
কান শুধু কানাঘুষো করার জন্য নয়। শরীরের নানা প্রত্যঙ্গের মধ্যে কানের গুরুত্ব অনেক। শরীরের ভারসাম্য রাখতে কান উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। তাই কান (Ear Problems) নিয়ে অবহেলা করলে তার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে।
কানের সমস্যা (Ear Problems) নিয়ে সচেতনতা খুব কম। কানে সংক্রমণ, কানে চুলকানি-পুঁজ বা জল জমার সমস্যা, কানে কম শোনা বা কানের সমস্যার জন্য মাথা ঘোরা, ভার্টিগোর সমস্যা এড়িয়ে যান অনেকেই। কান দিয়ে আমরা শুনি অথচ গুরুত্ব দিই কম। এর ফলে বধিরতা পর্যন্ত হতে পারে। কানের যত্ন সব সময়েই নেওয়া উচিত। বিশেষ করে স্নানের সময়ে, বিছানায় ঘুমোতে যাওয়ায় সময়ে, বাজি ফাটানোর সময়ে কিংবা উচ্চ স্বরের যে কোনও শব্দ থেকে দূরে থাকা উচিত।
কী কী সমস্যা হতে পারে কানে?
কানে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে প্রদাহ হয়। যদিও এই সমস্যা শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে প্রাপ্তবয়স্করাও এই সমস্যায় ভোগেন।
গলা ব্যথা, ঠান্ডা লাগা বা অন্যান্য শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হওয়ার পরে মধ্য কানের প্রদাহ শুরু হয়। সংক্রমণ মধ্যকর্ণে ছড়িয়ে পড়ে এবং কানের পর্দার পিছনে তরল জমা হয়। যদিও এই সংক্রমণ মাঝেমাঝে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়, তবে বাড়াবাড়ি হলে ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়া দরকার।
কানের ভেতরের (Ear Problems) অংশকে রক্ষার জন্য এক ধরনের মোমের মতো অংশ থাকে। ধুলোবালির ঢুকে তা থেকে ময়লা তৈরি হয়। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করলে বধিরতাও আসতে পারে। অসাবধানবশত কানের ভেতরে জল ঢুকলে এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলে পুঁজের মতো তরল জমে যায়। এর থেকে কানে যন্ত্রণা, শোনার সমস্যা, মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
কান পরিষ্কারের জন্য তুলো লাগানো ‘স্টিক’ বা ইয়ার বাডস বেশি ব্যবহার করলেও কানে সংক্রমণ হতে পারে। অনেক সময়েই কটন বাডস দিয়ে খোঁচাখুঁচি করলে কানের পর্দা ফেটে যায়, তাছাড়া বাডসের কিছু অংশ কানের ভেতর থেকে গেলে তাতে ময়লা জমে সমক্রমণ হয়।
অনেকে কানে তেল দেন। এর ফলে কানের পর্দা ও চামড়া উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
কানের যত্ন নিন, কী কী বিষয়ে সতর্ক থাকবেন
কানের ময়লা পরিষ্কার করুন নিয়মিত। আমরা সারা দেহ নিয়ম করে পরিষ্কার করি। কিন্তু কানের কথা আর মনে থাকে না।
ইয়ারফোন ব্যবহারে সতর্ক হন। এখন মোবাইলের সঙ্গে সঙ্গে হেডফোন বা ইয়ারফোন হয়ে উঠেছে আমাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার শরীরে অন্যান্য সমস্যা তৈরি করার পাশাপাশি শ্রবণক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে।
ইয়ার বাডস ব্যবহার করবেন না। কানে ময়লা জমলে তার জন্য ইয়ার ড্রপ আছে। কয়েকদিন ব্যবহার করলেই কানের সব ময়লা বেরিয়ে যাবে। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে ব্যবহার করতে পারেন।
যদি মনে হয়, কানে জল ঢুকে বাচ্চার সমস্যা হচ্ছে তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
কানে পুঁজ জমলে দেরি না করে ডাক্তার দেখিয়ে নিন। কানে খোঁচাখুঁচি করা বা গরম তেল দিয়ে কান পরিষ্কার করতে যাবেন না। এতে সংক্রমণ বাড়বে।
ঘরে ঘরে জ্বর, এ সব উপসর্গ দেখে চিনে নিন কী ধরনের অসুখ
কানে শোনার সমস্যা হলে অনেকেই হিয়ারিং এড ব্যবহার করেন। হিয়ারিং এড প্রয়োজনের সঙ্গে খাপ না খেলে ক্ষতি হতে পারে। হিয়ারিং এড ব্যবহারের আগে কানের পরীক্ষা করানো জরুরি।
সাইনাসের সমস্যা, অ্যালার্জি, মিউকাস জমে যাওয়া, এগুলি থেকেও কানে সংক্রমণ হতে পারে। কানে ব্যথা হলেই ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে।