
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ক্যানসারকে টা টা করার দিন কি এসে গেল?
ক্যানসার-খেকো ভাইরাস (Cancer Killing Virus) বানিয়ে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। এবার কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হবে।
টিউমার কোষ দেখলেই তেড়ে গিয়ে গপ করে গিলে ফেলবে। শরীরকেও ক্যানসার প্রতিরোধী রক্ষাকবচ তৈরি করতে উস্কানি দেবে। এই ভাইরাস মানুষের ক্ষতি করবে না। তবে শরীরে ঢুকে ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলোকে ছিন্নভিন্ন করবে। জিনের গঠন বিন্যাস বদলে এমন ক্যানসার-খেকো ভাইরাস (cancer killing virus) বানিয়েছেন আমেরিকার সিটি অব হোপ হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের গবেষকরা।
কী এই ভাইরাস?
আসলে এক ধরনের ওষুধ। নাম CF33-hNIS (Cancer Killing Virus)। পক্স ভাইরাসের জেনেটিক বদল ঘটিয়ে এই ধরনের ওষুধ তৈরি করেছেন অধ্যাপক ইউমান ফং। ভাইরাসের নাম CF33। একধরনের অনকোলাইটিক ভাইরাস (Oncolytic Virus)। ল্যাবরেটরিতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে তৈরি। বিজ্ঞানী বলেছেন, ওই ড্রাগ আসলে জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ভাইরাস যার জিনের গঠন বিন্যাস ইচ্ছামতো বদলে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই ভাইরাসের সংক্রামক ক্ষমতা নেই। ল্যাবরেটরিতে নিষ্ক্রিয় করে নিজেদের মতো প্রোগ্রামিং করে নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জীববিজ্ঞানের ভাষায় এই পদ্ধতিতে বলা হয় ‘জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং’ (Genetic Engineering)। এই ভাইরাসের এখন কাজ হল টিউমার কোষ দেখলেই নষ্ট করে ফেলা।
কীভাবে কাজ করবে ভাইরাস?
জিনগতভাবে বদলে যাওয়া পক্স ভাইরাস বা CF33-hNIS Cancer-Killing Virus) শরীরে ইনজেক্ট করলে মানুষের দেহকোষে ঢুকে এরা সংখ্যায় বাড়বে। ঠিক যেমন অন্যান্য ভাইরাস বিভাজিত হয়ে প্রতিলিপি তৈরি করে সংখ্যায় বাড়তে থাকে। এরা অ্যান্টিজেনের মতো কাজ করবে। ঠিক ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলোর আশপাশে গিয়েই সংখ্যায় বাড়তে থাকবে। শরীরের ইমিউন সিস্টেমও তখন অ্যান্টিবডি তৈরি শুরু করবে।
ফলে কাজ হবে দুটো। এক, বিজ্ঞানীদের তৈরি ভাইরাস (Cancer Killing Virus) চারপাশ থেকে ক্যানসার কোষগুলো ঘিরে ধরে নষ্ট করতে থাকবে, দুই, শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি ক্যানসার কোষগুলোকে ছড়িয়ে পড়তে বাধা দেবে। অনেকটা একই ঢিলে দুই পাখি মারার মতো কাজ হবে। ২০২১ সালেই এই ভাইরাস নিয়ে কাজ করার অনুমোদন দেয় মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্য়াডমিনিস্ট্রেশন। মানুষের শরীরে ট্রায়াল শুরু করেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা এখনও চলছে। তবে ভাইরাস দিয়ে তৈরি ওষুধ বাজারে আসতে আরও বছর দুয়েক সময় লাগবে। মানুষের শরীরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ই ওষুধ বাজারে আনবেন বিজ্ঞানীরা।