
ফুসফুসের জোর বাড়িয়ে রোগজীবাণুদের বলুন গুড বাই, বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবসে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
গুড হেলথ ডেস্ক
করোনা পরবর্তী সময়ে ফুসফুসের জোর কমেছে অনেকেরই। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো রয়েছে বায়ু দূষণও। যানবাহনের ধোঁয়া, ধুলো, গ্রিন হাউস গ্যাসের বাড়াবাড়ি, বিষ-বাষ্পে নাজেহাল হচ্ছে ফুসফুস। তাই এখনকার সময়ে নিজের ফুসফুসের (Breathing Exercises ) প্রতি হয়ে উঠুন আরও একটু বেশি যত্নবান।
শ্বাসত্যাগ আর শ্বাসগ্রহণ, একজন স্বাভাবিক মানুষের শরীরে ঘটে চলেছে ক্রমান্বয়ে। আমরা এই পদ্ধতিতে শরীরে অক্সিজেন নিচ্ছি আর দূষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড বার করে দিচ্ছি। শরীরে কোষের বিপাকের ফলে তৈরি কার্বন ডাই-অক্সাইড রক্তের সঙ্গে এসে পৌঁছয় হৃৎপিণ্ডে, সেখান থেকে চলে যায় ফুসফুসে। সেই সময়েই ফুসফুসে গৃহীত অক্সিজেন রক্তস্রোত থেকে সংগ্রহ করে প্রতিটি সজীব কোষে পৌঁছে দেয় হার্ট। কাজেই এই প্রক্রিয়াটা সুস্থ-স্বাভাবিক থাকলেই শরীরের অন্যান্য জৈবিক ক্রিয়াগুলোও স্বাভাবিকই থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারে নানা ধরনের ব্যায়াম, বিশেষ করে কিছু কার্ডিও এক্সারসাইজ। সঙ্গে অবশ্যই শ্বাসের কিছু ব্যায়াম, খাওয়াদাওয়া, নেশার মাত্রা কমানো ইত্যাদিও রয়েছে। শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা যথাযথ থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ঘুম ভাল হয়।
ফুসফুসের জোর বাড়াতে কী কী করা ভাল?
শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম–১) নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস নিন (Breathing Exercises )। সাধ্যমতো কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন। তার পর ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন। পুরো পদ্ধতিটি সাত-আটবার করে রিপিট করুন। খেয়াল রাখতে হবে, শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাভি যেন বাইরের দিকে ঠেলে ওঠে এবং শ্বাস ছাড়ার সময়ে যেন নাভি ভিতরের দিকে ঢুকে যায়।
২) পিঠ সোজা করে বসে মেরুদণ্ড টানটান রেখে প্রথমে মুখ দিয়ে শ্বাস ছেড়ে ফুসফুসের সব বাতাস বার করে দিতে হবে। আবার গভীর শ্বাস নিয়ে যতটা সম্ভব ফুসফুসে বাতাস ভরে নিতে হবে। এর পর যতক্ষণ সম্ভব শ্বাস আটকে রাখুন। আবার সব বাতাস বার করে দিন। এই প্র্যাকটিস দিনে অন্তত দু’বার করা যেতে পারে।
কার্ডিও–সাইক্লিং, রোয়িং, ট্রেডমিল এই সব কার্ডিও এক্সারসাইজগুলো ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে খুব উপযাগী। তবে দীর্ঘ সময় ধরে একটানা অভ্যাস নয়, বরং মাঝে মাঝে কিছুটা বিরাম নিয়ে এই ধরনের ব্যায়াম করা ভাল। তবে কার্ডিও করার আগে অবশ্যই ফিটনেট ট্রেনারের পরামর্শ নিতে হবে।
অ্যাবডোমিনাল ব্রিদিং–বুক দিয়ে শ্বাস না নিয়ে গভীরভাবে পেট থেকে শ্বাস টানার চেষ্টা করতে হবে। কেউ যদি মোটামুটি তিন মিনিট ধরে গভীর ভাবে শ্বাস নেওয়া-ছাড়ার প্রক্রিয়া চালায়, তা হলেই তার শ্বাস-প্রশ্বাসগত সমস্যা অনেকটাই কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অ্যাবডোমিনাল ব্রিদিং ডায়াফ্র্যামের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের জোগান বাড়ায়।
ধূমপান ছেড়ে দিন–ফুসফুসে নিকোটিন ও কার্বনের নানা যৌগ ফুসফুসে পৌঁছে তার চরম ক্ষতি করে। তাই ফুসফুস ভাল রাখতে হলে সিগারেটে সুখটান দেওয়া বন্ধ করতেই হবে।