করোনার প্রভাব পড়ছে মস্তিষ্কে, মৃগী রোগের ঝুঁকি বাড়ছে বাচ্চাদের: ল্যানসেট

গুড হেলথ ডেস্ক

করোনা সারার মাস খানেক পরেও তার প্রভাব থেকে যাচ্ছে শরীরে। সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানসেট জানিয়েছে, ভাইরাল লোড (Corona) যদি বেশি হয় অর্থাৎ সংক্রমণ যদি শরীরে বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তার প্রভাব যেমন পড়ছে হৃদপিণ্ডে, তেমনি মস্তিষ্ক বা ব্রেনে। স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত হতেও দেখা গেছে অনেক রোগীকে। বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে পোস্ট-কোভিড পর্যায়ে ব্রেন ডিসঅর্ডার, ইনসমনিয়া, ইস্কিমিক স্ট্রোক ও মৃগী রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

ল্যানসেট সাইকিয়াট্রি জার্নালের একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, করোনা (Corona) সেরে যাওয়ার কয়েক মাস পরেও জটিল মস্তিষ্কের অসুখ হতে পারে। ১ লাখ ৮৫ হাজার বাচ্চার ওপরে নানা সময়ে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের মতো তাদের শরীরেও পোস্ট-কোভিড পর্বে জটিল রোগ হওয়ার ঝুঁকি আছে। দেখা গেছে করোনা সম্পূর্ণ সেরে যাওয়ার ৬ মাস পরেও ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা, মুড ও অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার, এমনকি মৃগী রোগেও আক্রান্ত হতে দেখা গেছে বাচ্চাদের।

গবেষকরা বলছেন, কোভিড রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গেছে, পরবর্তী সময়ে অনেকেই সাইকোসিস, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি অ্যাকিউট ডিসেমিনেটেড এনসেফ্যালোমায়েলিটিস (Adem) রোগে আক্রান্ত হতেও দেখা গেছে অনেককে। এটি মস্তিষ্কের এক জটিল রোগ যেখানে তীব্র প্রদাহ হয়। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ৫৫ শতাংশ করোনা (Corona) রোগীর ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, সংক্রামিত হওয়ার তিনমাসের মধ্যে নিউরোজিক্যাল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হয়েছে রোগী। অনেকের আবার হ্যালুসিনেশন হয়েছে, ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

‘অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ’ সায়েন্স জার্নালে একটি গবেষণার রিপোর্ট সামনে এনেছিলেন নিউরোলজিস্টরা। কোভিড সংক্রমণে কীভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে বা হতে পারে তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে সেখানে। নিউরোলজিস্টরা বলছেন, ফুসফুসের এপিথেলিয়াল কোষকে নষ্ট করে দিচ্ছে ভাইরাস। ফলে শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রক্রিয়া বাধা পাচ্ছে। মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যার কারণে ‘ব্রেন ড্যামেজ’হচ্ছে।