Necrotizing Enterocolitis: দিয়া মির্জার ছেলে আক্রান্ত বিরল এই রোগে, পর পর দু’বার সার্জারি হয়েছে

গুড হেলথ ডেস্ক

ছেলের এক বছরের জন্মদিনে তার স্বাস্থ্যের কথা নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে লিখেছিলেন অভিনেত্রী দিয়া মির্জা। এক বছরের ফুটফুটে শিশু আভ্যান আজাদ এমনই এক বিরল রোগে (Necrotizing Enterocolitis) আক্রান্ত হয়েছিল যে জন্মের এক বছরের মধ্যে তার দুটি বড় রকমের অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল। এই সার্জারিতে প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকিও ছিল। দিয়া বলেছেন, তার ছেলে এখন অনেক সুস্থ। পর পর দু’বারের অস্ত্রোপচারে ডাক্তাররা বাঁচিয়েছেন তাকে। দিয়া মির্জার ছেলে নয়, এমন অসুখে আক্রান্ত হয় অনেক সদ্যোজাতই। বিশেষ করে এখনকার সময় মায়েদের প্রসবকালীন অবস্থায় নানারকম জটিলতা দেখা দিচ্ছে। ডেলিভারি হচ্ছে সময়ের আগেই। ফলে এমন অসুখও বেড়ে চলেছে।

Dia Mirza

কী রোগে আক্রান্ত দিয়া মির্জার ছেলে?

দিয়ার ছেলের আভ্যান যে রোগে আক্রান্ত তার নাম নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিস (Necrotizing Enterocolitis)। জন্মের ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে এই রোগ ধরা পড়ে শিশুটির। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ৮২০ গ্রাম। নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিস ধরা পড়ার পরে বাচ্চাটিকে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়। পর পর দু’বার মেজর সার্জারি হয় শিশুটির। চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে প্রতিটা অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এর পরও ২১ দিন অবধি শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন ডাক্তাররা।

নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিস (Necrotizing Enterocolitis) কী?

অপরিণত ও কম ওজনের শিশুদের এই রোগ হয়। সময়ের আগেই যদি ডেলিভারি হয় ও শিশু দেড় কিলোগ্রামের কম ওজন নিয়ে জন্মায়, তাহলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিস অন্ত্রের অসুখ। অস্ত্রের দেওয়ালে ছিদ্র হয়ে যায়। অস্ত্রের কোষগুলিতে প্রদাহ বা ইনফ্ল্য়ামেশন শুরু হয়। এই ছিদ্র দিয়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। অস্ত্রের দেওয়াল ফেটে রক্তক্ষরণ শুরু হতে পারে। ফলে প্রচণ্ড পেট ব্যথা শুরু হবে শিশুর। মল অ্যাবডমিনাল ক্যাভিটি বা উদর গহ্বরে বের হতে পারে যার থেকে ভয়ানক সংক্রমণ হতে পারে পেটে।

Dry Throat: বার বার জল খেয়েও গলা শুকোচ্ছে? এদিকে সর্দি-হাঁচি কিচ্ছু নেই, সতর্ক হন

Necrotizing enterocolitis (NEC)

এই রোগের সঠিক কারণ এখনও জানা নেই। মনে করা হয়, কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুদের অন্ত্রে অক্সিজেন সরবরাহ কম হয়। ফলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে শুরু করে। ফলে অন্ত্রের দেওয়াল ফেটে যায়, ছিদ্র হয়, সেখান থেকে রক্ত বের হতে থাকে।

 Necrotizing Enterocolitis (NEC) in Infants

 

ফুলে যাবে তলপেট

এই রোগের প্রধান লক্ষণ হল তলপেট ফুলেফেঁপে উঠবে। প্রচণ্ড পেট ব্যথা শুরু হবে শিশুর।

মলের সঙ্গে রক্ত বের হবে।

পেট খারাপ হবে

হলুদ বা সবুজ রঙের বমি হবে

ওজন আরও কমতে থাকবে শিশুর, শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি কমে যাবে

হার্ট রেট কমতে থাকবে

রক্তচাপ ধীরে ধীরে কমতে থাকবে

বাচ্চা কিছু খেতে চাইবে না, ঝিমিয়ে পড়বে

 

এক্স রে করে রোগ শণাক্ত করেন ডাক্তাররা। অন্ত্রের রক্তবাহী নালীগুলিতে বুদবুদ থাকলে বোঝা যায় যে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়েছে ও অন্ত্রের দেওয়ালে ছিদ্র তৈরি হয়েছে। পেটে সূঁচ ঢুকিয়েও পরীক্ষা করা হয়। শিশুর রোগ ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই অ্যান্টিবায়োটিকের থেরাপি শুরু করেন ডাক্তাররা। অর্গ্যাস্টিক টিউবের সাহায্যে অন্ত্র ও পেটে জমতে থাকা তরল বের করা হয়। মুখ দিয়ে খাওয়ানো হয় না শিশুকে। শিরায় শিরায় তরল জমছে কিনা তা সর্বক্ষণ পরীক্ষা করতে হয়। শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে থাকে এই সময়, ফলে বাইরে থেকে কৃত্রিম অক্সিজেন দিয়ে শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়।