
মাইগ্রেনের ব্যথার ওষুধ খেলে ওজন কমবে? নতুন গবেষণায় দাবি মার্কিন বিজ্ঞানীদের
গুড হেলথ ডেস্ক
পেন কিলারের সাইড এফেক্টস নিয়ে বার বার সতর্ক করেন চিকিৎসকেরা। মুঠো মুঠো ব্যথানাশক ওষুধ খেতে বারণ করা হয়। কিন্তু এখন আমেরিকার একদল বিজ্ঞানী সম্পূর্ণ নতুন তথ্য দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর এক ধরনের ওষুধ তৈরি হয়েছে যা নাকি ওজন কমাতে পারে। মানে এই ওষুধ বার বার খিদে পাওয়ার প্রবণতাকে কমিয়ে দেয়। যদিও সবটাই এখনও গবেষণার স্তরেই আছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
পিটার ও’ডোনেল ইউনিভার্সিটির ইন্টারনাল মেডিসিন ও নিউরোসায়েন্সের গবেষক অধ্যাপক চেন লিউ বলেছেন, ট্রিপট্যান্স (Triptans) নামে এখ ধরনের ওষুধ আছে যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে কাজে লাগে। এই ওষুধের আরও কয়েকটি কার্যকারিতা আছে বলে দাবি করেছেন অধ্যাপক। ওবেসিটিতে আক্রান্ত একটি ইঁদুরের ওপর এই ওষুধের প্রয়োগ করে ওজন কমতে দেখা গেছে। অধ্যাপক লিউয়ের দাবি, ট্রিপট্যান্স ওষুধের মধ্যে এমন উপাদান আছে যা হরমোনের ওপর কাজ করতে পারে। খিদে পাওয়া বা খিদের প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করে যে হরমোন তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এই ওষুধ।
সেটা কীভাবে? আমাদের শরীরে এমন এক ধরনের হরমোন আছে যা খিদে পাওয়া, ঘুম পাওয়া ইত্যাদি কিছু শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া এবং ভাল থাকা বা খুশি থাকার মতো অনুভূতিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর নাম সেরাটোনিন বা ৫-হাইড্রক্সিট্রিপ্টামিন। এটি মস্তিষ্কের স্নায়ুকে সংযোগকারী একধরনের নিউরোট্রান্সমিটার। রক্তনালিকায় রক্ত প্রবাহে এটি সাহায্য করে। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন তৈরি হয় পেটে। বিশেষ করে অন্ত্রে এন্টেরোক্রমাফিন কোষে। পেটের এবং গোটা অন্ত্রের স্নায়ুবিক নিয়ন্ত্রণের জন্যে একধরনের নার্ভ নেটওয়ার্ক আছে যার নাম এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম। সেরোটোনিনের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানেই তৈরি হয়। অন্ত্রের পেশির মুভমেন্ট, খাদ্য পরিপাকে, লিভারে পুষ্টি পরিপাকে, হাড়ের গঠনে, রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই হরমোনের ১৫ রকম রিসেপটর আছে যা শরীরের নানা অঙ্গে নানারকম কাজ করে। এর যে রিসেপটরগুলো খিদে পাওয়া বা পরিপাকে সাহায্য করে সেগুলি নিয়েই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। দেখা গেছে, সেরাটোনিনের আইবি রিসেপটর (serotonin 1B receptor (Htr1b)) খিদে পাওয়া, হজম, ওজন নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজগুলোকে পরিচালনা করে। এই রিসেপটরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে মাইগ্রেনের ওই ওষুধ। ওষুধের উপাদান এই রিসেপটরকে নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে পারে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
যদিও এখন সবটাই গবেষণার স্তরে আছে। মানুষের শরীরে এই ওষুধ ওবেসিটি কমাতে পারবে কিনা তারই পরীক্ষা শুরু করবেন বিজ্ঞানীরা।