
গলব্লাডারে ক্যানসার সারবে! নতুন পথের খোঁজ বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির
গুড হেলথ ডেস্ক
গলব্লাডারে পাথর (Gallstones) নিয়ে ভুগছেন এমন রোগী প্রতি ঘরে ঘরে৷ রক্তে কোলেস্টেরল বাড়লে বা বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়লে পিত্তরসের ক্ষরণে বাধা আসে। তখন সেই পিত্তরস পিত্তথলিতে জমে পাথর তৈরি করে। কারও যদি হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া বা থ্যালাসেমিয়া থাকে সেক্ষেত্রেও সমস্যা হয়৷ গলব্লাডার স্টোন সকলের জানা, কিন্তু গলব্লাডার বা পিত্তথলিতে ক্যানসার (gallbladder cancer) নিয়ে সচেতনতা কম। অথচ এই ক্যানসারে রোগী মৃত্যুর হার বেশি। পিত্তথলির ক্যানসার ঠেকাতেই এবার নতুন দিশা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জিক্যাল অঙ্কোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. মনোজ পান্ডের নেতৃত্বে গলব্লাডারে ক্যানসার (gallbladder cancer) নিয়ে গবেষণা চলছে। অধ্যাপক-গবেষক মনোজ পান্ডে বলছেন, পিত্তথলিতে ক্যানসার আছে এমন ৩৩ জন রোগীর ওপর গবেষণা চালানো হয়েছে। তাদের গলব্লাডারের টিউমার কোষের নমুনা নিয়ে তার ডিএনএ সিকুয়েন্স বা জিনের বিন্যাস বের করা হয়। এই জিনের সাজসজ্জা দেখেই ক্যানসারের গতিবিধি লক্ষ্য করেন গবেষকরা। তাতেই ধরা পড়ে দু’রকমের জিল যারা ক্যানসারের জন্য দায়ী।
২৭ রকম মিউটেশন ধরা পড়েছে
গবেষকরা বলছেন, টিউমার কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি শুরু হলে তা ধীরে ধীরে গোটা পিত্তথলিতেই ছড়িয়ে পড়ে। ২৭ রকম মিউটেশন (জিনের রাসায়নিক বদল) ঘটাতে পারে এমন ১৪টি জিন খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা যার মধ্যে দুটি জিন p53 এবং KRAS ক্যানসারের জন্য দায়ী। এই দুই জিনের গতিবিধিও খেয়াল করেছেন বিজ্ঞানীরা।
‘মলিকিউলার বায়োলজি’ জার্নালে এই গবেষণার রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই দুই জিন কীভাবে ক্যানসারের জন্য দায়ী এবং কীভাবে এই দুই জিনের প্রভাব কমানো যায় তা খুঁজে বের করা হচ্ছে। এই দুই জিনকে থামিয়ে দিতে পারলেই ক্যানসার কোষের (gallbladder cancer) বাড়বৃদ্ধি বন্ধ হবে।
গলব্লাডারে ক্যানসারের লক্ষণ কী কী?
পেটের ডানদিকে লিভারে পিছনে ও নীচের দিকে পিত্তথলি থাকে। এখানেই পিত্তরস তৈরি হয়। এর কাজ হল বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করা অর্থাৎ হজমে সাহায্য করা। গলব্লাডার ক্যানসার খুবই বিরল ধরণের ক্যানসার। গলব্লাডার ক্যানসার হওয়ার আগে তেমন কোনও লক্ষণ কিংবা উপসর্গ দেখা যায় না। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে।
গলব্লাডারে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি হতে থাকলে তলপেটে যন্ত্রণা হবে, গ্যাসের সমস্যা বাড়বে, পেট ফুলেফেঁপে যাবে, সারাক্ষণ বমিভাব, ক্লান্তি-ঝিমুনি, খিদে কমে যাওয়া, বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দেবে। তাছাড়া ওজন কমতে থাকবে, জ্বর, জন্ডিসের প্রকোপ দেখা দিতে পারে।