
বাতাসের বিষাক্ত কণা মনের অসুখের কারণ হতে পারে! দূষণ থেকে বাড়ছে ডিমেনশিয়া-ডিপ্রেশন
গুড হেলথ ডেস্ক
দেশজুড়েই দূষণের (Air Pollution) পাল্লা ভারী। মেট্রো শহরগুলিতে তো কথাই নেই। দূষণের তালিকায় এগিয়ে আছে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট বলছে, বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম কণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম ২.৫) মাত্রা হু-র নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে প্রায় ১৭ গুণ বেশি। বিষ-বাষ্প যেমন ফুসফুস সহ সারা শরীরের ক্ষতি করছে, তেমনই বায়ু দূষণ থেকে বাড়ছে মানসিক ব্যধিও (Mental Health), এমনটাই দাবি নতুন গবেষণায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়েছে ৫০ শতাংশ। গত ২০০ বছরে যেখানে বাতাসে বিষাক্ত কার্বনের মাত্রা বেড়েছিল মাত্র ২৫ শতাংশ, সেখানে মাত্র ৩০ বছরেই বিষাক্ত বাষ্পের মাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণই হল, মানুষের তৈরি দূষণ (Air Pollution)। কলকারখানা ধোঁয়া, গ্রিন হাউস গ্যাসের বাড়বাড়ন্ত। প্লাস্টিক দূষণের কারণে পরিবেশে রাসায়নিকের মাত্রাও বাড়ছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে বিষাক্ত কণা মিশছে মাটি, জলে। বিদ্যুৎকেন্দ্র, গাড়ি, ট্রাক, অগ্নিকাণ্ড, ফসল পোড়ানো ও কারখানার চিমনি থেকে এই দূষণ-কণাগুলি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বাতাসের ধূলিকণাকে আশ্রয় করে বিষ-বাস্প তৈরি করে।
এইসব বিষাক্ত রাসায়নিক শরীরে ঢুকে স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলছে। বাতাসের নাইট্রিক অক্সাইড মানুষের শরীরে ঢুকে রক্তবাহিকাগুলোর ক্ষতি করছে। রক্তনালীতে দূষিত কণা দীর্ঘদিন ধরে জমা হতে হতে রক্তনালীর পথ বন্ধ করছে। ফলে রক্ত সঞ্চালন বাধা পেয়ে হার্টের নানা অসুখ দেখা দিচ্ছে।
২০১৯ সালেও এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছিলে কীভাবে বায়ু দূষণের (Air Pollution) ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যেও। গবেষকরা বলছেন, বাড়তে থাকা দূষণ স্কিৎজোফ্রেনিয়া, অবসাদ বা ডিপ্রেশন, স্মৃতিনাশ বা ডিমেনশিয়ার কারণ হয়ে উঠছে। কারণ বাতাসে ভাসমান বিষাক্ত কণা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। শিশুর মানসিক বৃদ্ধিও থমকে যাচ্ছে দূষণের কারণেই। বিশেষ করে সদ্যোজাতরা যদি দূষিত আবহাওয়ায় বেশি সময়ে কাটায়, তাদের উপর প্রভাব বেশি পড়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বায়ুদূষণ যত বাড়বে, ততই কমবে মস্তিষ্কের বৃদ্ধি। তাই দূষণের মাত্রা কমাতে না পারলে আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর জটিল মানসিক ও শারীরিক ব্যধির মুখোমুখি হতে হবে মানবসভ্যতাকে।