
অ্যালার্জি (Allergy) নানা কারণে হতে পারে। খাওয়াদাওয়া থেকে, ধোঁয়া-ধুলো থেকে অ্য়ালার্জি হয়। আবার ঋতু পরিবর্তনের সময় অ্যালার্জির হানা দেয় নানাভাবে। কেউ বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে অ্যালার্জিতে ভোগেন, আবার কেউ ভোগেন বারো মাস। খাবার থেকে অ্যালার্জি, ঠান্ডা লাগলেই অ্যালার্জি বা ধোঁয়া-ধুলো, ফুলের রেণু নাকে গেলেই হাঁচি-কাশি, শ্বাসকষ্টে নাজেহাল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালার্জি টেস্ট করিয়ে ওষুধ খেয়ে যাওয়ার চেয়ে বরং শরীরের ইমিউনিটি বাড়িয়ে নেওয়া অনেকগুণে ভাল। যখনই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তখনই অ্যালার্জির (Allergy) সমস্যা দেখা দেয়। তাই অ্যালার্জি প্রতিরোধ করতে সবার আগে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দিকে নজর দেওয়া জরুরি। এর জন্য কিছু ইমিউনিটি-বুস্টার ফুড রাখতে হবে রোজকার ডায়েটে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেলস, প্রোটিন যেমন থাকবে তেমনি থাকবে ফাইবার ও অন্যান্য উপাদানও।
অ্যালার্জির সমস্যা কমাতে কী কী খাবেন?
ভিটামিন সি
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। আমলকি, স্ট্রবেরি, আপেল, আঙুরের মতো ফলে ভিটামিন সি ঠাসা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শ্বাসকষ্ট থেকে রেহাই পেতে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ সবজি ও শাকপাতাকে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
দই
দই খেলে নানারকম অ্যালার্জির সমস্যা, সংক্রমণ ঠেকানো যায়। দইতে অ্যান্টি অ্যালার্জিক ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বাড়াতে পারে দই।
ভিটামিন এ ও ই
অলিভ অয়েল, সূর্যমুখী বীজ, বাদাম, হ্যাজেলনাট, অ্যাভোকাডো এসবই ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। অন্যদিকে গাজর, বেল, মিষ্টি আলু ও অ্যাপ্রিকট হল ভিটামিন এ-র উৎস৷ এই খাবারগুলি বায়ু দূষণ ও অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দিতে পারে।
ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে, ওমেগা-ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার শ্বাসনালীর প্রদাহ, এমনকি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সক্ষম। আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া বীজ এবং স্যামন খান। এগুলোতে ভরপুর ওমেগা রয়েছে।
গ্রিন টি
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। অ্যালার্জির বাড়বাড়ন্তকে ঠেকাতে পারে গ্রিন টি। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতেও সাহায্য করে গ্রিন টি।
তুলসী
গলার মধ্যে জ্বালা ধরা বা খুসখুস করলে তুলসীর রস বেশ কার্যকরী। তুলসীর চা তৈরি করে খেতে পারেন। কাঁচা তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলেও শ্বাসকষ্টতে উপকার পাবেন।
অ্যালার্জিজনিত শ্বাসকষ্ট এড়াতে জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড, তৈলাক্ত ও স্পাইসি খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। এইসব খাবারে শরীরকেও ব্যস্ত করা হয় আর ফুসফুসেরও সমস্যা বাড়তে পারে।
অ্য়ালার্জির সমস্য়া বাড়তে বাড়তে হাঁপানিও ধরে যায় অনেকের। অ্যালার্জি থেকে বা অ্যালার্জি ইনডিউসড অ্যাজমায় আক্রান্ত হন বহু মানুষ। বাতাসে থাকা ফুলের রেণু, পোকামাকড়, বিশেষ কোনও খাবার, বালিশ, লেপ তোশকের ধুলো, পোষ্যের লোম ও স্যালাইভা, কোল্ড ড্রিঙ্ক—যে কোনও কিছু থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। দীর্ঘকালীন প্রদাহের ফলে শ্বাসনালীর স্বাভাবিক ব্যস কমে যায় এবং সংবেদনশীলতা বাড়ে। ফলে ফুসফুসের ভিতর বায়ু ঢোকা ও বেরনোর পথ সংকীর্ণ হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে শরীরের নানা অঙ্গেও। তাই অ্য়ালার্জি প্রতিরোধ করা সবচেয়ে আগে জরুরি।