
পেট না কেটেও জরায়ুর টিউমার বের করা সম্ভব, ল্যাপারোস্কোপিতে অসাধ্য সাধন করছেন ডাক্তাররা
গুড হেলথ ডেস্ক
জরায়ুর সমস্যা (uterus transplants) আর মাতৃসুখ থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। একটা সময় মনে করা হত, অন্ত্রোপচারে জরায়ু কেটে বাদ দিতে হলে বা প্রতিস্থাপন করাতে হলে মা হওয়ার আর সম্ভব হবে না। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি এই ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। জরায়ুতে যদি টিউমার (ovarian tumor) ধরা পড়ে তাহলে পেট না করেও সার্জারি করা সম্ভব। জরায়ু বাদ দেওয়ারও প্রয়োজন নেই। মাতৃত্বেও কোনও প্রভাব পড়বে। আধুনিক সার্জারিতে (Laparoscopy) অসাধ্য সাধন করছেন ডাক্তারবাবুরা।
টিউমার আজকাল ঘরে ঘরে। একশো জন মহিলার মধ্যে ২০-৩০ জনই এই সমস্যায় ভোগেন। তার মধ্যে বহু কমবয়সি মহিলাও আছেন। ডাক্তারবাবুরা বলছেন, টিউমার জরায়ুর গায়ে বা বাইরেও তা হতে পারে। তখন সেখানে পৌঁছতে গেলে পেট ফুটো করে নল ঢোকাতে হয়। তাকে বলে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি। আর জরায়ুর গহ্বরের মধ্যে টিউমার হলে ভ্যাজাইনার মধ্যে দিয়ে নল ঢুকিয়ে অপারেশন করা হয়। বেশি দিন হাসপাতালে থাকতে হয় না। আর মাস খানের মধ্যে রোগের আর চিহ্ন থাকে না শরীরে। ছোট টিউমার থাকলে, সঙ্গে আর কোনও কষ্ট না থাকলে অপারেশনের দরকার নেই। তবে টিউমার বড় হতে শুরু করলে অপারেশন করে নিতে হবে। না হলে কিডনির উপর চাপ পড়ে কিডনি খারাপ হয়ে যেতে পারে।
ল্যাপারোস্কোপিতে দিশা দেখাচ্ছেন ডাক্তাররা
টিউমার (ovarian tumor) একবার হলে বার বার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ক্যানসারের ঝুঁকিও থেকে যায়। একটা সময় জরায়ু বাদ দিতে হত। কমবয়সি মহিলা হলে তখন সমস্যা হত। সন্তানধারণের কথা ভেবেই ডাক্তাররা আধুনিক অস্ত্রোপচার করেই টিউমার বা জরায়ুর অস্বাভাবিকতা ঠিক করছেন। এখন প্রায় সব অপারেশনই ল্যাপারোস্কপিতে করা হচ্ছে। পেট না কেটে পেটে ফুটো করলেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। পেট কাটার দরকার হচ্ছে না। গলব্লাডার আর অ্যাপেনডিক্স যেমন আর পেট কেটে হয় না, তেমনই।
ল্যাপারোস্কোপিতে (Laparoscopy) নল ঢুকিয়ে টিউমার বের করে আনা হয়। পেটের মধ্যের সব কিছু বাইরের ক্যামেরায় বড় করে দেখা যায়। ফলে অপারেশন খুব সহজ হয়।ল্যাপারোস্কোপিতে খুব তাড়াতাড়ি রোগী সেরে ওঠে। ভবিষ্যতে কোনওরকম সংক্রমণ বা হার্নিয়া হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। অপারেশনের সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।
ডাক্তারবাবুরা বলছেন, অবিবাহিত মেয়েদের পেট কেটে জরায়ুর ভেতর অপারেশন করলে ভবিষ্যতে প্রেগন্যান্সি আসতে সমস্যা হয়। তা ছাড়া দাগটাও বেমানান। তাই সেক্ষেত্রে অসাধ্য সাধন করছে ল্যাপারোস্কোপিই। এই ধরনের সার্জারির পরে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে স্বাভাবিক যৌন জীবনে ফেরাও সম্ভব।