত, ফলের রস। টক দই শরীর ঠান্ডা রাখবে। তাতেও অন্যের থেকে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে।
বারবার স্নান না করালেও অবশ্যই ভাল ভাবে ঠান্ডা জলে কাপড় ভিজিয়ে গা মুছিয়ে দিন শিশুদের। দিনে একবার খুব ভাল ভাবে স্নান করান।
জামাকাপড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরাতে হবে। বিছানার চাদর, বালিশ যেন পরিষ্কার থাকে।
অনেক সময়ে পোষ্যের লোম থেকেও অ্যালার্জির হয় বাচ্চাদের। সেদিকে সাবধান থাকতে হবে অভিভাবকদের।
ঘন ঘন ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি হলে বা হাঁচি-কাশি-জ্বর হলে ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে।