কলকাতায় শিশুদের ওপরে জাইদাস ক্যাডিলার টিকার ট্রায়াল শুরু হচ্ছে, বাচ্চাদের জন্য আরও এক ভ্যাকসিনে ছাড়

দ্য ওয়াল ব্যুরো: শিশু ও কমবয়সীদের শরীরে দেশের তৈরি কোভ্যাক্সিন টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে আগেই অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। দেশজুড়ে বাচ্চাদের ওপরে এই টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়ালও চলছে। এবার শিশুদের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য দেশের তৈরিই আরও এক টিকায় ছাড়পত্র দেওয়া হল। জাইদাস ক্যাডিলার তৈরি জাইকভ ডি ভ্যাকসিনের দুই পর্বের ট্রায়াল চলছেই। বাচ্চাদের শরীরেও এই টিকা কার্যকরী কিনা তার পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে জাইদাস ক্যাডিলাকে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতাতেও শুরু হচ্ছে ট্রায়াল।

সূত্রের খবর, প্রথম পর্বে রাজ্যে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের শরীরে জাইকভ ডি টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল হবে। এই পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক হলে ১২ বছরের নীচে বাচ্চাদের ওপরে টিকার ট্রায়াল হবে কিনা সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হবে। জানা গেছে, কলকাতার পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে শুরু হবে ট্রায়াল। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবককে পাওয়া গেছে। কলকাতা শুধু নয় গোটা রাজ্যেই জাইদাস ক্যাডিলার টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু হবে।

দিল্লি এইমস সূত্রে খবর, দেশজুড়ে মোট ৫৪টি কেন্দ্রে কমবয়সীদের শরীরে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হতে চলেছে। এখনও অবধি দেড় হাজার জন স্বেচ্ছাসেবককে বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রতি পর্বের ট্রায়ালের পরে সেফটি ডেটা জমা করা হবে। এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে টিকার এফিকেসি ও কার্যকারীতা বিচার করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কেমন ভ্যাকসিন জ়াইকভ ডি ?

জ়াইকভ-ডি হল প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে সংস্থার ভ্যাকসিন টেকনোলজি সেন্টার (ভিটিসি)। ২০১০ সালে সোয়াইন ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন তৈরি করেছিল জাইদাস ক্যাডিলা। দেশের অন্যতম বড় এই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হাম, মাম্পস, রুবেলা সহ একাধিক ভ্যাকসিন এনেছে ভারতের বাজারে। জ়াইকভ-ডি ভ্যাকসিন ডিএনএ টেকনোলজিতে তৈরি হয়েছে। মূলত প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাকসিন। প্লাসমিড ডিএনএ হল ব্যাকটেরিয়ার এক্সট্রাক্রোমোজোমাল ডিএনএ। তাকেই বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করোনার টিকা তৈরির কাজে লাগানো হয়েছে। এই প্লাসমিড ডিএনএ-র সেলফ-রেপ্লিকেশন ক্ষমতা আছে। দেহকোষে ঢুকে বিভাজিত হয়ে ভাইরাল প্রোটিনের অনুরূপ প্রোটিন তৈরি করবে। যার কারণে শরীরে বি-কোষ ও টি-কোষ সক্রিয় হয়ে উঠে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

Paul-Ehrlich-Institut - News - New WHO Guideline for modern DNA Vaccines

জাইদাস ক্যাডিলার তরফে জানানো হয়েছে, মানুষের শরীরে টিকা দেওয়ার আগে বহুবার ল্যাবরেটরিতে সেফটি ট্রায়াল করা হয়। তার রিপোর্ট বেশ ভাল। দেখা গেছে, প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে। এই সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট দেখেই মানুষের শরীরে টিকা দেওয়ার জন্য অর্থাৎ হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমতি দেয়  ড্রাগ কন্ট্রোল, রিভিউ কমিটি অন জেনেটিক ম্যানিপুলেশন (আরজিজিএম) ও সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরি (সিডিএল)।