
কুকুরের শরীরেও ছড়াল মাঙ্কিপক্স! পোষ্যদের সাবধানে রাখতে বলছেন ডাক্তারবাবুরা
গুড হেলথ ডেস্ক
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস কি পশুপাখির মধ্য়েও ছড়াতে পারে? এতদিন এই নিয়েই চিন্তাভাবনা করছিলেন ভাইরোলজিস্টরা। সম্প্রতি একটি কুকুরের শরীরে ধরা পড়েছে মাঙ্কিপক্সের (Monkeypox) জীবাণু। গ্রেহাউন্ড জাতের ওই কুকুরটির সারা শরীরে র্যাশ বের হয়েছে। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গও দেখা দিয়েছে।
এই ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। যে পরিবারের পোষ্যের মধ্যে জীবাণু ঢুকেছে সেই পরিবারের বাকি সদস্যেরাও সংক্রমিত। এই ঘটনার খবর ছড়াতেই উদ্বেগের কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। বাড়ির পোষ্যদের সাবধানে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা (Monkeypox)। এই প্রথমবার মানুষের থেকে পশুর শরীরে ছড়িয়েছে মাঙ্কিপক্সের জীবাণু।
মাঙ্কিপক্স জুনটিক ডিজিজ (Zoonotic Disease), মানে পশুদের থেকে মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। মাঙ্কিপক্স ভাইরাস Orthopoxvirus genus পরিবারের। গুটিবসন্ত যে গোত্রের ভাইরাস থেকে হয় মাঙ্কিপক্সও সেই গোত্রেরই।বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৃত প্রাণীর মাংস, মলমূত্র থেকে ছড়ায় ভাইরাস (Monkeypox)। আফ্রিকার রডেন্ট বা ইঁদুর জাতীয় প্রাণীই এই ভাইরাসের বাহক। ১৯৫৮ সালে আফ্রিকার এক প্রজাতির বাঁদরের মধ্য়ে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল, তখনও মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। ১৯৭০ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও নাইজেরিয়াতে এই ভাইরাস (Monkeypox) প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় মানুষের শরীরে। সেই সময় রডেন্ট জাতীয় প্রাণীর মাংস থেকেই ছড়িয়েছিল সংক্রমণ। এখন বিশ্বের ৮০ টিরও বেশি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।
কীভাবে ছড়াতে পারে মাঙ্কিপক্স (Monkeypox)?
আক্রান্তের সংস্পর্শ, হাঁচি-কাশি, কফ-থুতু, লালারস থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
সংক্রমিতের সঙ্গে একই থালায় খেলে বা একই জামাকাপড় শেয়ার করলে সংক্রমণ হতে পারে।
বীর্যের মাধ্যমেও ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। বাইসেক্সুয়াল, সমকামীদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে।
৷ বিশেষজ্ঞ বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত যৌনজীবন, একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে এবং অসুরক্ষিত যৌনজীবনে অভ্যস্ত হলে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, ফুসকুড়ি, শরীর থেকে নির্গত তরল (যেমন পুঁজ বা ক্ষত থেকে নির্গত রক্ত) এবং স্ক্যাবগুলি এক্ষেত্রে খুবই সংক্রামক ৷ এমনকী রোগীর বিছানাপত্র, পোশাকআসাক, খাওয়ার থালা থেকেও রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষত রোগের পর দুই থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত ভাইরাস সবচেয়ে বেশি সংক্রামক থাকে ৷ বাড়ির কারও সংক্রমণ হলে পোষ্য়ের শরীরেও ছড়াতে পারে ভাইরাস। আবার বাড়ির পোষ্য়ের শরীরে জীবাণু ঢুকলে সেখান থেকে পরিবারের লোকজনের শরীরেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়ির পোশ্যকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোনওরকম র্যাশ, ফুসকুড়ি বা ঘা হচ্চে কিনা খেয়াল রাখতে হবে। পরিবারের কেউ সংক্রমিত হলে পোষ্যকে দূরে রাখতে হবে।