
ডায়াবেটিস টাইপ ৩সি কী? বিরল এই অসুখ লিভার-অগ্ন্যাশয়কে তছনছ করে দেয়
গুড হেলথ ডেস্ক
ডায়াবেটিস টাইপ-১ ও টাইপ-২ নিয়ে চর্চা বেশি। ডায়াবেটিসের আরও অনেক ধরন আছে যা অনেকেরই জানা নেই। তার মধ্যে একটি ডায়াবেটিস টাইপ ৩সি (Type 3c Diabetes)। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই টাইপ ৩সি নাকি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। জটিল লিভারের অসুখ, প্যানক্রিয়াটাইটিস থেকে ডায়াবেটিস (Diabetes) টাইপ ৩সি হতে পারে। আবার ডায়াবেটিসের এই ধরনের কারণে শরীরের নানা অঙ্গের দফারফা হতে শুরু করে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় লিভার ও অগ্ন্যাশয়ের।
ডায়াবেটিস টাইপ ৩সি কেন হয়?
রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে হয় ডায়াবেটিস। প্যানক্রিয়াসের বিটা সেল থেকে ইনসুলিন বলে একটি হরমোন বের হয়। বিশেষ করে ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেলে সেটি গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয় লিভারের মাধ্যমে। সেই গ্লুকোজকে দেহকোষের মধ্যে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে ইনসুলিন। গ্লুকোজ যখন দেহকোষের মধ্যে ঢোকে তখন সেটা অক্সিডাইজড হয় এবং তার থেকে অডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি) অর্থাৎ এনার্জি তৈরি হয়। এই এনার্জি থেকেই একটি কোষ তার কাজ করার জন্য পুষ্টি পেয়ে থাকে। এই এনার্জি পাওয়া যায় গ্লুকোজ থেকে এবং গ্লুকোজকে দেহকোষের মধ্যে প্রবেশ করায় ইনসুলিন। যদি ইনসুলিনের ঘাটতি হয় বা ইনসুলিন তৈরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। তখন যে অবস্থা তৈরি হয় তাকে ডায়াবেটিস বলে।
যদি প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় থেকে পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ডায়াবেটিস টাইপ ৩সি হতে পারে। মূলত দীর্ঘদিন ধরে অগ্ন্যাশয়ে তৈরি হওয়া ক্ষত এই ধরনের ডায়াবেটিসের কারণ। জটিল অগ্ল্যাশয়ের রোগ বা প্যানক্রিয়াটাইটিস টাইপ ৩সি-র (Type 3c Diabetes) কারণ।
অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপারটেশন, প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসার, সিস্টিক ফাইব্রোসিস থাকলে ডায়াবেটিসের টাইপ ৩সি হতে পারে।
একটানা পেটে ব্যথা, ঘন ঘন পেট খারাপ হলে সাবধান
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া এই রোগের (Type 3c Diabetes) অন্যতম লক্ষণ। খুব দ্রুত ওজন কমতে শুরু করবে।
প্যানক্রিয়াটাইটিসের কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্যানক্রিয়াটাইটিস হলে হঠাৎ করে পেটে তীব্র ব্যথা হয়। এই ব্যথা পিঠের সামনে থেকে পেছনের দিকে ছড়িয়ে যায়। সঙ্গে বমি বা জ্বরও হতে পারে।
ঘন ঘন পেট খারাপ হতে পারে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল, লিভারের সমস্যা লেগেই থাকবে (Type 3c Diabetes)।
প্রচণ্ড ক্লান্তি, ঝিমুনি হবে। যদি দেখেন দিনের পর দিন ক্লান্তিভাব রয়েছে, ঝিমুনি কাটতেই চাইছে না, শরীর খুব দুর্বল তাহলে সতর্ক হতে হবে।
প্রতিরোধে কী করণীয়?
১) মদ্যপান ও ধূমপান এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত ধূূমপান অগ্ন্যাশয়ের রোগ বা প্যানক্রিয়াটাইটিসের কারণ হতে পারে। আর সেই থেকেই ডায়াবেটিস টাইপ ৩সি হতে পারে। ২) স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস দরকার ৩) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং ৪) নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।