মেদ ঝরবে, বাড়বে রোগ প্রতিরোধও, কোন ধরনের ব্যায়ামে কী উপকার জেনে নিন

গুড হেলথ ডেস্ক

ফিটনেসের জন্য সঠিক এক্সারসাইজ (Fitness ) দরকার এ কথা তো সবারই জানা। টানটান, ঝকঝকে চেহারা আর তরতাজা লুক পেতে নিয়মিত শরীরচর্চাই দরকার। শুধু কঠোর ডায়েটে কাজের কাজ হয় না। মেদ কমলেও শরীরকে ভেতর থেকে মজবুত করতে, পেশীর শক্তি বাড়াতে ব্যায়াম একান্তই দরকার। ফিটনেস এবং শরীরচর্চা এই সাম্প্রতিক সময় সবচেয়ে বেশি জরুরি। সেডেন্টারি লাইফস্টাইলে খালি দৌড়তে গিয়ে শরীরচর্চা করার সময়েই নেই কারও। শরীর যেহেতু সচল নেই, তাই মনও অচল হয়ে পড়ছে। মানসিক অবসাদ, একাকীত্বে নাজেহাল দশা। শরীরের সঙ্গে সঙ্গে তাই মনকেও ফুরফুরে রাখার দরকার। সবকিছুর জন্যই শরীরচর্চাকেই তাই আগে রেখেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এখন কী ধরনের শরীরচর্চা (Fitness ) করতে হবে সেই নিয়ে চিন্তা অনেকেরই। ইউ টিউবে ভিডিও দেখে, ওয়েবসাইটে পড়াশোনা করে জটিল থেকে জটিলতর ব্যায়াম করতে গিয়ে হিতে বিপরীত না হয়ে যায় সেটাও দেখা দরকার।

Exercises Benefits

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ যে কোনও বয়সেই পারফেক্ট

হঠাৎ করে একদিন ঘুম থেকে উঠেই মনে হল আজ ২৫০ ক্যালোরি কমিয়ে ফেলব, শুরু হয়ে গেল ডাম্বেল নিয়ে লোফালুফি। তাতে কিন্তু ফল ভাল হবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন দেখলে বোঝা যাবে, শরীরকে ওয়ার্ম করতে অ্যারোবিক এক্সারসাইজ দিয়ে শুরু করা ভাল। প্রতিদিন দশ মিনিট সময়ও যদি অ্যারোবিক এক্সারসাইজের (Fitness ) জন্য রাখা যায় তাহলেই শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করা শুরু হয়। ব্যায়াম হবে এমন যাতে শরীরের নমনীয়তাও যেমন ধরে রাখা যাবে আবার পেশী শক্তিও বাড়বে।

Exercises

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ বলতে বোঝায় হাঁটা, দৌড়নো, স্পট জগিং,সাইকেল চালানো, বক্সিং, সিঁড়ি দিয়ে ওপর নীচ করা, সাঁতার কাটা ইত্যাদি। অনেক হাউজিং কমপ্লেক্সেই টেনিস কোর্ট থাকে। যদি নিয়মিত টেনিস খেলা যায় তাহলে শরীর খুব ভালভাবে ওয়ার্ম-আপ হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিছু না হলে ছাদে হাঁটুন জোরে জোরে, স্পট জগিং, স্পট স্কিপিং বা জাম্পিং জ্যাক করলে খুবই ভাল। এতে হার্ট ও ফুসফুস ভাল থাকে। দম বাড়ে, শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালভাবে হয়। ডান্সিংও কিন্তু অ্যারোবিক এক্সারসাইজের খুব ভাল উদাহরণ। শরীর ফিট রাখতে অনেক জায়গাতেই অ্যারোবিক ডান্স ওয়ার্কআউট করানো হয়। পদ্ধতি জানা থাকলে ভাল, না হলে গান চালিয়ে ঘরেই নাচুন। হাত-পা ছুঁড়ে, লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে যেমন মনে হয়। তাতেও শরীর অ্যাকটিভ থাকবে।

Aerobic Exercise

ওয়েট ট্রেনিং, প্লাঙ্ক

পেশীর শক্তি বাড়লে শরীর বাইরে থেকেও যেমন টানটান হবে, তেমনি ভেতর থেকেও হবে মজবুত। এই শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম অনেক রকম হয়। ওজন নিয়ে ব্যায়াম যাকে ওয়েট ট্রেনিং বলে আবার নানারকম স্ট্রেচিংও আছে যাতে শরীরের প্রতিটি পেশী ও পেশীসন্ধি সচল আর কর্মক্ষম থাকে। যাঁরা জিম করে অভ্যস্ত তাঁরা ওয়েট ট্রেনিংয়ের জন্য বাড়িতেই হাল্কা ওজন নিয়ে ব্যায়াম করতে পারেন। নানা রকম স্কোয়াট, লেগ রাইজিং, লেগ স্ট্রেচিং, পুশ আপ আছে। প্ল্যাঙ্ক তো গোটা শরীরের জন্যই ভাল। পেট, তলপেট, পায়ের ভাল ব্যায়াম হয়। মেদও ঝরে, শরীর টানটান থাকে। তবে এই সব এক্সারসাইজ করতে হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েই করা দরকার।

How to Do Plank Exercises

শরীর-মন ভাল রাখে স্ট্রেচিং-ব্যালেন্সিং

ব্যালান্স ট্রেনিং অনেক রকম হয়, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েই করা উচিত। ব্যালেন্সিং বা স্ট্রেংথ ট্রেনিং জানা থাকলে ভাল, না হলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে গান চালিয়ে ধীরে ধীরে নাচাও কিন্তু স্ট্রেচিংয়ের মধ্যে পড়ে। মার্শাল আর্ট, জুম্বা জানা থাকলে নিয়মিত অভ্যাস করা ভাল। এই সময় তো বিশেষ করে। এতে শরীরের নমনীয়তাও ধরে রাখা যায়, মনও ভাল থাকে।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের গাইডলাইন বলছে, সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৪৫ মিনিট সময় ধরেও যদি শরীরচর্চা করা যায় তাহলে যে কোনও ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমে। আর মেদ ঝরাতে হলে প্রতিদিনই অন্তত এক ঘণ্টা সময় রাখতে হবে শরীর চর্চার জন্য। সেই সঙ্গে ডায়েটে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাবার। সারাদিনের সময়কে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিয়ে ঘরের কাজ ও শরীরচর্চার সময় বার করা উচিত। শরীর ফিট থাকলে সংক্রামক রোগে পড়ার শঙ্কাও কমবে।