
শিশুর জন্মের পর নির্দিষ্ট সময়েই তাকে টিকা দিতে হয় (Child Vaccine)। ভ্যাকসিন শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যে কোনও সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। শিশুকে ঠিক কোন বয়স থেকে টিকা দেওয়া শুরু করতে হবে, কী কী টিকা দিতেই হবে, কোন বয়সে কী টিকা দেবেন, কোন টিকা কীভাবে সুরক্ষা দেবে ইত্যাদি দিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকেই। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা বললেন, জন্মের পর থেকে শিশুকে কী কী টিকা কখন দিতে হবে।
বাচ্চাদের কী কী টিকা দিতে হবে? কোন বয়সে কী টিকা জেনে নিন তালিকা
জন্মের সময়
ব্যাসিলাস ক্যালমেট- গুয়েরিন (বিসিজি), ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন (ওপিভি)-০ মাত্রা, ‘হেপাটাইটিস বি’ জন্মকালীন মাত্রা (Child Vaccine)
বাঁ হাতের ওপরে টিকা দেওয়া হয়।
৬ সপ্তাহ
ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন বা ওপিভি-১, পেন্টাভ্যালেন্ট-১, রোটাভাইরাস টিকা (আরভিভি)-১, ফ্র্যাকশ্যানাল ইনঅ্যাক্টিভেটেড পোলিও টিকা (এফআইপিভি)-১, নিউমোককাল কনজুগেট ভ্যাকসিন (পিসিভি)-১
ওপিভি’র বুস্টার ডোজ বা মাত্রা দেওয়া হয় জন্মের ১৬-২৪ মাসের মধ্যে।
১০ সপ্তাহ
ওপিভি-২, পেন্টাভ্যালেন্ট-২, আরভিভি-২
শিশুর ৬, ১০ এবং ১৪ সপ্তাহে হয় পেন্টাভ্যালেন্ট টিকা, উরুর সামনের অংশের বাইরের দিকের পেশিতে দেওয়া হয়।
১৪ সপ্তাহ
ওপিভি-৩, পেন্টাভ্যালেন্ট-৩, এফআইপিভি-২, আরভিভি-৩, পিসিভি-২*
আইভিপি’র দুটি ‘ফ্র্যাকশ্যানাল ডোজ’ দেওয়া হয় ৬ এবং ১৪ সপ্তাহে।
ডান হাতের ওপরের ত্বকে এই টিকা দেওয়া হয় (Child Vaccine)।
৯ থেকে ১২ মাস
হাম এবং রুবেলা (এমআর)-১, জেই-১, পিসিভি-বুস্টার
জেই টিকার প্রথম মাত্রা বা ডোজটি দেওয়া হয় ৯ মাস পূর্ণ হওয়ার পর থেকে ১২ মাসের মধ্যে, দ্বিতীয় মাত্রাটি দেওয়া হয় ১৬-২৪ মাসের মধ্যে।
বাঁ হাতের ওপরে, সাব-কিউটেনিয়াস ইনজেকশন হিসেবে দেওয়া হয়।
১৬ থেকে ২৪ মাস
এমআর-২, জেই-২, ডিপথেরিয়া,পারটুসিস এবং টিটেনাস (ডিটিপি)- বুস্টার-১, ওপিভি-বুস্টার
৫-৬ বছর
ডিটিপি- বুস্টার-২
১০ বছর
টিটেনাস এবং প্রাপ্তবয়স্ক ডিপথেরিয়া টিকা (টিডি)
১০ এবং ১৫ বছর বয়সে এই টিকা দেওয়া হয়।
★ অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে- গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়েই টিডি-১ দেওয়া হয়। টিডি-১ দেওয়ার চার সপ্তাহ পরে টিডি-২ দেওয়া হয়। যদি গত তিন বছরে গর্ভাবস্থায় টিটি/টিডি’র দুটি মাত্রা দেওয়া হয়ে যায়। তখন টিটি বুস্টার হিসেবে দেওয়া হয়।
হাতের ওপরের পেশিতে টিকা দেওয়া হয়।
১৬ বছর
টিডি টিকা নিলে ভাল হয়।
হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন
জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ‘হেপাটাইটিস বি’ টিকা দেওয়া দরকার। এছাড়া বাকি তিনটি ডোজ ৬, ১০ এবং ১৪ সপ্তাহে ডিপিটি (ডিপথেরিয়া-পারটুসিস-টিটেনাস) ও প্যান্টাভ্যালেন্ট টিকা হিসেবে দেওয়া হয়।
হামের টিকা
হাম এবং রুবেলার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হাম এবং রুবেলার টিকা একসঙ্গে দেওয়া হয়।
হামের প্রথম টিকা বাচ্চার ৯ মাস শেষ হওয়ার পর থেকে ১২ মাসের মধ্যে দিতে হয় ( যদি ৯-১২ মাসের মধ্যে হামের প্রথম টিকা না দেওয়া হয়, তাহলে পাঁচ বছরের মধ্যে অবশ্যই দিতে হবে)। দ্বিতীয় টিকা দিতে হয় ১৬-২৪ মাসের মধ্যে।
ডান হাতের ওপরে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।
টাইফয়েড টিকা
শিশুর ২ বছর পূর্ণ হওয়ার পর থেকে যে কোনও বয়সে দেওয়া যায়। এই টিকা প্রতি তিন বছর পর পর নিতে হয়। কারণ সারা জীবনের জন্য এই টিকা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে না।
চিকেন পক্স টিকা
এক বছর বয়সের পর থেকে যে কোনও বয়সে দেওয়া যায়। এই টিকার একটাই ডোজ দিতে হয়।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)
বাচ্চার ৯ বছরের পর থেকে এই টিকা দেওয়া হয় (Child Vaccine)। ভবিষ্যতে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য এটিই প্রতিষেধক। এই টিকার তিনটে ডোজ নিতে হয়।
মেনিনগোকক্কাল এমসিভি ৪
সাধারণত ১১-১২ বছর বয়সের পর থেকে ১৮ বছর অবধি এই টিকা নেওয়া যায়।
ভেরিসেলা
জলবসন্তের টিকা। যে কোনও বয়সে নেওয়া যায়।
ইনফ্লুয়েঞ্জা
প্রতি বছরই নিয়ে রাখলে ভাল।
কোভিড টিকা
১২ বছরের পর থেকে বাচ্চাদের জন্যও টিকায় অনুমতি দিয়েছে সরকার।