
দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন প্রজাতি ৫০% বেশি সংক্রামক, স্পাইক প্রোটিনের আকারই বদলে দিয়েছে
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ব্রিটেন স্ট্রেন বেশি সংক্রামক নাকি দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন স্ট্রেন বেশি ছোঁয়াচে, যে ব্যাপারে নিশ্চিত খবর এখনও দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। দুই স্ট্রেনের জিনের গঠন বদলেছে। দুই স্ট্রেনই মিউট্যান্ট। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন স্ট্রেন নাকি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমনটাই দাবি সে দেশের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী সালিম আবদুল করিমের।
আমেরিকার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যেমন অ্যান্থনি ফৌজি, দক্ষিণ আফ্রিকায় ঠিক তেমনি প্রাধান্য সালিম আবদুল করিমের। নতুন স্ট্রেন নিয়ে তাঁর মতামত জানতে চাওয়া হলে, করিম বলেন, করোনার এই নতুন প্রজাতি ৫০ শতাংশ বেশি ছোঁয়াচে। এমন ভাবে জিনের গঠন বিন্যাস বদলেছে অর্থাৎ মিউটেশন হয়েছে যে স্পাইক প্রোটিনের আকারই বদলে গেছে। এই স্পাইক প্রোটিনের সাহায্যেই ভাইরাস মানুষের শরীরে ঢুকতে পারে। কাজেই এখানে যদি জিনের বদলটা হয়, তাহলে ভাইরাস আরও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন স্ট্রেনের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে।
স্পাইক প্রোটিনের বিন্যাস বদলেছে ভাইরাস
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনার নতুন প্রজাতির নাম ‘৫০১.ভি২’ । সার্স-কভ-২ ভাইরাসের এই নয়া ভ্যারিয়ান্ট ব্রিটেন স্ট্রেনের চেয়েও বেশি ছোঁয়াচে বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের। খুব দ্রুত বিভাজিত হওয়ার ক্ষমতা আছে এই নতুন ভাইরাল স্ট্রেনের। জিনগত বদল বা জেনেটিক মিউটেশনের কারণে এই নয়া স্ট্রেন আরও বেশি সংক্রামক।
করিম বলছেন, করোনার যে স্ট্রেন প্রথম মিলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় তার থেকে নতুনটি অনেকটাই আলাদা। স্পাইক প্রোটিনের রিসেপটর বাইন্ডিং ডোমেনের আকারও বদলে দিয়েছে এই ভাইরাস। এই রিসেপটর বাইন্ডিং ডোমেনের সাহায্যে ভাইরাস মানুষের দেহকোষের রিসেপটর প্রোটিনের (ACE-2)সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। যদি স্পাইক প্রোটিনের এই অংশের গঠন বদলে যায় তাহলে দেহকোষে ঢুকে পড়া আরও সহজ হয়ে যায় ভাইরাসের কাছে। চটজলদি দেহকোষের রিপেসটর প্রোটিনগুলোকে চিহ্নিত করে ফেলতে পারে ভাইরাস। তখন আর শুধু ফুসফুস নয়, শরীরে নানা অঙ্গেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে খুব দ্রুত। বিভাজিত হওয়ার বা প্রতিলিপি তৈরির ক্ষমতাও বেড়ে যায় ভাইরাসের।
সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন প্রায় পাঁচ হাজার জিনোম সিকুয়েন্স করা হয়েছে। তাতেই দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি স্ট্রেন একে অপরের থেকে আলাদা। এত দ্রুত জিনের গঠন বিন্যাস বদলে ফেলতে পারে করোনা যে প্রতিটি ভাইরাল স্ট্রেন মানুষের শরীরে ঢুকে প্রতিলিপি তৈরি করার উপায় খুঁজে নিতে পারে। এই ঘন ঘন বদলের জন্য তাদের রিসেপটর বাইন্ডিং ডোমেন অর্থাৎ যে অংশকে কাজে লাগিয়ে তারা মানুষের দেহকোষে ঢুকতে পারে, তারও পরিবর্তন হয়ে যায়। এই কারণেই মানুষের নানা অঙ্গের কোষে ঢোকার রাস্তা খুঁজে নিতে পারে করোনা।