জ্বর-বমি-পেট ব্যথা একসঙ্গে? থুতু-লালার মাধ্যমে সংক্রমিত হচ্ছে নোরোভাইরাস

গুড হেলথ ডেস্ক

করোনার মতোই সংক্রমণ ছড়াতে পারে নোরোভাইরাস (Norovirus)। থুতু-লালার মাধ্যমে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে, এমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকরা। ‘নেচার’ সায়েন্স জার্নালে নোরোভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে নতুন গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে। ইদানীংকালে এই ভাইরাসের সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে এ দেশেও। শিশু ও কমবয়সীরা বেশি সংক্রমিত হয়েছে।

নোরোভাইরাস হল অনেকটা ডায়েরিয়ার রোটাভাইরাসের মতো। তবে এদের প্রজাতি (Norovirus) আলাদা। আরও বেশি সংক্রামক। ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে ১২-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। অনেকের আবার ২-৩ দিন পরেও উপসর্গ ধরা পড়ে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আগে ভেঙেচুরে দেয় এই ভাইরাস। রোগীর শরীরকে জনশূন্য করতে শুরু করে। ডিহাইড্রেশনের সঙ্গেই মারাত্মক বমি ও পেট খারাপ শুরু হয়। বমি ও পেটের সমস্যা হল নোরোভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ। অনেকেই ডায়েরিয়া ভেবে ভুল করেন, ফলে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়।

 norovirus

এই রোগ ছড়ায় আক্রান্তের শরীর থেকে নির্গত ভাইরাসের মাধ্যমে। এ ছাড়া না ধোয়া শুকনো খাবার, দীর্ঘ দিন রেখে দেওয়া জল এবং অপরিচ্ছন্ন কোনও বস্তু থেকে। একজন আক্রান্ত ব্যক্তি বাতাসে নোরোভাইরাসের কয়েকশো কোটি কণা ছড়িয়ে দিতে পারেন। বেশিরভাগের ক্ষেত্রে এই রোগ তিন দিনে সেরে গেলেও, অনেকের ক্ষেত্রে এক মাস পর্যন্ত রোগের লক্ষণ শরীরে দেখা যায়।

অসহ্য পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। তারপরেই বমি হতে থাকে। সঙ্গে ঘন ঘন পেট খারাপ। এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বমি থামতে চাইবে না। জ্বর আসবে, মাথা ব্যথা বাড়বে, মোচড় দেবে পেট। প্রচণ্ড ক্লান্তি ও ঝিমুনি হবে রোগীর।

সংক্রমণ বাড়লে পেশির ব্যথা শুরু হবে। অন্ত্রে প্রদাহ হবে। ডিহাইড্রেশন বেড়ে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘন ঘন হলে অপুষ্টির শিকার হবে রোগী। সঠিক ট্রিটমেন্ট না হলে মৃত্য়ুও হতে পারে।

 Norovirus

কীভাবে সাবধান হবেন?

১) করোনা বিধির মতোই বার বার হাত ধুতে হবে। সংক্রমিতের (Norovirus)  কাছাকাছি গেলে মাস্ক পরতেই হবে। বাইরে থেকে এলে সাবানজল দিয়ে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করুন।

২) কোনও খাবার খাওয়ার আগে থালা-বাটি ধুয়ে নিন। সঙ্গে যে চামচ দিয়ে খাবার তুলবেন, তা-ও ধুয়ে নিন। যে কোনও বস্তু বা সারফেসে এই ভাইরাস দীর্ঘ সময় জমে থাকতে পারে। সেখান থেকে শরীরেও দ্রুত ঢুকতে পারে।

৩) ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে হলে শরীর আর্দ্র রাখতে হবে। নোরোভাইরাস ঠেকাতে বার বার জল খান। অন্য়ান্য পানীয়ও খেতে পারেন, তবে রাস্তার শরবত, লস্যি বা কোল্ড ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলাই বাল।