
হার্টের সমস্যা বেশি জটিল? যত্নও পাবেন বেশি, আলাদা করে চেম্বার করছেন ডাক্তারবাবুরা
গুড হেলথ ডেস্ক: হৃদরোগের (Heart) চিকিৎসা সবসময় সহজ হয় না। চিকিৎসার সঙ্গেই ভবিষ্যতের চিন্তাও জড়িয়ে থাকে। জটিল অস্ত্রোপচারের পরে রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাও বড় চ্যালেঞ্জ। চিকিৎসাপদ্ধতিতে ত্রুটি থাকতে পারে, সামান্য ভুলে অসুখ ফিরেও আসতে পারে। এমনটা হলেই সমস্যায় পড়ে যান রোগীরা। কোথায় যাবেন, কার সঙ্গে কথা বলবেন, কার পরামর্শ সঠিক তা জানতে-বুঝতেই অনেক সময় পেরিয়ে যায়। দিশাহারা হয়ে পড়েন রোগী ও তাঁর পরিজনরা। এই সমস্যার সমাধান করতেই বড় উদ্যোগ নিচ্ছেন ডাক্তাররা। হার্টের ক্রিটিক্যাল রোগীদের কথা ভেবে আলাদা ক্লিনিক খোলা হচ্ছে যেখানে আর পাঁচ জন রোগীর বাইরে এই সমস্ত রোগীদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হবে। কাজেই ভয় নেই, রোগীদের চিন্তা-উদ্বেগ কমাতেই পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের ডিরেক্টর অফ ক্যাথ ল্যাব, সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ দিলীপ কুমার।
ক্রিটিকাল হার্টের রোগীদের জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে?
ডাঃ দিলীপ বলছেন, গত দু’বছরে এমন রোগীদের বেশি খুঁজে পাওয়া গেছে। বাইপাস সার্জারি হয়েছে বা জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছে এমন রোগীর বুকে ব্যথা ফিরে এসেছে, অথবা অস্ত্রোপচারে কিছু ত্রুটি থাকার কারণে রোগ ফিরে আসার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে, সার্জারি ফেল করেছে এমন ঘটনাও আছে। অথবা হার্টের জটিল সমস্যা হয়েছে, আগে কখনও অস্ত্রোপচার হয়েছে এমন রোগীদের আর পাঁচজনের সঙ্গে মিশিয়ে না ফেলে আলাদা করে চেকআপ, স্ক্রুটিনি করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্রিটিকাল হার্টের রোগীরা সঠিক পরামর্শ না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন অনেক সময়েই। এইসব রোগীদের জন্য আলাদা ক্লিনিক খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার থেকে শুক্রবার বেলা ৩টে থেকে খোলা থাকবে এই ক্লিনিক। এখানে রোগীদের চেকআপ করা, কাউন্সেলিং, স্ক্রুটিনি ইত্যাদি সবই করবেন হার্ট স্পেশালিস্টরা।
ডাক্তারবাবু বলছেন, গত দুই থেকে আড়াই বছরে ক্রিটিকাল হার্টের রোগীরা অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। অন্তত ৭০ শতাংশ রোগী ডাক্তারদের সঠিক পরামর্শ পেয়েছেন। এর কারণই হল সচেতনতা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। একটা সময় হার্টে অস্ত্রোপচার হওয়ার পরে রোগীরা ভয় পেয়ে যেতেন। পরে কোনও সমস্যা হলে এড়িয়ে যেতেন বা ডাক্তারের কাছে যেতে ভয় পেতেন। এখন বরং রোগীরা অনেক বেশি সতর্ক ও সচেতন। চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে আশাবাদীও। ডাক্তারবাবু বলছেন, হার্টের যে কোনও জটিল রোগের চিকিৎসা এখন সহজেই হচ্ছে। কার্ডিওলজিস্টদের টিম এই রোগীদের দেখাশোনা, চেকআপের দায়িত্ব নিয়েছেন। অনেক আধুনিক চিকিৎসার সরঞ্জামও রয়েছে। তাই সাফল্যের হারও বেশি প্রায় ৭৫-৮০ শতাংশ।
বিদেশের মতো আমাদের দেশেও সাফল্যের হার বেশি
বাইরের দেশগুলিতে পোস্ট সার্জারি পর্বে ক্রিটিকাল হার্টের রোগীদের চিকিৎসার জন্য এমন আলাদা ক্লিনিকের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে অভিজ্ঞ কার্ডিওলজিস্টরা রোগীদের স্ক্রুটিনি, কাউন্সেলিং করেন। সার্জারি ফেল হয়েছে বা ক্রিটিকাল রোগী যাদের অস্ত্রোপচারের পরেও কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে তাঁদের প্রতি মাসে নিয়ম করে চেকআপ করার ব্যবস্থা আছে সেখানে।
আমাদের দেশেও এখন একই রকম ট্রায়াল হচ্ছে। ক্রিটিকাল রোগীদের চিকিৎসার জন্য অনেক আধুনিক পদ্ধতি আছে এখানে। এনেক বেশি রোগীদের কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। ডাক্তারবাবু বললেন, অনেক সময় হার্টের রোগ হলে রোগীরা বুঝতে পারেন না কার মতামত নেবেন। কখনও তাঁদের বলা হয় ওষুধে কাজ হবে, কখনও সার্জারি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই রোগীদের জন্যও মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে আলাদা ক্লিনিক করে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোগীদের সমস্যা, টেস্ট রিপোর্ট দেখে তাঁদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন সার্জন ও কার্ডিওলজিস্টরা। একটা টিম তৈরি করা হয়েছে কাউন্সেলিংয়ের জন্য। কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি সেই রোগীদের জন্য কার্যকরী সেই পরামর্শ তাঁদের দিচ্ছেন ডাক্তাররা। আতঙ্ক নয় অতি যত্নে রোগীদের খেয়াল রাখার জন্যই হার্ট সার্জনদের এই বড় উদ্যোগ।