
বাচ্চা খুব একগুঁয়ে, বদমেজাজি, চঞ্চল? ‘এডিএইচডি’র সমস্যা ঘরেঘরে, সতর্ক হোন
গুড হেল্থ ডেস্ক: অনেক বাচ্চা নিয়েই অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, বাচ্চা নাকি অসম্ভব চঞ্চল, কারও কথা শোনে না, প্রচন্ড বদমেজাজি, বকলেই এটা ওটা ভেঙে ফেলে, এক জায়গায় বসে থাকতে পারে না, বিপজ্জনক কাজ করে ফেলে সবাইকে ধরে মারে ইত্যাদি আরও কত কী! শেষে নাস্তানাবুদ হয়ে ওঁদের বলতে শোনা যায়- ‘একে নিয়ে আর পেরে উঠছি না’। অগত্যা হাল ছেড়ে দেন অনেকে। অনেকে আবার বাচ্চাকে কষিয়ে মেরে-ধরে ভাবেন উচিত শিক্ষা দেওয়া গেল বুঝি!
স্বাভাবিকভাবে এমন বাচ্চার বাবা-মা, বাড়ির লোকজন, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, এমনকি এদের বন্ধুরাও এদের নিয়ে সমস্যায় পড়েন, এমনকি বিব্রতবোধ করেন। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বয়স বাড়ছে, কিন্তু এ সমস্যা আর কমছে না!
এমন ক্ষেত্রে হতে পারে, বাচ্চার অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভ ডিসঅর্ডার আছে। ‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভ ডিসঅর্ডার’ হল একটি জটিল অসুখ। হয়তো আপনার বাচ্চাও এই অসুখে আক্রান্ত, কিন্তু আপনার এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র জানা নেই। আপনি ভাবছেন এ বুঝি নিছকই দুস্টুমি। কিন্তু তা নাও হতে পারে। অবহেলায় কিন্তু বেড়ে যেতে পারে এই অসুখ। তাই সচেতন হোন এখনই।
কমবেশি সব বাচ্চারাই দুষ্টু হয়। কিন্তু চঞ্চলতার জেরে বাচ্চা যদি দুদিন ছাড়া ছাড়াই মাথা ফাটায়, হাত ভাঙে, ঘরের দামী জিনিস তছনছ করে ফেলে, সবেতেই অধৈর্য হয়ে পড়ে, একেবারেই কথা না শোনে— তাহলে ভাববার কারণ আছে বৈকি! এ ক্ষেত্রে দরকার উপযুক্ত চিকিৎসা। প্রয়োজন হতে পারে স্পেশাল এডুকেটরেরও। বাচ্চার এমন বেপরোয়া আচরণ লক্ষ্য করলে তাকে নিয়ে যান সাইকোলজিস্টের কাছে। বাচ্চার বুদ্ধি যদি স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকে, তাহলে মেন্টাল রিটার্ডেশন কনসালটেন্টের প্রয়োজন পড়ে।
মনে রাখবেন, বাচ্চার এই অসুখ মূলত আচরণের অস্বাভাবিকতা। তাই বিহেভিরায়াল থেরাপি এ ক্ষেত্রে অবশ্যই কার্যকর। এ ছাড়া ওষুধের প্রয়োজনও হতে পারে। অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভ ডিসঅর্ডার, সংক্ষেপে এ ডি এইচ ডি পরবর্তী কালে অন্যান্য মানসিক জটিলতাও তৈরি করতে পারে। সুতরাং, এই ধরণের সমস্যায় যত শীঘ্র সম্ভব কোনও মনস্তত্ত্ববিদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।