
বর্ষায় পেটের নানা রোগে ভোগে বাচ্চারা, কী কী নিয়ম মানলে সুস্থ থাকবে আপনার সন্তান
গুড হেলথ ডেস্ক
বর্ষায় পেটের সমস্যা (Monsoon Illness) নতুন কিছু নয়। বড়রা, এই ঋতু পরিবর্তনের সময় ছোট বাচ্চারাই ভোগে সবচেয়ে বেশি। পেট ব্যথা, বমি, পেট খারাপ লেগেই থাকে। বমিবমি ভাব থাকে, অ্যাসিডিটি ভোগায়। সাধারণ বদহজমও মাথাচাড়া দেয়। গরমের ছুটির পর বাচ্চাদের রুটিনেও কিছুটা রদবদল হয়। এখন স্কুলে যেতে হচ্ছে বাচ্চাদের। খাওয়াদাওয়ার সময়, পরিমাণও বদলে যাচ্ছে। তাই একটু নিয়মের এদিক-ওদিক হলেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
এখনকার দিনে বেশিরভাগ বাচ্চার টিফিনেই বার্গার, সসেজ, সালামি জায়গা করে নিচ্ছে। অথবা চাউমিন, ম্যাগি বা নানা রকম পেস্ট্রি। সময় বাঁচাতে বাইরের খাবারই দিচ্ছেন বাবা-মায়েরা। এতে বাচ্চার পেটের সমস্যা বাড়ছে। বাড়িতে তৈরি চাউমিন হলেই তা ফাস্ট ফুড। নিয়মিত খেতে শুরু করলে অম্বল-বদহজমের সমস্যা বাড়বে। স্কুল ছুটির পরে আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিঙ্কস বা চিপস হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকেরা। বাচ্চার বায়না মেটাতে পিৎজা অর্ডার দিচ্ছেন। এতে সমস্যা বাড়ছে বই কমছে না। কৃমির প্রবণতা থাকলে পেটের যে কোনও সমস্যায় আরও কাহিল হয়ে পড়ে শিশু। তাই বর্ষায় বাড়ির খুদে সদস্যদের পেটের খেয়াল রাখা বিশেষ প্রয়োজন (Monsoon Illness)।
বর্ষাকালে বৃষ্টির নোংরা জল জমে চারদিকে। এই জমা জলই পেটের রোগের আঁতুড়ঘর। পরিচ্ছন্নতার অভাবও অসুখের অন্যতম কারণ। এই সময় পোকা-মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে। খাবারের উপর বসে জীবাণু ছড়ায়। তার ফলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস শরীরে ঢুকে খাদ্যনালীতে সংক্রমণ ছড়ায়। ফুড পয়জনিংয়ের আশঙ্কা বেশি থাকে এই সময়। রাস্তার খোলা খাবার, শরবত-লস্যি, কাটা ফল, আচার ইত্যাদি খেলে পেটের সংক্রমণে ভুগতে পারে শিশু। মারাত্মক ডায়েরিয়া হতে পারে শিশু, আমাশা বা ডিসেন্ট্রিও হতে পারে, যা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে গেলে রক্তপাতও ঘটায়।
সুস্থ থাক আপনার সন্তান, বাবা-মায়েরা কী কী নিয়ম মানবেন?
সবচেয়ে আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় জোর দিতে হবে। বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। খাবার বানানোর সময় যে জল বা পাত্র ব্যবহার করছেন তা যেন খুব পরিচ্ছন্ন হয়।
খাবার আগে বাচ্চার হাত ভাল করে ধুইয়ে দেবেন, নিজেরাও হাত ধোবেন বার বার (Monsoon Illness)।
শিশুর বয়স এক বছরের মধ্যে হলে তাকে অন্য খাবার দেওয়ার চেয়ে মায়ের দুধই খাওয়ান।
শিশুর খাবার পাতে সবুজ শাক-সব্জি ও ফলমূল রাখুন। তবে কাটা ফল দেবেন না।
পাঁচ বছর বা তার কম বয়সি বাচ্চাদের ভাইরাল ডায়েরিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি। শিশুর দেড় থেকে আড়াই মাস বয়স পর্যন্ত ডায়েরিয়া আটকানোর বিশেষ ভ্যাকসিন দিয়ে নিন।
ডায়েরিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে জিঙ্ক সিরাপ এবং প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল দেওয়া যেতে পারে।
হাতের কাছে সবসময় ওআরএস রাখুন। পারলে জল ফুটিয়ে খাওয়ান। ফিল্টারের জল ছাড়া বাইরের জল খাওয়াবেন না। বোতলবন্দি মিনারেল ওয়াটারও দেবেন না।
জরায়ুমুখের ক্যানসার ঠেকাতে ভারতে প্রথম টিকা তৈরি করল সেরাম, ছাড়পত্র ড্রাগ কন্ট্রোলের
শিশুর স্কুলের টিফিনের দিকে নজর দিন। পেটে সয় না এমন খাবার একেবারেই দেওয়া যাবে না। ভাজাভুজি, তেলমশলাদার খাবার, ভাজা স্ন্যাকস, মশলা দেওয়া মুখরোচক ফাস্ট ফুড খাওয়াবেন না বাচ্চাকে।
নুডলস বা প্রিজারভেটিভ মেশানো খাবার এড়িয়ে চলুন।
বেশি করে জল খাওয়াতে হবে বাচ্চাকে। ডিহাইড্রেশন হয়ে গেলে সমস্যা আরও বাড়বে (Monsoon Illness)। চা-কফি, কোল্ড ড্রিঙ্কস বা যে কোনও বাজারচলতি নরম পানীয় না দেওয়াই ভাল।
বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
পেট ব্যথা হলে স্যালাইন ওয়াটার দিন। বাড়াবাড়ি হলে দেরি করবেন না, সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখিয়ে নিন।
নিজেরা ডাক্তারি করে বাচ্চাকে কোনওরকম অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না।