আকুপাংচার ডায়াবেটিস সারাতে পারে? শরীরে সূঁচ ফুটিয়ে রক্তে শর্করা কমানো সম্ভব?

গুড হেলথ ডেস্ক

ডায়াবেটিসের চিকিৎসা হতে পারে আকুপাংচার (acupuncture) থেরাপিতে? মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে। আকুপাংচার থেরাপিতে শরীরের কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্টে সূঁচ ফুটিয়ে নার্ভগুলোকে উদ্দীপিত করে রক্তে শর্করা বশে রাখা সম্ভব। এডিথ কোওয়ান ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় আকুপাংচার কতটা কার্যকরী হতে পারে সে নিয়ে গবেষণা করছেন।

প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরনো এই চিকিৎসা পদ্ধতির জন্ম হয়েছিল চিনে। এখন ভারত সহ বিশ্বের শতাধিক দেশে এই থেরাপির প্রয়োগ হয় নানা রোগের ট্রিটমেন্টে (acupuncture)। ২০০৩ সালে ‘হু’ একটি তালিকা প্রকাশ করে, যাতে উল্লেখ আছে ১০৩টি শারীরিক সমস্যায় আকুপাংচার কার্যকর। মার্কিন বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডায়াবেটিস সারাতেও এই থেরাপি কার্যকরী হচ্ছে। ৩৬০০ ডন ডায়াবেটিক রোগীর ওপরে আকুপাংচার থেরাপির প্রয়োগ করে উপকার মিলেছে বলে দাবি। 

কথা জড়িয়ে যায় সবসময়? জিভের জড়তা কাটাবেন কী করে

Acupuncture for diabetes

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সমীক্ষা অনুযায়ী ২০৪৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটির বেশি মানুষের ডায়াবেটিসের উপসর্গ দেখা দেবে। মার্কিন গবেষক মিন ঝ্যাং বলছেন, প্রিডায়াবেটিক রোগীদের আকুপাংচার শুরু করে দিতে পারলে খুব দ্রুত রোগের নিরাময় সম্ভব। ডায়াবেটিস বাসা বাঁধার আগেই এই রোগকে রুখে দেওয়া যাবে।

Acupuncture for diabetes

টাইপ টু ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিন কমে যায় এবং বিটা সেল নষ্ট হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে যেটা হয়, ইনসুলিন কোষের মধ্যে প্রবেশের জন্য যে রিসেপ্টরটি লাগে, সেটি নষ্ট হয়ে যায়। তার ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিনের মাত্রা কমে না ঠিকই কিন্তু কোষের রিসেপ্টর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ইনসুলিন কাজ করতে পারে না। যার ফলে ইনসুলিন কোষের মধ্যে গ্লুকোজকে প্রবেশ করাতে পারে না। রক্তের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা ক্রমশ বেড়ে যায়। অতিরিক্ত গ্লুকোজ কমানো সম্ভব আকুপাংচার থেরাপিতে।

আকুপাংচারে (acupuncture) সুতোর মতো সরু স্টিলের সূঁচ শরীরের বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটিয়ে নার্ভ স্টিমুলেট করে চিকিৎসা করা হয়। এই থেরাপিতে ওষুধ খাওয়ার দরকার পড়ে না বা কোনওরকম অস্ত্রোপচারের দরকার হয় না। নার্ভ স্টিমুলেট করে শরীরের ভিতরে থাকা কেমিক্যালগুলোর পরিমাণ বাড়িয়ে বা কমিয়ে ঠিকমতো কাজ করানোই আকুপাংচারের কাজ। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে, হরমোনের ব্যালান্স ঠিক রেখে, স্নায়ুতন্ত্রকে ঠিক মতো পরিচালিত করে শরীরকে সুস্থ হতে সাহায্য করে আকুপাংচার।

 Acupuncture

বাতের সমস্যা, আর্থ্রাইটিস, জয়েন্ট পেন, স্পোর্টস ইনজুরি ছাড়াও হাঁপানি, অ্যালার্জি, মাইগ্রেন, প্রজননে সমস্যা, পঙ্গুত্ব, ক্রনিক গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে আকুপাংচার (acupuncture) বিশেষভাবে কার্যকরী।