Malaria: লজেন্স খেলেই কমবে ম্যালেরিয়া! বাচ্চাদের জন্য কড়া ওষুধের বদলে ক্যান্ডি বানাল জেএনইউ

গুড হেলথ ডেস্ক

কড়া ওষুধ খেতে কী আর ভাল লাগে। বাচ্চারা তো ওষুধ দেখলেই মুখ বেঁকিয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। কিন্তু রোগ হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। ম্যালেরিয়া (Malaria) বা ডেঙ্গি জ্বর হলে তার ট্রিটমেন্ট খুব কড়া। রক্ত পরীক্ষা করাও, কড়া ডোজের ওষুধ খাও। বাড়াবাড়ি হলে ইঞ্জেকশন দিয়ে দেবেন ডাক্তারবাবু। বাচ্চারা বেশিরভাগ সময়েই ভাবে এমন যদি হত যে ওষুধ খেতে লাগত অনেকটা লজেন্সের মতো। ওষুধ খাওয়াও হবে আবার লজেন্সের স্বাদও থাকবে। বাচ্চাদের মনের ইচ্ছা পূরণ করেই এবার ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক লজেন্স বানাল জওহরলাল নেহুরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) গবেষকরা।

লজেন্স ঠিক নয় আসলে ওষুধই (Malaria)। কিন্তু সুগার ক্যান্ডি। এই সুগার ক্যান্ডি সঠিক ডোজে খেলেই আর অন্যান্য ওষুধ খাওয়ার দরকার পড়বে না। ন্যাচারাল সুগার অ্যালকোহল ক্যান্ডির সঙ্গে ম্যালেরিয়ার কিছু ওষুধ মিশিয়ে লজেন্সের মতো করে বানিয়েছেন জেএনইউ-র গবেষকরা। খেতে সুস্বাদু আর রোগজীবাণুর সঙ্গেও লড়বে। বাচ্চাদের এই ওষুধ খাওয়াতে কোনও সমস্যাই হবে না।

বাচ্চাদের ম্যালেরিয়া (Malaria)। ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসা দরকার

ম্যালেরিয়া একটি পরজীবী বাহিত রোগ। যা এক জন মানুষ থেকে অন্য জন মানুষে ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা কামড়ালে তার লালার সঙ্গেই আমাদের শরীরে ঢোকে এই পরজীবীরা। ম্যালেরিয়ার বাহক পরজীবী চার রকম— প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স, প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম, প্লাসমোডিয়াম ওভিলি এবং প্লাসমোডিয়াম ম্যালেরি। তাদের মধ্যে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরামের আক্রমণেই হয় ভয়ঙ্কর ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া।

A review on automated diagnosis of malaria parasite in microscopic blood smears images | SpringerLink

করোনার মধ্যেই মশাবাহিত রোগ (Malaria)। বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে ম্যালেরিয়া। বর্ষাকাল বলে শুধু নয়, ম্যালেরিয়া হানা দিতে পারে সারা বছরই। দূষণ যেভাবে বাড়ছে, জমা জল, নোংরা, আবর্জনা বাড়ছে, তাতে মশার উপদ্রবও বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। আক্রান্ত হচ্ছে বাচ্চারাও।

Covid Vaccine: ৬ মাসের শিশুর জন্যও টিকা আনছে ফাইজার, তিন ডোজে কাবু হবে ওমিক্রন

Malaria

লক্ষণ কী কী

ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া (Malaria)। যদি বাচ্চাদের হয় তাহলে তার প্রভাব বিপজ্জনক। এই ম্যালেরিয়া হলে শরীরের নানা অঙ্গ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় ম্যালেরিয়ার ফলে মস্তিষ্কে সমস্যা হয়েছে। যদি ঠিক সময়ে চিকিৎসা হয় তা হলে ম্যালেরিয়া রোগ সম্পূর্ণ সেরে যায়। কোনও সমস্যা দেখা যায় না। তবে এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘদিন দুর্বলতা থেকে যায়। অনেক সময় অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা যায়।

malaria affects children

ম্যালেরিয়া মানেই প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, বমি ভাব চলতেই থাকে। শরীরের তাপমাত্রা সাধারণত ১০৫-১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা না হলে রোগী আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে, মৃত্যুও হতে পারে। ম্যালেরিয়া রোগীদের প্রচণ্ড গায়ে হাত-পায়ে ব্যথা হতে পারে। পেট খারাপ, মলের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া, তলপেটে ব্যথা, প্রচণ্ড ঘাম, মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা, খিঁচুনি এই লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে।

 কী ওষুধ বানিয়েছে জেএনইউ

5 Fantastic Benefits of Erythritol – The New-Age Sweetenerন্যাচারাল সুগার ক্যান্ডির মধ্যে রয়েছে এরিথ্রটল। এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট যাকে সুগার অ্যালকোহল বলে। শর্করার বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। ভুট্টার মধ্যে পাওয়া যায়, আবার ফার্মেন্টেশন করে যখন কোনও খাবার বা অ্যালকোহল তৈরি হয় তখনও এটি তৈরি হয়। বিয়ার, ওয়াইন, চিজ ফার্মেন্ট করার সময় এরিথ্রটল তৈরি হয়। গবেষকরা দেখেছেন এই এরিথ্রটল ম্যালেরিয়র প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করতে পারে। তাই গবেষকরা এমন লজেন্স তৈরি করেছেন যার মধ্যে এরিথ্রটল সুগার অ্যালকোহল থাকবে।

জেএনইউ-র স্পেশাল সেন্টার ফর মলিকিউলার মেডিসিনের অধ্যাপক শালিজা সিং বলছেন, এরিথ্রটল ম্যালেরিয়ার পরজীবীদের নষ্ট করতে পারে। প্লাসমোডিয়াম গোত্রের প্যারাসইটের জন্যই ম্যালেরিয়া হয়। এরিথ্রটল এই পরজীবীদের বৃদ্ধি ও বিভাজন থামিয়ে দিতে পারে।

সাধারণত ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া ক্ষেত্রে আর্টেমিসিনিন, প্রাইমাকুইন ইত্যাদি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ভাইভ্যাক্স ম্যালেরিয়া ক্ষেত্রে ক্লোরোক্লুইন ও প্রাইমাকুইন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। গবেষকরা বলছেন, ম্যালেরিয়ার কিছু ওষুধের সঙ্গেই এই সুগার অ্যালকোহল মিশিয়ে দিয়ে ক্যান্ডি তৈরি করা হয়েছে। এটি নির্দিষ্ট ডোজে খেলে ম্যালেরিয়া কমে যাবে খুব কমদিনের মধ্যে। বাচ্চাদের ভয়ও থাকবে না।