
Sinusitis: গরম থেকে বাঁচতে সারাক্ষণ এসি ঘরে? ভোগাচ্ছে সাইনাসের সমস্যা
গুড হেলথ ডেস্ক
Sinusitis
দরদর করে ঘামতে ঘামতে গরম থেকেই ঠান্ডা এসি ঘরে ঢুকে পড়ে রাহুল। রোজই এক জিনিস। শার্টের ওপরের দুটো বোতাম খুলে ঢকঢক করে বরফ ঠান্ডা জল খেয়ে গলা ভিজিয়ে কাজ শুরু করে। কখনও আবার ঠান্ডা পানীয় আনিয়ে নেয়। সারাদিনে বেশ অনেকবার ঘরের ভেতর ও বাইরে করে। প্রতিবারই গরম থেকে ঠান্ডা ঘরে, আবার ঠান্ডা থেকে গরমে। বাড়ি ফিরে ফের এসি চালিয়ে বিশ্রাম। মাস কয়েক পরেই তফাতটা বোঝে রাহুল। এখন রাতে ঘুমোতে গেলেই নাক বন্ধ। এসি-তে ঢুকলে সমানে হাঁচি। খুশখুশে কাশি। গলা ব্য়থা। প্রথমে ভেবেছিল কোল্ড অ্যালার্জি। পরে ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারে সাইনোসাইটিস (Sinusitis)।
সাইনোসাইটিস (Sinusitis) কী? কখন ভোগায়?
মানুষের মস্তিষ্ক বা ভাল করে বললে মাথার খুলির ওপরে অনেকগুলো গহ্বর থাকে। নাকে, কপালে, নাকের দু’পাশে। এই গহ্বরগুলোকে সাইনাস বলে। এর অনেক ভাগ আছে–ফ্রন্টাল, ম্যাক্সিলারি, এটময়েড ইত্যাদি। এদের ভেতরের অংশের গঠন অনেকটা নাকের মতো। নাকের মতোই মিউকাস থাকে। অস্টিয়ামের সাহায্যে এরা আবার নাসিকাগহ্বরের সঙ্গে যুক্ত।এই মিউকাস স্বাভাবিক নিয়মেই বেরিয়ে যায়। যদি কখনও বেরোতে না পারে তাহলেই সমস্যা শুরু হয়, সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত হয় রোগী।
কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন?
প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হবে। সারাক্ষণ মাথা ভারী থাকবে। নাক বন্ধ, সমানে জল পড়তে থাকবে। শ্বাস নিতে সমস্যা হবে। টানা হাঁচিও হতে পারে। বেশি ঠান্ডা-গরম লেগে গেলে জ্বর হতে পারে। ইনাসের সমস্যা নিয়ে জেরবার হওয়া মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সামান্য নিয়মের এদিক ওদিকেই এই সমস্যা মাথাচাড়া দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিজ়ন চেঞ্জের সময়ে ঠান্ডা লেগে সর্দিকাশি হতেই পারে। কিন্তু বছরভর যদি সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে জল গড়ানোর মতো সমস্যা চলতেই থাকে, তা হলে সাইনোসাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাছাড়া যাঁরা বেশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকেন, কনকনে ঠান্ডা জল খাওয়ার প্রবণতা থাকে, গরম থেকে বেরিয়েই দীর্ঘ সময় এসি ঘরে কাটান, তাঁদের এই অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া ডাস্ট বা পোলেন অ্যালার্জি থাকলেও সাইনোসাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
Summer Health Tips: ঘামে ভেজা পোশাক বেশিক্ষণ নয়, এসি ঘরে থাকলে নিয়ম মানুন
ঘরোয়া উপায় আরাম পাবেন
• সাইনোসাইটিস ভোগালে ওষুধ খেতেই হবে। তবে সারা বছর কিছু নিয়ম মানলে ও ঘরোয়া টোটকা মেনে চললে রোগের প্রকোপ অনেক কমে যাবে।
• গরম জলে ভেপার নিতে পারেন। রাতে শোওয়ার আগে গরম জলে ভেপার নিন। সাইনোসাইটিস ক্রনিক হয়ে গেলে গলা ব্যথা হয়। উষ্ণ গরম জলে গার্গল করলে আরাম পাবেন।
• নাক দিয়ে জল টানতে পারেন। এর জন্য জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তাতে অল্প নুন মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ স্টেরাইল হয়ে যাবে, তখন সেটা নাক দিয়ে টানতে ও ছাড়তে হবে।
• ইনট্রান্যাজাল স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন, তবে নাকের যেকোনও স্প্রে কেনার আগে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নেবেন। আপনার উপসর্গ দেখেই ওষুধ দেবেন ডাক্তারবাবু।
• শ্লেষ্মাজনিত সমস্যাকে দূরে রাখলেই সাইনাসের সমস্যা অনেকটা দূরে থাকে। ঠান্ডা লেগে গেলে গরম জলের স্টিম নিন। এতে নাসাপথ ভিজে থাকে ও শ্লেষ্মা পাতলা হয়ে বেরিয়ে আসে।
• আদা, মধুর মিশ্রণ শ্লেষ্মার জন্য খুব উপকারি। মধুর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ক্ষমতা শরীর গরম রাখে। আদা প্রাকৃতিক ভাবেই অ্যান্টি-ব্যাক্টিরিয়াল। এই দুই উপাদানের মিশ্রণ প্রতি দিন খেতে পারলে সাইনাসের সমস্যা থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়।
•হাল্কা খাবার খান। স্যুপ খেলেও তা যেন বেশি মশলাদার না হয়।