Root Canal: দাঁতের ক্যাভিটির ভেতর থেকে ময়লা বের করবে, ক্ষত সারাবে রোবট, দুরন্ত আবিষ্কার আইআইএসসি-র

গুড হেলথ ডেস্ক

দাঁতে ক্যাভিটি হলে বা ক্ষত তৈরি হলে, একদম গভীরে গিয়ে সেই ক্ষত সারানো সাধারণ রুট ক্যানাল (Root Canal) ট্রিটমেন্টে সম্ভব নয়। এর জন্য চাই আরও আধুনিক পদ্ধতি। ক্য়াভিটির একদম গভীরে গিয়ে ময়লা, পাল্প টেনে বের করাও অসম্ভব ব্যাপার। সেই কাজই সহজে করে দিচ্ছে রোবট।

বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (আইআইএসসি) বানিয়েছে এমন রোবট। একদম ছোট ছোট ন্যানোবট (Nanobot) যাদের চুম্বকীয় শক্তি রয়েছে। দাঁতে ইনজেক্ট করলে এরা গভীর অবধি গিয়ে ক্ষত সারাতে পারে। আলগা বা নড়ে যাওয়া দাঁতের ভিত শক্ত করতে পারে। আইআইএসসি এর নাম দিয়েছে হেলিকাল ন্যানোবট।

 robots

রুট ক্যানাল (Root Canal) ট্রিটমেন্ট করবে ন্যানোবট 

দাঁতের দু’রকম সমস্যা বেশি দেখা যায়। দাঁতের ক্ষয়জনিত রোগ এবং মাড়ির সমস্যা। দাঁতের ক্ষয় হয় মূলত বিভিন্ন রকম খাবার বেশি সময় দাঁতে জমে থাকে বলে। খাবারে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে অ্যাসিড তৈরি হয় এবং দাঁতের ওপরের অ্যানামেল অংশ ক্ষয় হতে শুরু করে। পরে সেখানে ক্যাভিটি বা গর্ত হয়ে যায়।

ক্যাভিটি হল দাঁতের ছিদ্র বা গহ্বর, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। দাঁত ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে ওপরের চকচকে অংশ ক্ষয়ে ছিদ্র তৈরি হয়, তখন তাকে ক্যাভিটি বলে। সেটা দাঁতের গোড়া পর্যন্ত চলে গেলে সমস্যা হয়। সেই ছিদ্রের মধ্যে খাবারের কুচি ঢুকে যায়। সেই কুচি পচে গিয়ে তা দাঁতের ক্ষতি করে। যন্ত্রণা হয়। ক্ষতিগ্রস্থ হয় দাঁতের পাল্প।

World Hypertension Day 2022: বিশ্বজুড়ে ক্রনিক কিডনির অসুখের কারণ হাইপারটেনশন! দাবি ল্যানসেটের গবেষণায়

দাঁতের একমাত্র জীবিত অংশ হল এই পাল্প। নার্ভ, কানেক্টিভ টিসু এবং রক্তনালী দিয়ে তৈরি হয় দাঁতের গোড়ার এই পাল্প। রুট ক্যানাল ট্রিটমেন্টে এই ক্ষতিগ্রস্ত পাল্পটিই বার করে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। এর পরে তার ভিতরে একটা ইনার ফিলিং মেটিরিয়াল দিয়ে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে দাঁত সম্পূর্ণ ডেড স্ট্রাকচারে পরিণত হয়ে গেলেও কাঠামো মজবুত থাকে। শেষে ক্রাউন বা ক্যাপ পরিয়ে দেওয়া হয়।

Tiny bots can deep clean teeth

সাধারণ রুট ক্যানালে অ্য়ান্টিবায়োটিক সলিউশন দিয়ে ফ্লাশ করে পাল্প বের করেন ডাক্তাররা। এতে সমস্ত পাল্প টেনে বের করা যায় না। কিছুটা থেকেই যায়। তাছাড়া ব্যাকটেরিয়ার যে সংক্রমণ হয় তার সবটাও সারানো যায় না। বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে সহজে নষ্ট করা যায় না, যেমন এন্টারোকক্কাস ফেকালিস। সেক্ষেত্রে দাঁতের ক্ষতও সবটা সারে না। রুট ক্যানাল ফেল করে বেশিরভাগ সময়। সেখানে ন্যানোবট দিয়ে ট্রিটমেন্ট করলে তাতে সাফল্য অনেক বেশি আসবে বলেই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

আইআইএসসি-র সেন্টার ফর ন্যানো সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর গবেষক শানমুখ শ্রীনিবাস বলছেন, এই ন্যানোবটগুলি তৈরি সিলিকন ডাইক্সাইড দিয়ে, বাইরে আয়রনের কোটিং রয়েছে। এগুলো খুব লো-ইনটেনসিটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করে। মাড়ির অনেক গভীরে গিয়ে ফাঁকফোঁকর থেকে ময়লা টেনে বের করতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, আগে আলট্রাসাউন্ড বা লেজার পালস দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ফ্লাশ করে বের করা হত। কিন্তু লেজার পালস ৮০০ মাইক্রোমিটারের বেশি ঢুকতে পারত না। ন্যানোবট সেখানে সহজেই ২০০০ মাইক্রোমিটার অবধি চলে যেতে পারে। চুম্বকীয় শক্তি শুধু নয় এই ন্যানোবট তাপশক্তিও তৈরি করতে পারে। ক্য়াভিটির ভেতর ব্যাকটেরিয়াগুলোকে হিট দিয়ে নষ্ট করে দেয়। কোনওরকম রাসায়নিক বা অ্যান্টিবায়োটিক সলিউশনের দরকার পড়ে না। ফলে এই প্রক্রিয়ায় রুট ক্যানাল করলে তার সাইড এফেক্টসের ঝুঁকিও কম।