
নামটা নতুন লাগছে কি?
ডালিয়া, ওটস অনেক খেয়েছেন। জানেন কি, দানাশস্যের মধ্যে সবথেকে সেরা হল কিনোয়া (Quinoa)। প্রোটিন, ভিটামিন, ফাইবার, খনিজ সমৃদ্ধ দানাশস্য কিনোয়া যা খাওয়ার চল ছিল মিশরীয় সভ্যতাতেও। গম, যব, বাজরার মতোই জনপ্রিয় ছিল কিনোয়া। কিনোয়া আজ থেকে তিন-চার হাজার বছর আগে পেরু ও বলিভিয়াতে মানুষজনের পছন্দ খাবার হিসেবে চল ছিল এই দানাশষ্যের। একে বলা হত ‘মাদার অব অল গ্রেনস’। ভারত, আমেরিকা, কেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বের ৭০টি দেশে কিনোয়ার চাষ হয়। দামে কম ও পুষ্টিকর এই হোল গ্রেনকে সুপারফুড বলেন পুষ্টিবিদরা।
এত যে সুনাম, কিনোয়া (Quinoa) আসলে কী?
কিনোয়া হল একরকম ফুলগাছের বীজ (Chenopodium quinoa)। গ্লুটেন ফ্রি কার্বোহাইড্রেট, যাতে প্রোটিনও সমমাত্রায় আছে। কিনোয়া খেলে একদিকে যেমন কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা মেটে, তেমনই প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয়। সাদা, কালো ও লাল তিন রকমের কিনোয়া পাওয়া যায়। এটিকে হোল গ্রেনের মধ্যেই ফেলেন পুষ্টিবিদরা।
Quinoa : পার্লামেন্ট-ক্যান্টিনের মেনুতে এবার কিনোয়া স্যালাড, মমতা শুরু করেছিলেন রুই কালিয়া
কিনোয়াতে কী কী আছে? কেন সুপারফুড বলা হয়?
কাঁচা কিনোয়াতে ১৩% জল, কার্বোহাইড্রেট ৬৪%, প্রোটিন ১৪% ও ফ্যাট থাকে ৬%। ১০০ গ্রাম কিনোয়াতে (Quinoa) ভরপুর প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন বি, ফোলেট ও খনিজ যেমন ম্য়াগনেসিয়াম, ফসফরাস ও ম্য়াঙ্গানীজ থাকে।
কিনোয়া সেদ্ধ করে শশা, পেঁয়াজ, টমেটো কুচি, বেল পেপার, ধনে পাতা কুচিয়ে স্য়ালাড তৈরি করা যায়। কিনোয়ার স্য়ালাড বেশ উপকারি। সেদ্ধ কিনোয়াতে থাকে ৭২% জল, ২১% কার্ব, ৪% প্রোটিন ও ২% ফ্যাট। আবার কাঁচা কিনোয়া জলে ভিজিয়ে রেখে তার সঙ্গে সব্জি, ফল মিশিয়েও খাওয়া যায়।
কিনোয়াতে (Quinoa) প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য, হাই কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কিনোয়ার জুরি নেই।
কিনোয়া হল গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট। এর মধ্যে আছে এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা খুব কম খাবারেই পাওয়া যায়। কিনোয়াতে আছে লাইসিন ও আইসোলিউসিন আছে, যা অন্যান্য হোল গ্রেনের মধ্যে প্রায় থাকেই না। অ্যামাইনো অ্যাসিড হাড়ের গঠন মজবুত রাখে। অন্য দিকে কিনোয়ার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় ডায়াবেটিক ডায়েটেও কিনোয়া রাখা যেতে পারে। ক্যানসার প্রতিরোধেও কিনোয়ার ভূমিকা আছে।
কীভাবে খাবেন?
ভাতের চেয়েও বেশি পুষ্টিগুণ কিনোয়ার (Quinoa)। কিনোয়া জলে ভিজিয়ে রেখে তার সঙ্গে শশা, টম্যাটো, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ধনেপাতা ছড়িয়ে খাওয়া যেতে পারে।
কিনোয়া সেদ্ধ করে ভাতের মতোও খাওয়া যায়। মিনিট পনেরো লাগবে সেদ্ধ হতে। সেদ্ধ কিনোয়ার সঙ্গে সব্জি, লেটুস মিশিয়ে ওপরে ছোট টুকরো করে কাটা ফল মিশিয়ে খেতে পারেন।
কিনোয়ার খিচুরি বানিয়েও খাওয়া যায়।