
রক্তে শর্করার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত (Diabetes) হলে তার থেকে ভবিষ্যতে স্মৃতিনাশের আশঙ্কা থেকে যায়। এমনটাই দাবি করা হয়েছে নতুন গবেষণায়। সুইডেনের ক্যারোলিঙ্কসা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডায়াবেটিস বাড়লে তার থেকে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের ঝুঁকি বাড়ে। ‘অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড ডিমেনশিয়া’ মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, টাইপ টু ডায়াবেটিস (Diabetes), হার্টের রোগ, স্ট্রোক হলে তা ব্রেন সেলকে মারাত্মকভাবে আঘাত করতে পারে। ক্যারোলিঙ্কসা ইনস্টিটিউটের নিউরোলজি বিভাগের গবেষকরা বলছেন, ৬০ বছর ও তার বেশি বয়সী আড়াই হাজার প্রবীণের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যতদিন তাদের ডায়াবেটিস ছিল না স্মৃতির ওপর কোনও প্রভাব পড়েনি। কিন্তু ডায়াবেটিস (Diabetes) ধরা পড়ার পর থেকেই মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করে। ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা বা স্ট্রোক–এই তিনের যে কোনও একটি থাকলেই ভবিষ্যতে স্মৃতিনাশের আশঙ্কা বাড়ছে বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের।
সোডিয়াম-পটাশিয়ামের গোলমাল হচ্ছে না তো! এই লক্ষণগুলো আপনার আছে কি?
ডায়াবেটিস হল এমন এক অসুখ যেখানে রক্তে সুগার বা শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস দু’ধরনের—টাইপ ১ ও টাইপ ২। প্যানক্রিয়াসের বিটা কোষ থেকে ইনসুলিন বলে একটা হরমোন বের হয়। এই ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণের তারতাম্য হলেই ডায়াবেটিস (Diabetes) হয়। সাধারণত আমরা যে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাই তা বিপাকের পরে গ্লুকোজে পরিণত হয়। ইনসুলিন এই গ্লুকোজকে দেহকোষে ঢুকতে সাহায্য করে। গ্লুকোজ যখন দেহকোষের মধ্যে ঢোকে তখন সেটা অক্সিডাইজড হয় এবং তার থেকে অডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি) অর্থাৎ এনার্জি তৈরি হয়।
কিন্তু যদি বিটা কোষ নষ্ট হয়ে যায় এবং ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায় তাহলে এই পক্রিয়াটা বাধা পায়। ইনসুলিন কোষের মধ্যে প্রবেশের জন্য যে রিসেপ্টরটি লাগে, সেটি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ইনসুলিন আর ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। ইনসুলিন কোষের মধ্যে গ্লুকোজকে প্রবেশ করাতে পারে না। রক্তের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা ক্রমশ বেড়ে যায়। একে বলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস (Diabetes) যাঁদের আছে তাঁদের শরীরে লাইপোপ্রোটিন ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স (LPIR)বেড়ে যায়। যে কারণে প্রতিরোধ শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। ডায়াবেটিসের কারণে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়ে। এই খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কোলেস্টেরল হার্টের রোগের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। এর থেকেই বাড়ে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি।