
ভ্যাকসিনের ‘বুস্টার শট’ নেওয়ার এখনই দরকার নেই, দুটি ডোজেই আপনি সুরক্ষিত: হু-র শীর্ষ বিজ্ঞানী
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সাম্প্রতিক সময়ে যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি চর্চায় রয়েছে তা হল কোভিড ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ। বুস্টার ডোজ মানে হল কোভিড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও তৃতীয় আর একটি ডোজ। অনেকেই বলছেন, ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েও সুরক্ষা বেশি পাওয়া যাবে না। তাই শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বাড়াতে তৃতীয় একটি শট নেওয়া যেতে পারেই। বিশেষ করে যখন ভাইরাসের এতগুলো সংক্রামক প্রজাতি ছেয়ে গেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ বিজ্ঞানী ডাঃ সৌম্যা স্বামীনাথন বলছেন, বুস্টার ডোজের কথা এখনই ভাবার দরকার নেই। সবাইকে আগে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ সম্পূর্ণ করতে হবে।
ডাঃ সৌম্যা স্বামীনাথন বলছেন, বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকরী তা এখনও প্রমাণিত নয়। গবেষণা চলছে। তাই পরীক্ষানিরীক্ষার পরেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ব্রিটেনে এখনই কোভিডের বুস্টার ডোজের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, শীতের সময় কোভিডের নতুন ধাক্কা আসতে পারে। তাই আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বুস্টার ডোজের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। সাত রকম ভ্যাকসিনের ডোজের ট্রায়াল চলছে, কোনটি বুস্টার ডোজ বা অধিক সুরক্ষা দিতে পারবে তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস শুরুতে যেমনটা ছিল এখন তার রূপ অনেকটাই পরিবর্তিত। বিশ্বজুড়েই ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেনে মিউটেশন বা জিনের গঠন বিন্যাস খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। মানে মিউটেশন হচ্ছে পরপর, র্যাপিড। একবারে ২০০ বার জিনের গঠন বদলাতেও দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। স্পাইক প্রোটিনে অ্যামাইনো অ্যাসিডের কোডও বদলে যাচ্ছে। তাই ভাইরাল স্ট্রেন দিনে দিনে আরও ছোঁয়াচে, অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। ভাইরোলজিস্টদের বক্তব্য ছিল, ভ্যাকসিনে কাজ হবে ঠিকই, কিন্তু সারা বছর সংক্রামক ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে শরীরের ইমিউনিটি সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এর জন্যই দরকার এই তৃতীয় ডোজ।
ভাইরোলজিস্টদের বক্তব্যের পরেই বিশ্বের নানা দেশেই প্রশ্ন উঠেছে, তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ নেওয়া কতটা জরুরি। এখনই চালু করার দরকার আছে কিনা। সে বিষয় নিয়ে হু-র বিজ্ঞানীরা বক্তব্য, বিশ্বের অনেক গরিব ও পিছিয়ে পড়া দেশে এখনও ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ দেওয়াই সম্ভব হয়নি। সেখানে তৃতীয় ডোজ এখনই চালু করা সম্ভব নয়। তাছাড়া ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ সঠিক সময় মেনে নিলেই শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, সুরক্ষা অনেকটাই পাওয়া যাবে।