Calcutta Medical College: হার্ট চলছে অথচ স্পন্দন নেই, বিরল অসুখে আক্রান্ত রোগীকে বাঁচাল কলকাতা মেডিক্যাল

গুড হেলথ ডেস্ক

হার্ট সচল। বেঁচেও আছেন রোগী। অথচ হৃদস্পন্দন বোঝা যাচ্ছে না। পালস বুঝতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তারদের। এদিকে রোগীর হাত-পায়ের আঙুল ব্যথায় অসাড় হয়ে বেঁকে যাচ্ছে, পেশিতে ব্যথা। ক্রমশ স্টিফ হতে শুরু করেছে। এমন বিরল অসুখে আক্রান্ত রোগীর প্রাণ বাঁচিয়ে নজির গড়ল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ (Calcutta Medical College)।

হুগলির সিঙ্গুরের বাসিন্দা এক মহিলা এমন অসুখ নিয়ে হাসপাতালে আসেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College) চিকিৎসকরা বলছেন, আলপনা ঘোষ নামে ওই মহিলার পালস পাওয়াই যাচ্ছিল না। হার্টের যে স্পন্দন বা রিদম আছে তা স্বাভাবিক নিয়মেই চলে। হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়া মানে হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা থেমে গেছে। কিন্তু এই রোগীর ক্ষেত্রে তা হয়নি। তাঁর হার্ট সচলই ছিল, শুধু স্পন্দন ধরা যাচ্ছিল না। ডাক্তারি ভাষায় এমন রোগকে বলে টাকায়াসু আর্টারাইটিস (Takayasu’s arteritis)।

২০১৭ সালে ওই মহিলার এমন শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে।  কিন্তু এতদিনে তিনি চিকিৎসা করাতে আসেন।  ডাক্তারবাবুরা বলছেন, আরও দেরি হলে সমস্যা বাড়ত। চিকিৎসায় এখন ওই মহিলা অনেকটাই স্থিতিশীল।

 

কী এই টাকায়াসু আর্টারাইটিস (Takayasu’s arteritis)?

বিরল অসুখ।  জাপানে প্রথম ধরা পড়েছিল।  প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে এক শতাংশের হয়। একে বলে বিরল ধরনের ভ্যাসকুলাইটিস যাতে নানা ধরনের ডিসঅর্ডার হয়। বিশেষ করে রোগীর রক্ত জালকে ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ হয়। হৃদপিণ্ড থেকে যে ধমনী সারা শরীরে রক্ত পৌঁছে দেয়, সমস্যা হয় সেখানেই।

ধমনী ক্রমশ সরু হতে শুরু করে। ফলে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে হয় না। ধমনীতে ব্লক তৈরি হয়। অনেক সময় ধমনীর দেওয়ালে ক্ষত তৈরি হয়। ফলে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ কমতে থাকে। এর ফল স্বরূপ হাত-পায়ে ব্যথা, পেশিতে টান ধরে, রক্তচাপ বাড়তে থাকে এবং পরিণতি হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে।

Covid Restrictions: মাস্ক ছাড়া উঠে যাচ্ছে করোনা বিধি, পরিণাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাজ্যের চিকিৎসকদের

Takayasu's Arteritis

ডাক্তারবাবুরা বলছেন, ধমনীর এই রোগকেই বলে টাকায়াসু আর্টারাইটিস। এই অসুখ হলে তার নানা রকম লক্ষণ দেখা দিতে থাকে।

কী কী লক্ষণ–

স্টেজ ১

ঝিমুনি, মাথা ঘোরা, ওজন কমে যায়, পেশি ও গাঁটে ব্যথা, হাল্কা জ্বর, রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। রাতের বেলা প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে।

স্টেজ ২

হাত-পায়ে ব্যথা, সবসময় মাথা ঘোরা, চোখে অন্ধকার দেখা, ক্লান্তিভাব।

প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা।

স্মৃতিশক্তি কমতে শুরু করে। চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যায়।

বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট

উচ্চ রক্তচাপ

ডায়ারিয়া, মলের সঙ্গে রক্ত বের হতে পারে

রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া হতে পারে।

এইসব উপসর্গ দেখা দিলে সাবধান হতে হবে রোগীকে। সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।