
Covid pneumonia: করোনায় নিউমোনিয়া আক্রান্তদের মধ্যে বাড়ছে স্মৃতিনাশের ঝুঁকি, নতুন গবেষণায় দাবি
গুড হেলথ ডেস্ক
করোনা সংক্রমণে নিউমোনিয়ায় (Covid pneumonia) আক্রান্ত হচ্ছেন যে রোগীরা, তাঁদের মধ্য়ে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের ঝুঁকি বাড়ছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অনেক রোগী ইতিমধ্য়েই ডিমেনশিয়ার শিকার। আমেরিকার মিসৌরি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা হাসপাতালে ভর্তি কোভিড রোগীদের পরীক্ষা করে এমন তথ্য়ই পেয়েছেন।
মার্কিন ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ১০ হাজার রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাঁদের মধ্য়ে অন্তত ৩১২ জন স্মৃতিনাশের শিকার হয়েছেন। প্রায় আড়াই থেকে তিন শতাংশের মধ্যে ডিমেনশিয়ার নানা উপসর্গ দেখা গেছে। ‘ওপেন ফোরাম ইনফেকশিয়াস ডিজিজ’ জার্নালে এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে।
গবেষকদের দাবি, ভাইরাস সংক্রামিত রোগীদের এমআরআই করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন কোভিড রোগীদের পর্যবেক্ষণে রেখে তাদের শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করেই এমন তথ্য দিয়েছেন নিউরোলজিস্টরা।
Heat Wave Precautions: তাপদাহে ভাইরাল ইনফেকশনও বাড়ে, সুস্থ থাকার উপায় বললেন ডাক্তারবাবু
করোনায় কেন বাড়তে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি?
ডিমেনশিয়া এমন রোগ যেখানে রোগী সব ভুলতে শুরু করে। মস্তিষ্কের স্মৃতিবাক্স ফাঁকা হতে থাকে। চূড়ান্ত মানসিক অবসাদ, স্ট্রেস, অ্য়াংজাইটি ডিসঅর্ডার থেকে ডিমেনশিয়া হতে পারে। করোনা আক্রান্ত যে রোগীদের নিউমোনিয়া ধরা পড়ছে তাঁদের মধ্য়ে ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনাও প্রবল হচ্ছে। এর নানা কারণ থাকতে পারে।
কী কারণ? নিউরোলজিস্টরা বলছেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন মূলত নাক, মুখ বা গলার মাধ্যমেই শরীরে প্রবেশ করে। গবেষকরা বলছেন, নাক বা গলার গবলেট কোষকে টার্গেট করে করোনা। কারণ এই কোষের মধ্যেই তাদের রিসেপটর প্রোটিন ACE-2 থাকে। এই প্রোটিনের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে শ্বাসনালীর মাধ্যমে সোজা ফুসফুসে চলে আসে ভাইরাস। এরপর তার কাজ হয় প্রতিলিপি তৈরি করে ফুসফুসে সংখ্যায় বাড়তে থাকা এবং একই সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া। গোটা শ্বাসযন্ত্রকেই নিজের কব্জায় এনে ফেললে শরীরে অক্সিজেন ঢোকার প্রক্রিয়া বন্ধ হতে শুরু করে। সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হন রোগী। নিউমোনিয়ার শিকারও হতে পারেন। আরও একটা ব্যাপার ঘটে, সেটা হল মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া।
গবেষকদের দাবি, মস্তিষ্কে করোনার রিসেপটর প্রোটিন কম থাকলেও সংক্রামিত ব্যক্তির মস্তিষ্কের কোষে কিন্তু এই প্রোটিনের দেখা মিলেছে। মৃত ব্যক্তির মস্তিষ্কের কোষ পরীক্ষা করেও অবাক হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। দেখা গেছে, পর্যাপ্ত রিসেপটর প্রোটিন রয়েছে কোষে যা ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। যার কারণে ‘ব্রেন ড্যামেজ’হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এর কারণ হতে পারে সাইটোকাইন প্রোটিনের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষরণ এবং রক্ত চলাচল বাধা পাওয়া। মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছনো বন্ধ হলে বা রক্ত জমাট বাঁধলে তীব্র প্রদাহ হচ্ছে, যার থেকে স্মৃতিনাশ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এমনও দেখা গেছে অনেকে, অনেকেই সাইকোসিস, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি অ্যাকিউট ডিসেমিনেটেড এনসেফ্যালোমায়েলিটিস (Adem) রোগে আক্রান্ত হতেও দেখা গেছে অনেককে। এটি মস্তিষ্কের এক জটিল রোগ যেখানে তীব্র প্রদাহ হয়।