
মেনোপজের ( Menopause) কথা শুনলেই অনেক নারী বিষণ্ণতায় ভোগেন। এটি একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। আপনি চান কিংবা না চান, একদিন আপনার মেনোপজ হবেই। তাই অনিবার্য প্রক্রিয়াকে ঠেকানোর উপায় নেই। তবে একথা অবশ্য ঠিক, ডায়েট ও জীবন-যাপনে কিছুটা বদল এনে মেনোপজ স্টেজটাকে কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব।
সাধারণত ৪৪-৫২ বছরের মধ্যে মেনোপজ হয় বলে ধরা হয়। কিন্তু গবেষকেরা বলছেন এখনকার সময়ে অত্য়ধিক স্ট্রেস, জীবনযাপনে অনিয়ম, নেশার প্রকোপ, মানসিক চাপ-অবসাদ ইত্যাদির কারণে মহিলাদের একটা বড় অংশের ঋতুস্রাব পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চল্লিশের নীচেই। পঁয়ত্রিশ, ছত্রিশ বা চল্লিশে মেনোপজ (Menopause) হওয়া মহিলারা অল্প বয়স থেকেই হাড় ভঙ্গুর হওয়া, ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হওয়া, হৃদরোগ, মাথাঘোরা, অনিদ্রা, যোনিপথের শুষ্কতা ও তার ফলে শারীরিক মিলনে সমস্যা, মানসিক অবসাদ বা উদ্বেগের মতো নানা রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। ফলে অবসাদও দিন দিন বাড়ছে।
মহিলাদের সাধারণত ৪০ বছর পার হওয়ার পর থেকেই শরীরের যত্ন বেশি নিতে হয়। একটা সময়ের পরে গিয়ে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। ওভারিতে ডিম্বানু উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যায়। এই পর্যায়কে বলে মেনোপজ। ভারতী মহিলাদের ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্য়ে মেনোপজ হয়। কিছু ক্ষেত্রে সার্জিক্যাল মেনোপজও হয়। অস্ত্রোপচারের কারণে জরায়ু বাদ দিলে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে হরমোনের থেরাপি করাতে হয়।
মেনোপজ ( Menopause) কীভাবে পিছিয়ে দেওয়া যায় সে নিয়ে বিশ্বজুড়েই নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। অনেকেই মনে করেন মেনোপজ মানেই বুড়িয়ে যাওয়া। জীবনের সব আনন্দ এক লহমায় চলে যাওয়া। আদতে তা হয় না। মেনোপজের পরেও চনমনে তরতাজা থাকতে পারেন মহিলারা, যদি লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট সঠিকভাবে করা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেনোপজ পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে কিন্তু তার পদ্ধতি সহজ নয়। হরমোন থেরাপি করলে এর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারেষ আবার অন্য বৈজ্ঞানিক উপায়ে করতে হলে তার খরচও অনেক বেশি। তার থেকে যা হবেই সেটাকে মেনে নেওয়ার মতো মানসিক প্রস্তুতি রাখাই ভাল।
মহিলারা যদি নিয়মিত শরীরচর্চা করেন এবং সুষম ডায়েট মেনে চলেন তাহলে মেনোপজ ( Menopause) তাড়াতাড়ি হবে না। যৌন জীবন ঠিক থাকলে এবং স্ট্রেস ফ্রি হাসিখুশি থাকলেও ঋতুবন্ধের সময় পিছিয়ে যায় প্রাকৃতিকভাবেই। ডায়েটে বাড়ির খাবার, মাছ, ডিম, সবুজ সব্জি রাখতে হবে নিয়মিত। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এজন রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। রোজকার যাপনে এমন অভ্যাস করতে হবে যাতে প্রেশার-সুগার স্বাভাবিক থাকে। তাহলেই ঋতুমতী থাকতে পারবেন বেশিদিন।