গবাদি পশুর থেকে ছড়াচ্ছে ব্রুসেলা! করোনা-ডেঙ্গির উৎপাতের মধ্যেই সতর্ক করল স্বাস্থ্যমন্ত্রক

গুড হেলথ ডেস্ক

করোনা কমলেও শীতের মুখে আতঙ্ক বাড়ছে। সংক্রমণ এখনও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। এদিকে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া-রেসপিরেটারি ভাইরাস। গত দু’মাস ধরে ডেঙ্গি সাঙ্ঘাতিকভাবে বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের আরও কয়েকটি রাজ্যে। এসবের মধ্যেই ব্রুসেলোসিস (brucellosis) নিয়ে সতর্ক করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। গত বছরও এই সময় ব্রুসেলোসিসের সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল। অসুখ ঠেকাতে নির্দেশিকা জারি করেছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বাংলার কয়েকটি জেলাতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল।

মূলত গবাদি পশু থেকেই ছড়ায় ব্রুসেলিসিস (brucellosis)। বাংলায় বর্ধমান, বাঁকুড়া, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, হুগলিতে একটা সময় ব্রুসেলোসিস মারাত্মকভাবে ছড়াচ্ছিল। সাধারণত গবাদি পশুর খামারে যাঁরা কাজ করেন, বা পশু   চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তাঁদেরই এই রোগ বেশি হয়। কিংবা গবাদি পশুদের ব্রুসেলোসিসের টিকা দিতে গিয়ে এই রোগে আক্রান্ত হন অনেকে।

human brucellosis

ব্রুসেলা ব্যাকটেরিয়া থেকে ছড়ায় ব্রুসেলোসিস (brucellosis)

ব্রুসেলা হল একধরনের ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া থেকেই ব্রুসেলোসিস রোগ ছড়ায়। এই রোগে মূলত আক্রান্ত হয় গবাদি পশু। গবাদি পশুকে ‘ব্রুসেলোসিস’ (বন্ধ্যাত্বকরণ)-এর টিকা দেওয়া হয়। সেখান থেকেও মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ভেড়া, শুয়োরও এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। পশুদের মল, কাঁচা মাংস ও দুধ থেকে সংক্রমণ ছড়ায়।

ব্রুসেলোসিস একধরনের জুনোটিক (Zoonotic) রোগ, অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া থেকে পশুপাখি এবং মানুষ উভয়েই আক্রান্ত হয় এবং উভয়ের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এটি ‘ভূমধ্যসাগরীয় জ্বর’ বা ‘মাল্টা জ্বর’ নামেও পরিচিত। ব্রুসেলোসিস সাধারণত গবাদি পশু, গরু, শূকর, ছাগল,ভেড়া এবং কুকুরের থেকে ছড়ায়।

Brucellosis

কীভাবে ছড়ায় ব্রুসেলোসিস, কী কী লক্ষণ চিনবেন

পশুদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ এবং দুধ বা মাংসের মত প্রানিজ খাবার খাওয়ার ফলে পরোক্ষভাবে সংক্রমণ পশু থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের মধ্যে সংক্রমণের প্রধান কারণ হল, কাঁচা দুধ বা কাঁচা দুধ থেকে তৈরি চিজ খাওয়া। যাঁরা খামারে বা প্রানিজ খাদ্য তৈরির কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই রোগ জীবিকার কারণে হয়। এই রোগ নারীপুরুষ নির্বিশেষে যে কোনও বয়সের মানুষের মধ্যে হতে পারে।

অনেকটা করোনার মতোই উপসর্গ দেখা দেয়। হাল্কা জ্বর, গা-হাত পায়ে ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, মাথা যন্ত্রণা, ওজন ও খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি।  এই রোগকে মাল্টা ফিভার বা মেডিটেরানিয়ান ফিভারও বলা হয়। ব্রুসেলার সংক্রমণ দেখা যায় এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায়-সহ একাধিক জায়গায়।

পশুস্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না দিয়ে টিকা দেওয়ার কাজে পাঠানো হয়। যে গ্লাভস দেওয়া হয় তাও নিম্নমানের। তাই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত।