কোভিড নিউমোনিয়া নিয়ে সতর্ক থাকুন, সাধারণ নিউমোনিয়ার সঙ্গে ফারাক কোথায়

গুড হেলথ ডেস্ক

শীতে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ে। আর কোভিড হয়ে গেছে যাদের, তাদের ঝুঁকি বেশি। ডাক্তারবাবুরা বলছেন, পোস্ট-কোভিড পর্যায়ে নিউমোনিয়ার (Covid Pneumonia) ঝুঁকি অনেকটাই বেড়েছে। বিশেষ করে করোনায় যাদের জটিল রোগ হয়েছিল বা নানা রকম কোমর্বিডিটি রয়েছে তাদের কোভিড নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কোভিড নিউমোনিয়া (Covid Pneumonia) কী?

সংক্রমণের কারণে যখন ফুসফুসে পুঁজ বা ফ্লুয়িড জমা হয়, তখন শ্বাসযন্ত্রের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। ফলে শরীরের ভিতরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছয় না। একেই সাধারণ ভাবে নিউমোনাইটিস বা নিউমোনিয়া বলে। কিন্তু করোনাকালে এই চেনা রোগের নামটাই যেন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিউমোনিয়া নানা ভাবে হতে পারে। কখনও ব্যাকটেরিয়া-জনিত কারণে, কখনও ভাইরাসের কারণে, আবার কখনও ফাঙ্গাস-জনিত কারণেও। করোনার কারণে যে নিউমোনিয়া (Covid Pneumonia), সেটাই কোভিড নিউমোনিয়া। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে শ্বাসনালির। শ্বাসনালির উপরের অংশটি আক্রান্ত হলে সর্দি-কাশি, জ্বর হয়। আর নীচের অংশ অর্থাৎ ফুসফুস যদি কোভিড ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হয়, তবে তাকে কোভিড নিউমোনিয়া বলা হবে।

 COVID-19

সাধারণ নিউমোনিয়ার সঙ্গে ফারাক কোথায়?

সাধারণ নিউমোনিয়ার সঙ্গে কোভিড নিউমোনিয়ার মূল তফাত হল, নিউমোনিয়া সাধারণত ফুসফুসের একটা অংশকে সংক্রমিত করে। ফলে সেই জায়গাটি সাদা হয়ে যায়। কিন্তু কোভিডের মতো যে কোনও ভাইরাল নিউমোনিয়ায় ফুসফুসের নানা জায়গায়, এমনকি একই সঙ্গে দু’টি ফুসফুসের একাধিক অংশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার সাধারণ নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে আলভিয়োলাই বেশি আক্রান্ত হয়। কিন্তু কোভিড নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে আলভিয়োলাই এবং রক্তনালির মাঝখানে যে পর্দা থাকে, সেই জায়গাটe আক্রান্ত হয়। সাধারণ নিউমোনিয়ায় বুকে কফ জমে। কাশির সঙ্গে সেই কফ বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু কোভিডে কফ প্রায় থাকে না বললেই চলে। এতে শুকনো কাশি দেখা যায়।

COVID-19 and Pneumonia

সারবে কীভাবে?

নিউমোনিয়া মাইল্ড, মডারেট এবং সিভিয়ার হতে পারে। সিটিএসএস স্কোর দেখে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন, হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে, নাকি বাড়িতেই চিকিৎসা করা যাবে। রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখাতে হবে। ঘন ঘন কাশি, শ্বাস নিতে সমস্যা হলে, ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়া জরুরি। সঙ্গে সঙ্গেই অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ দেওয়া প্রয়োজন। হালকা সর্দি, জ্বর প্রথম দিকে কেউ গুরুত্ব দেন না, অনেক সময়ে টেস্টও করান না। যখন চিকিৎসকের কাছে আসেন, তখন অ্যান্টি ভাইরাল দিয়েও লাভ হয় না।

কোভিড নিউমোনিয়াতেও চিকিৎসকেরা অ্যান্টিবায়োটিক দেন। কারণ, কোভিড নিউমোনিয়ার ছ’ থেকে দশ দিনের মাথায় শরীরে ইনফ্ল্যামেটরি রিঅ্যাকশন শুরু হয়। সেই সময়েই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। রোগের তীব্রতা বাড়লে রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধতেও পারে। সেক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান করে ডাক্তারবাবুরা ট্রিটমেন্ট শুরু করেন।