বাড়ির বয়স্কদের সোডিয়াম-পটাশিয়াম টেস্ট করিয়েছেন? না হলে কী কী সমস্যা হবে

গুড হেলথ ডেস্ক

ঘুম ভেঙে উঠে দেখলেন প্রচণ্ড ক্লান্তি। সারাদিন বিশ্রাম নিয়েও ক্লান্তি যাচ্ছে না। অতিরিক্ত ঘাম হচ্ছে। তাহলে বুঝতে হবে শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়াম লেভেলের (Sodium Potassium Imbalance) ঘাটতি হচ্ছে।  একজন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে ৩.৫-৫.১ এমজি/ডিএল পটাশিয়াম ও ১৩৫-১৪৫ এমজি/ডিএল সোডিয়াম থাকা উচিত (sodium and potassium test)। এই মাত্রায় গণ্ডগোল হলেই বিপদ।

সোডিয়োম–পটাশিয়াম কী?‌ এর গুরুত্ব কতটা?‌

দুটোই খুব প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইট (Sodium Potassium Imbalance)। এরা যেমন শরীরে কোষের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, তেমনই ব্রেনসেল বা মস্তিষ্কের কোষের কার্যক্ষমতাও নির্ভর করে এই সোডিয়াম–পটাশিয়ামের ওপর। প্রতিটা কোষের গায়ে সোডিয়াম–পটাশিয়াম পাম্প থাকে, যা কোষের মধ্যে পটাশিয়াম প্রবেশ করায় আর সোডিয়াম বের করে। এই কাজটা ঠিকমতো না হলেই নানা সমস্যার সূত্রপাত।

Avail The Best Sodium Potassium Test Price: Quick & Standard Report - Accuhealth Diagnostics

সোডিয়াম–পটাশিয়ামের মাত্রা কমে কেন?

ক)‌ আমরা ট্রপিক্যাল ক্লাইমেট বা গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বাস করি। শীতের সময়টা বাদে সারা বছরই খুব ঘাম হয়, ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ সল্ট বা নুন বেরিয়ে যায়। শরীরে নুনের ঘাটতিই সোডিয়াম–পটাশিয়ামের মাত্রা কমার অন্যতম কারণ।

salt intake: Why low-sodium salt is bad for health | Delhi News - Times of India

খ)‌ অধিকাংশ প্রবীণই উচ্চ রক্তচাপের কারণে নুন কম খান। এর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু ওষুধ আছে যেগুলো খেলে শরীর থেকে নুন বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরে সোডিয়াম–পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়।

গ)‌ মেনিনজাইটিস, মস্তিষ্কের টিউমার ইত্যাদি অসুখেও অনেক সময় শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমে।

ঘ)‌ যাঁদের কিডনির অসুখ আছে তাঁদের ক্ষেত্রে শরীরে পটাশিয়াম বাড়ে, সোডিয়াম কমে।

কমলে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়?‌

ক)‌ হাত, পা ফুলে ভারী হতে শুরু করে।
খ)‌ দুর্বলতা মারাত্মক বেড়ে যায়।
গ)‌ অনেক সময় মস্তিষ্ক স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাতে পারে।
ঘ)‌ খুব বিরল হলেও এনসেফ্যালোপ্যাথি হতে পারে।
ঙ)‌ সোডিয়ামের মাত্রা ১১০ এম জি/ডি এল‌–এর নীচে নেমে গেলে মানুষ কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে পারে।

শরীরে সোডিয়াম–পটাশিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা কত?‌
শরীরে পটাশিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা ৩.৫–৫.১ এম জি/ডি এল এবং সোডিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা ১৩৫–১৪৫ এম জি/ডি এল।

Serum Electrolyte

কীভাবে স্বাভাবিক রাখবেন?‌
ক)‌ গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে যাঁরা থাকেন, তাঁদের প্রতিদিন ৩–৪ গ্রামের‌ মতো নুন খাওয়া দরকার। পরিমাণটা রান্না করা খাবার, সাপ্লিমেন্ট সব কিছু মিলিয়ে। তবে রক্তচাপ বা কোনও ক্রমিক অসুখ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।
খ)‌ প্রবীণরা যাঁরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান, তাঁদের শরীর থেকে অনেক সময় নুন বেরিয়ে যায়। তাই তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শমত নির্দিষ্ট সময় অন্তর সোডিয়াম–পটাশিয়াম পরীক্ষা করা দরকার।