
১৩ কেজি (৩০ পাউন্ড) ওজন ঝরিয়েছেন টুইটার কর্তা ইলন মাস্ক। কীভাবে এত ওজন কমল, তার উত্তরে মাস্ক বলেছিলেন, বন্ধুর পরামর্শে উপোস করে, ওজেমপিক (Ozempic) নিয়ে ও মুখরোচক খাবার থেকে দূরে থেকেই এতটা ওজন কমাতে পেরেছেন তিনি। উপোস করা আর খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যাপারটা তো বোঝা গেল। কিন্তু এই ওজেমপিক (Ozempic) জিনিসটা কী?
ওজেমপিক হল একধরনের ওষুধ। ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ওজেমপিক ইঞ্জেকশন নেওয়া যায়। অনেকেই বলেন, ওজেমপিক যেমন রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, তেমনই এই ইঞ্জেকশনের ডোজে ওজনও খানিকটা কমে যায়। সপ্তাহে একদিন নেওয়া যায় এই ইঞ্জেকশন।
ওজেমপিক (Ozempic) কী? এটা কি একধরনের ইনসুলিন?
ওজেমপিক (সেমাগ্লুটাইড) একধরনের ওষুধ যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রোগীরা নিতে পারেন। এটা হল গ্লুকাগন-লাইক পেপটাইড ১ ((GLP-1)) যা শরীরে ঢুকে GLP-1 হরমোনের নকল করে। এই ওষুধের ডোজ প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়কে ইনসুলিন তৈরি করতে বাধ্য করে। এইভাবে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে পারে না। তবে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে এই ওষুধ কার্যকরী হবে না।
ইনসুলিন ইঞ্জেকশনের মতোই দেখতে, ওজেমপিক (Ozempic) পেন ইঞ্জেকটর। তবে এটি ইনসুলিন বা ইনসুলিনের বিকল্প কিছু নয়। সপ্তাহে একবারই নেওয়া যায় এই ইঞ্জেকশন। এর ডোজে অগ্ন্যাশয়কে অ্যাকটিভ হয়ে ইনসুলিন তৈরি করে। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা অনেকেই বলেন, জিএলপি-১ শুধু রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে না, খিদে খিদে ভাবটাও কমিয়ে দেয়। এর ডোজ নিলে যখন তখন খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। মনে হয় পেট ভর্তি আছে। খিদে কম হওয়ায় খাওয়ার পরিমাণও কমে যায়। এইভাবে ওজনও কমে।
ওজেমপিকের আরও একটা গুণ হল কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। ডায়াবেটিসের রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শে সঠিক ডোজে ওজেমপিক নিলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। হার্টের রোগীদের যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে সেক্ষেত্রেও ওজেমপিক নেওয়া যায়। তবে নিজে থেকে ডাক্তারি করে এই ইঞ্জেকশন না নেওয়াই ভাল। কারণ কতটা ডোজ নিতে হয় এবং কতদিন এই ইঞ্জেকশন নেওয়া যায় সেটা ডাক্তারের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।