দারুণ ঘুম হবে, চোখ বুজলেই ঘুমোবেন, ঘরের তাপমাত্রা ঠিক কত থাকা দরকার 

গুড হেলথ ডেস্ক

দিনের শেষে ঘুমের (sleep well) দেশে…যেতে পারছেন কি সকলে? এখনকার সময়ে অনিদ্রা বড় সমস্যা। চোখে যেন ঘুমই (Sleep) নেই, এদিকে শরীরজুড়ে ক্লান্তি। রাতে শুলে কিছুতেই দু’চোখের পাতা এক হয় না। ঘুম আসতেই চায় না। যদিও বা কিছু তন্দ্রা আসে তা সামান্য আওয়াজেই ভেঙে যায়। আর একবার ঘুম ভাঙলে রাতভর জেগে থাকা ছাড়া গতি নেই। ফলে সকালে উঠেই ঝিমুনি, ক্লান্তি, বমিভাব।

বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন, সুস্বাস্থ্য ও স্ট্রেস ফ্রি থাকতে দিনে ৭-৮ ঘণ্টা টানা ঘুম (Sleep) জরুরি। কম ঘুমোলে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা দেখা দেয়— যেমন ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যা, ডিমেনশিয়া।

sleep well

নিয়মিত কম ঘুম হলে, তাতে মানসিক সমস্যাও হতে পারে। অবসাদ, অবসন্নতা ছাড়াও বাইপোলার ডিজর্ডারের প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে। ইনসমনিয়া বা অনিদ্রার সমস্যা আছে যাঁদের অথবা মানসিক নানা চাপে ঘুম কম হয় যাঁদের, তাঁরা ঘুমনোর জন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন অনেক সময়। বিশেষ করে বয়স্করা কম ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমনো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। বরং শোওয়ার ঘরের পরিবেশ ও তাপমাত্রা এমন থাকতে হবে যাতে সহজেই ঘুম আসে।

‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট’ জার্নালে গবেষকরা বলছেন, বয়স্কদের শোয়ার ঘরের তাপমাত্রা ১৫.৫০-২১.১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া জরুরি। ঘুমিয়ে পড়লে শরীরের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। ঘরের তাপমাত্রা সঠিক থাকলে চট করেই দেহের তাপমাত্রা কমবে, ঘুমও আসবে তাড়াতাড়ি। শরীরে কোনও রকম অস্বস্তি হবে না। তাই ঘুম না আসার ওষুধ না খেয়ে বরং ঘরের তাপমাত্রা ঠিক করার দিকে নজর দিতে হবে। ঘরের মধ্যে দূষণ, বাড়তে থাকা তাপমাত্রা এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডই রাতে ঘুম না আসার জন্য দায়ী।

আরও পড়ুন: শিশুদের কত ধরনের ক্যানসার হয়, লক্ষণ কী কী, কোন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মুখ্য গবেষক আমির বানিয়াসারি বলছেন, একটা সময় মনে করা হত ঘুমের সময় ঘরের তাপমাত্রা ৬০ থেকে ৬৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট (১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থাকা জরুরি। তবে এখন গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমনোর সময় ঘরের তাপমাত্রা যদি ৬৮ থেকে ৭৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট অর্থাৎ ২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, তাহলে ঘুম চট করে চলে আসে। টানা নিশ্চিদ্র ঘুম হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের সময় হাল্কা, আরামদায়ক পোশাক পড়ুন, ঘরের আলো নিভিয়ে দিন, অন্ধকার ঘরে ঘুমনোর চেষ্টা করুন। একান্ত অসুবিধা হলে হাল্কা নীল বা সবুজ আলো জ্বালান। ঘুমের অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করা চলবে না, কম্পিউটার-ল্যাপটপ চোখ না রাখাই ভাল। কানে হেডফোন গুঁজে ঘুমোতে যাবেন না। রোজকার খাবারে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।। মানসিক চাপ ও অনিদ্রা এতেই দূর হবে। মন শান্ত রেখে প্রাণায়াম বা যোগব্যায়ামে খুব দ্রুত কাজ হয়। রাতের খাওয়া আর ঘুমের মধ্যে অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টার বিরতি থাকতে হবে। এই সময় হাঁটাহাঁটি করলে খাবার হজম হয় দ্রুত। পাকস্থলী শান্ত থাকে, অম্বলের বাড়বাড়ন্ত হয় না। ঘুমও হয় সুন্দর, শরীরে চাহিদা মাফিক।