
Bird Flu: মানুষের শরীরেও ঢুকেছে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের সংক্রামক প্রজাতি, H3N8 কতটা বিপজ্জনক?
গুড হেলথ ডেস্ক
চিনে প্রথম মানুষের শরীরে ছড়িয়েছে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের (Bird Flu) সংক্রামক এইচ৩এন৮ স্ট্রেন (H3N8)। অ্য়াভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস পাখির থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক বেড়েছে। এর আগেও চিনে বার দুয়েক এমন ঘটনা শোনা গিয়েছিল। তবে মানুষের শরীরে তেমন সংক্রামক হয়ে ওঠেনি বার্ড ফ্লু ভাইরাস। এখন চার বছরের একটি শিশু সংক্রমিত হওয়ায় চিন্তা বেড়েছে। কারণ ভারতেও গত বছর বার্ড ফ্লু ভাইরাস সাঙ্ঘাতিক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। শয়ে শয়ে পাখির মৃত্যু হয়েছিল। সংক্রমণের ভয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল পোলট্রিগুলি। এখন প্রশ্ন হল চিনে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের যে প্রজাতি ছড়িয়েছে সেটি কতটা সংক্রামক? মানুষের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কতটা?
কতটা সংক্রামক বার্ড ফ্লু H3N8 (Bird Flu)ভাইরাস?
অ্য়াভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এইচ৩এন৮ স্ট্রেন হল ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ সাবটাইপ (Bird Flu)। পাখি, ঘোড়া ও কুকুরের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে এই প্রজাতি। মৃত পাখির দেহাবশেষ বা পাখির মল, মাংস থেকে এই প্রজাতির সংক্রমণ ছড়ায়। ২০০২ সালে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম লক্ষ করা গিয়েছিল উত্তর আমেরিকায়। ২০১১ সালে সিল মাছের শরীরে এই ভাইরাস খুঁজে পাওয়া যায়। এর থেকেই বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন, খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই উপপ্রজাতি।
প্রাণীর শ্বাসযন্ত্রে বাসা বাঁধে এই ভাইরাস। পশুর শ্বাসপ্রশ্বাস থেকে প্রায় ৩০-৫০ মিটার দূরত্ব অবধি ছড়াতে পারে এই ভাইরাসের ড্রপলেট। বায়ুবাহিত হয়ে এই ভাইরাসের ট্রান্সমিশন হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাওয়া ভেসে যেমন এই ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তেমনি কোনও পদার্থ বা সারফেসের ওপরেও ৪৮ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে। মানুষের শরীরেও ঢুকতে পারে এই ভাইরাস।
মানুষের শরীরেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে?
মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে ঠিকই, তবে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে এই ভাইরাল স্ট্রেন দ্রুত সংক্রামিত হতে পারে কিনা, সে তথ্য এখনও মেলেনি। তবে মানুষের শরীরে এমন ভাইরাস ছড়িয়ে গেলে তার প্রভাব যে মারাত্মক হতে পারে সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা।
H3N8 স্ট্রেনের ইনকিউবেশন পিরিয়ড বা টিকে থাকার সময় তিন দিন থেকে সাত দিন। মানুষের শরীরে ঢুকলে এই সময়টা বিভাজিত হয়ে প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে ভাইরাস। কাজেই এই সময়ে আক্রান্তের সংস্পর্শে এলে সংক্রমণ কতটা ছড়াতে পারে সে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। হিউম্যান ট্রান্সমিশনের সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ভাইরাল জ্বরের মতোই উপসর্গ। শুকনো কাশি, পেট খারাপ, শ্বাসকষ্ট। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, সেই সঙ্গে মাথাযন্ত্রণা। পেশির ব্যথাও শুরু হতে পারে রোগীর। সর্দি-কাশি, কফ জমতে থাকবে ঘন ঘন। গলা শুকিয়ে কথা বলার সমস্যা হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পাখির শরীরে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ঢুকলে ১০ দিনের মধ্যেই থুতু-লালার মারফৎ সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করবে। সংক্রামিত পাখিদের সংস্পর্শে থাকলে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। অনেক সময়েই সাধারণ ভাইরাল জ্বর মনে করে এই ভাইরাসকে চিহ্নিত করা যায় না। তবে উপসর্গ বেশি হলে রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্টে ভাইরাল স্ট্রেন চিহ্নিত করা যায়।