Stroke Risk: চা-কফি স্ট্রোক ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমায়! গবেষণায় দাবি বিজ্ঞানীদের

গুড হেলথ ডেস্ক

কথায় বলে ‘টাইম ইজ ব্রেন’।

টাকার থেকেও বেশি জরুরি মস্তিষ্ককে সচল ও কার্যক্ষম রাখা। ব্রেন বিগড়ে (Stroke Risk) গেলে জগৎ অন্ধকার। বর্তমান বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর চতুর্থ কারণ হিসেবে ব্রেন স্ট্রোককে চিহ্নিত করা হয়। স্ট্রোক হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। বড়সড় ব্রেন-স্ট্রোক হলে রোগীর শরীরের একদিক পক্ষাঘাতগ্রস্থও হয়ে পড়তে পারে। পোস্ট-স্ট্রোক পর্যায়ে দেখা দেয় নানারকম শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা, ঝুঁকি বাড়ে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের। স্ট্রোক নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বজুড়েই নানা ক্য়াম্পেন চলছে। স্ট্রোকের ঝুঁকি (Stroke Risk) কীভাবে কমানো যায় সে নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে বিস্তর। সম্প্রতি একটি গবেষণা তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

Stroke Risk

‘প্লস মেডিসিন’ (PLOS Medicine) মেডিক্যাল জার্নালে একটি গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে যেখানে বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিয়মিত চা বা কফি খেলে বা দুটোই খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি (Stroke Risk) ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যায়। এখন কতটা চা-কফি সারাদিনে খেলে ব্রেন-স্ট্রোকের মতো রোগকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে তারও একটা হিসেব দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ADHD: বাচ্চা খুব দুরন্ত, একদম মনোযোগ নেই, অস্থির ভাব? বকাঝকা করবেন না

Stroke Risk: Tea and coffee consumption


কী বলছে গবেষণা (Stroke Risk)?

২০০৬ থেকে ২০১০ সাল অবধি ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা করে এই দাবি করেছেন ব্রিটেনের একদল বিজ্ঞানী। ৫০ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের ওপর চার বছর ধরে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। দেখা গেছে, দিনে ২ থেকে ৩ কাপ কফি বা ৩ থেকে ৫ কাপ চা খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩২% কমে যায়।

যাঁরা নিয়মিত দিনে চা ও কফি দুটো খান তাদের কাজ হয় আরও বেশি। সেক্ষেত্রে দিনে ৪ থেকে ৬ কাপ চা ও কফি মিলিয়ে খেলে স্ট্রোক (Stroke Risk) ও স্ট্রোক-পরবর্তী পর্যায়ে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।

Stroke Risk

দিনে ২ থেকে ৩ কাপ চা ও ২ থেকে ৩ কাপ কফি খেলে ব্রেন-স্ট্রোকের শঙ্কা ৩২ শতাংশ কমে ও পোস্ট-স্ট্রোক পর্যায়ে ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনা ২৮ শতাংশ কমে যায়।

 

স্ট্রোক কেন হয়?

হাই প্রেশার, সুগার-সহ নানা রিস্ক ফ্যাক্টর মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ আটকে দেয়। ফলে ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্তপ্রবাহ বাধা পায়, রক্তে ভাসমান চর্বি ধমনীতে আটকে গিয়ে রক্ত চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে। এমনটা হলে মস্তিষ্কের কোষে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না, ধীরে ধীরে মাথার কোষগুলো নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে। তখন চোখে অন্ধকার লাগে, হাত-পা, জিভ অসাড় হয়ে যায়, এই অবস্থাকেই বলে ব্রেন-স্ট্রোক। বড়সড় ব্রেন-স্ট্রোক হলে রোগীর শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্থও হয়ে পড়তে পারে। স্ট্রোক হওয়ার পর সাড়ে চার ঘণ্টা হল গোল্ডেন আওয়ার। এর মধ্যে ইন্টারভেনশন পদ্ধতির সাহায্যে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক করে দিতে পারলে রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সময় লাগে না। কিন্তু দেরি হলেই বিপদ।

Stroke (Brain Attack)

স্ট্রোক পরবর্তী (Stroke Risk)  পর্যায়ে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, প্যারালিসিস বা পক্ষাঘাত হওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া, অঙ্গ বিকৃতি হয়ে যাওয়ার মতো নানা ধরনের অক্ষমতা দেখা দিতে পারে।

এক বার স্ট্রোক হলে পরের বার স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা ১০% বেড়ে যায়। দ্বিতীয়বার স্ট্রোক হলে এই ঝুঁকি বেড়ে গিয়ে ২০% হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া ও ডাক্তারের পরামর্শে থাকতে হয়। কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, চা-কফিতে থাকে ক্য়াফেইন যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। পলিফেনল এক ধরনের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা শরীরের জন্য় ভাল। তাছাড়া চা-কফিতে থাকে অ্য়ান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। চা-কফি আর কীভাবে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাচ্ছে সে নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত তথ্য় সামনে আনতে পারেন বিজ্ঞানীরা।