
সিঁথির কাছে পাতলা হচ্ছে চুল, বাড়ির বয়স্করা এই সমস্যা ভুগছেন, কী করা উচিত
গুড হেলথ ডেস্ক
‘অন্ধকার বিদিশার নিশা’র মতো চুল এখন রয়েছে শুধু জীবনানন্দের কবিতার পাতায়। আজকের ছুটে চলা দৈনন্দিন যাপনে চুলের যত্ন নেওয়ার সময় নেই বলে চুল ছোট করে ফেলাতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করে মেয়েরা অল্পবিস্তর চুল রোজ ঝরে যায়, সে নিয়ে মাথা না ঘামানোই ভাল। কিন্তু বয়স হলে একটা সমস্যা দেখা দিতে থাকে। তা হল, সিঁথির কাছে পাতলা হতে থাকে চুল (Hair Loss)। মাথার সামনের দিকটা টাক পড়তে থাকে। বাড়ির বয়স্কদের এই সমস্যা বেশি হয়। তবে এখন কমবয়সিরাও এই সমস্যায় ভুগছে। মাথার পেছনের দিকে চুল ঘন হলেও, সামনেটা যেন ক্রমশ ফাঁকা হতে শুরু করে।
যাঁরা সিঁদুর পরেন, তাঁরা যদি এই সমস্যায় ভুগতে আরম্ভ করেন হঠাৎ করেই, তা হলে কিছুদিন সিঁদুরের বদলে অন্য কোনও প্রাকৃতিক রং সিঁথিতে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। সিঁদুরে নানা ধরনের কেমিক্যাল থাকে, তার প্রভাবে স্ক্যাল্পে (Hair Loss) অ্যালার্জি হতে পারে। সেই অ্যালার্জিও কিন্তু সিঁথির আশপাশের চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
আসলে প্রত্যেক কোষের মত চুলেরও নির্দিষ্ট আয়ু আছে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিদিনই কিছু পুরনো চুল ঝরে যায়, একই সঙ্গে নতুন চুল গজায়। কিন্তু মাঝে মাঝে আঁচড়ালেই রাশি রাশি চুল উঠে আসে, শ্যাম্পু করলেও তাই। চুল পড়ার এক অন্যতম কারণ খুস্কি। অনেক সময় সোরিয়াসিস নামক ত্বকের অসুখে খুস্কির মতই মাথায় স্ক্যাল্পে অ্যালার্জি হতে থাকে। যদি মাথার সামনের দিকে এই সমস্যা হয় তখন সেখানে চুল উঠে গিয়ে টাক পড়তে থাকে।
একসঙ্গে অনেক চুল ঝরে যেতে শুরু করলে কয়েকটা টেস্ট করাতে হয়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট করানো দরকার। অ্যানিমিয়া থাকলে চুল পড়া বেড়ে যায়। আবার থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য হলেও চুল ওঠে।
আরও একটা কারণে এটা হয় তা হল খুব টাইট করে চুল বাঁধা। টাইট করে বিনুনি বা খোঁপা বাঁধলেও মাথার সামনের দিকে টান পড়ে চুল উঠতে থাকে। চুল যতটা সম্ভব আলগা, খোলা রাখুন। শক্ত করে বিনুনি বা খোঁপা বাঁধাও চলবে না। হিট স্টাইলিং, হট রোলার, কার্লিং টং ইত্যাদির ব্যবহারও যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করতে হবে। মোদ্দা কথা, চুলে বাড়তি টান পড়া চলবে না একেবারেই। চেষ্টা করুন ভেজা চুল না আঁচড়িয়ে, চুল শুকনোর পরে আঁচড়াতে। এতে চুল কম পড়বে।
স্ট্রেস চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়। তাই দূরে রাখুন মানসিক সমস্যা। চেষ্টা করুন প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্য নিতে। আবার সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, অ্যালার্জি ইত্যাদির কারণে খুব মাথা চুলকোয়, এর ফলেও চুল পড়ে যায়। ওষুধ ব্যবহারে এই সমস্যার সমাধান হয়। আবার মেনোপজের সময় এলে হরমোনের তারতম্যের চুল ঝরে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।