
অয়েল পুলিং কী? প্রাচীন আয়ুর্বেদে আছে এই পদ্ধতি, অনুষ্কা-করিনা-শিল্পারা নিয়মিত করেন
গুড হেলথ ডেস্ক
অয়েল পুলিং (Oil Pulling) কী জানেন?
বলিউডের অনেক তারকাই করেন। ফিটনেস ফ্রিক শিল্পা শেট্টি, অনুষ্কা শর্মা থেকে শুরু করে করিনা কাপুর, সোনম কাপুর, জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ–তালিকাটা লম্বা। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়ম মেনে অয়েল পুলিং করেন তাঁরা। উপকারও নাকি বিস্তর।
২০২০ সালে নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে প্রথম অয়েল পুলিংয়ের কথা বলেছিলেন অনুষ্কা শর্মা। তিনি লিখেছিলেন, রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে এটাই তাঁর রুটিন হয়ে গেছে। একদিনও বাদ যায় না। সকাল সকাল অয়েল পুলিং দিনভর তরতাজা রাখে তাঁকে।
অয়েল পুলিং (Oil Pulling) কী?
ভারতের প্রাচীন আয়ুর্বেদে অয়েল পুলিংয়ের কথা বলা আছে। অয়েল পুলিং হল, মুখে জলের বদলে তেল নিয়ে কুলকুচি করা। অবাক হচ্ছেন তো! এই পদ্ধতি নাকি এতটাই ভাল যে বাজারচলতি মাউথ ওয়াশের দরকারই পড়বে না। দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভাল রাখবে, মুখে দুর্গন্ধ হবে না, দাঁত ও মাড়িতে সংক্রমণ থাকলে তা কমে যাবে।
আমরা রোজ যে খাবার খাই সেই খাবারের কণা দাঁতের ফাঁকে, মাড়িতে জমে থাকে। পরে সেখানেই ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। দাঁতে ক্যাভিটি, মাড়িতে ইনফেকশনের কারণ ওইসব ব্যাকটেরিয়া। এইসব জীবাণু যে অ্যাসিড তৈরি করে তার থেকে দাঁতের এনামেলের ক্ষয় হয়। তেল দিয়ে কুলকুচি করলে এইসব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়।
অয়েল পুলিং কীভাবে করতে হয়?
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ, ডক্টর সুধা অশোকান বলছেন, খুবই উপকারি পদ্ধতি। মুখের স্বাস্থ্য (Oral Health) ভাল থাকে। মুখের ভেতরে স্ট্রেপটোক্কাস নামে একধরনের ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। অয়েল পুলিং নিয়মিত করলে এই ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়। মুখে কোনওরকম সংক্রমণ হয় না।
অয়েল পুলিং (Oil Pulling) সবচেয়ে ভাল হয় নারকেল তেলে। এর দু’রকম পদ্ধতি আছে–কাভালা (Kavala) ও গানডোশা (Gandoosha)। কাভালা মানে হয় মুখে তেল নিয়ে গার্গল করা, আর গানডোশা হল মুখে তেল নিয়ে কুলকুচি করে ফেলে দেওয়া। দুটো পদ্ধতিই কার্যকরী বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ।
ডায়েটিশিয়ান চয়নিকা শর্মা বলছেন, আগেকার দিনে মুখে তেল নিয়ে কুলকুচি করার রেওয়াজ ছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে মিনিট ২০ অয়েল পুলিং করলে মুখে ক্ষতিকর মাইক্রোবস জমতে পারে না। টক্সিনও বেরিয়ে যায়। মুখে এক থেকে দু’চামচ তেল (বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এক চামচ) নিয়ে ৫ মিনিট ধরে কুলকুচি করতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয় মুখে তেল ১০ মিনিট রেখে দিলে। তারপর ফেলে দিতে হবে। মুখের লালাগ্রন্থিও ভাল থাকে এই প্রক্রিয়া করলে।
মুখের আলসার, দাঁত বা মাড়িতে ব্যথা, বমিভাব, হাঁপানি বা অন্য সমস্যা থাকলে যদি ব্রাশ করার অসুবিধা থাকে তাহলে অয়েল পুলিংই সেক্ষেত্রে কার্যকরী ও উপকারি পদ্ধতি। তবে অয়েল পুলিং করতে চাইলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে করাই ভাল।