
দিনভর মোবাইল কানে? মুঠোফোনের মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন ধাক্কা দেয় ব্রেন-নার্ভে
গুড হেলথ ডেস্ক
মোবাইলেই অভ্যস্ত জীবন। একে ছাড়া জগৎ-সংসার যেন অন্ধকার। মোবাইল যেন কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নয়, নিজেকে ঢেকে রাখার মুখোশ। চিন্তা, ভাবনা, অভিব্যক্তির প্রকাশ এখন এই মুঠোফোনেই বন্দি। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভাব বিনিময় এখন আর মুখোমুখি হয় না, সবই মোবাইলের সোশ্যাল সাইটে। ডিজিটাল যুগে যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে মানুষও। যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ছে শরীরে। মোবাইলের ক্ষতিকর রশ্মি (Mobile Microwave Radiation) মস্তিষ্কে গিয়ে সজোরে আঘাত করছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নার্ভ। ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে।
মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন সজোরে ধাক্কা দেয় মস্তিষ্কে
মোবাইল বেশিক্ষণ কানে চেপে থাকলে মাথা ধরে যায়। কান-মাথা গরম হয়ে যায়। ডাক্তাররা তো হামেশাই বলেন, হেডফোনে বেশি জোরে গান না শুনতে, তাহলে মাথাযন্ত্রণা আরও বাড়বে। মস্তিষ্কের রোগও হতে পারে। মাথার স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়বে। এর কারণ কী? আসলে মোবাইল ফোন বার্তা পৌঁছে দেয় তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের মাধ্যমে। এখন রশ্মির বিকিরণ যখন হচ্ছে সেটি ছোট ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রশ্মিতে (Mobile Microwave Radiation) ভেঙে যায়। একে আমরা মাইক্রোওয়েভ বলি। এই মাইক্রোওয়েভ রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য এক মিটার থেকে এক মিলিমিটার হতে পারে। কম্পাঙ্ক হতে পারে ৩০০ মেগাহার্টজ় থেকে ৩০০ গিগাহার্টজ় পর্যন্ত।
এই মাইক্রোওয়েভই (Mobile Microwave Radiation) হল যত নষ্টের গোড়া। মোবাইল থেকে যে মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন বের হচ্ছে তা সরাসরি মাথায় গিয়ে আঘাত করছে। এখন তো মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশনকে কাজে লাগিয়ে অস্ত্র তৈরি হচ্ছে। দূর থেকে রশ্মি ছুড়ে ঘায়েল করা যায় শত্রুসেনাকে। এই রশ্মি যত সূক্ষ্ম হবে ততই তার ক্ষতিকর প্রভাব বেশি। স্নায়ুর দফারফা করে দেবে। যে কারণে দেখা যায় বেশিক্ষণ মোবাইলে কথা বললে কান, মাথা গরম হয়ে যায়। মাথার ভেতর দপদপ করে। অনেকের আবার বেশিক্ষণ হেডফোনে গান শুনলে বা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকলে মাথা ঘোরে, বমিভাব আসে, ঘাড়ে ও মাথার পেছনে যন্ত্রণা শুরু হয়। মাইগ্রেনের ব্যথা থাকলে সেটাও চড়চড় করে বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়োপিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় মোবাইল ফোন। একটানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে ব্যথা করে, শুষ্ক হয়ে যায়, জ্বালা করতে থাকে। রাতে শুয়ে অন্ধকারে ফোন ঘাঁটার অভ্যাস আছে বেশিরভাগেরই। বিশেষত কমবয়সিরা ঘুমোবার আগে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বা মেসেজ করতে অভ্যস্ত। রাতের অন্ধকারে ফোন দেখার ফলে প্রচণ্ড চাপ পড়ে চোখে। ড্রাই আইজের (Dry Eyes) সমস্যা দেখা দেয় অনেকেরই। চোখের রেটিনার ক্ষতি হয়। কনজাঙ্কটিভাল রোগও হতে পারে।
মোবাইল থেকে দুধরনের রেডিয়েশন হয়, এক, স্ক্রিন রেডিয়েশন, দুই, বডি সিগন্যাল রিসেপশন। সাধারণত আমাদের শরীরে পজিটিভ ও নেগেটিভ আয়নের মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকে। মোবাইল ফোনের উচ্চ কম্পাঙ্কের রশ্মি এই ভারসাম্যকে বিগড়ে দেয়। একটানা মোবাইলে কথা বললে বা স্ক্রিনের দিকে দেখলে মাথার স্নায়ুতে তার প্রভাব পড়ে। দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্বাভাবিক চিন্তা-ভাবনার শক্তি কমতে থাকে। মানসিক অবসাদেরও ঝুঁকি বাড়ে।