
এক পায়ে ব্যালেন্স করে ১০ সেকেন্ড সোজা দাঁড়াতে পারেন? না হলে কিন্তু বড় বিপদ
গুড হেলথ ডেস্ক
শরীরের ব্যালেন্স (Body balance) ঠিকঠাক আছে তো?
সিঁড়ি ভাঙতে, ওঠাবসা করতে, দৌড়োদৌড়ি করতে বা কিছুক্ষণ হাঁটলেই পা কাঁপে কি?
পায়ের শক্তি ও শরীরের ভারসাম্য ঠিক আছে কিনা জানতে একটা সহজ ব্যায়াম করুন। এক পায়ে ভর দিয়ে টানা ১০ সেকেন্ড সোজা হয়ে দাঁড়ান। যদি শরীর না কাঁপে এবং পড়ে না যান, তাহলে জানবেন আপনি একদম ফিট। আর যদি তা না হয় তাহলেই মুশকিল। আপনার আয়ু কিন্তু খুব বেশিদিন নেই।
অবাক লাগছে শুনতে? গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, আমেরিকা ও ফিনল্যান্ডের গবেষকদের একটি দল ১২ বছর ধরে এই গবেষণা করেছেন। শরীরের ভারসাম্যের (Body balance) সঙ্গে আয়ুর যোগসূত্র কতটা তা জানতেই এই পরীক্ষা। শরীরের ভারসাম্য যদি ঠিক না থাকে তাহলে কি বড় অসুখবিসুখের সম্ভাবনা আছে? ব্য়ালেন্স হারিয়ে যেতে শুরু করলে আয়ুও কি কমতে থাকবে? এইসব প্রশ্নেরই প্রাথমিক উত্তর পেয়ে গেছেন গবেষকরা।
পরীক্ষায় কী দেখা গেছে?
মাঝ বয়সি বা বেশি বয়সি পুরুষ ও মহিলাদের মধ্য়ে এই পরীক্ষা চালানো হয়। মূলত প্রৌঢ় ও প্রবীনদেরই বেছে নেওয়া হয়েছিল। যাঁরা এক পায়ে ভর দিয়ে টানা ১০ সেকেন্ডও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি (Body balance) তাঁদের ১০ বছরের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৭০২জনের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। যাঁদের বেছে নেওয়া হয়েছিল প্রত্যেকেরই বয়স ৫১ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে ছিল। বড় কোনও রোগ ছিল না কারও। সকলকে ১০ সেকেন্ডের জন্য এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। হাত দু’পাশে রেখে দৃষ্টি সামনের দিকে স্থির করে দাঁড়াতে বলা হয়। সকলেই ২-৩ বার করে চেষ্টা করেন। তাঁদের মধ্যে ২১ শতাংশ এই পরীক্ষা পাশ করতে পারেননি। আর যাঁরা পাশ করেননি তাঁদের নাকি পরবর্তী ১০ বছরের মধ্য়ে কোনও না কোনও কারণে মৃত্যু হয়।
মারাত্মক হতে পারে ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার, ডিহাইড্রেশন-ডায়েরিয়া না কমলেই ডাক্তার দেখান
শরীরের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে কী হতে পারে?
গবেষকরা বলছেন, শরীরের ব্যালেন্স (Body balance) যদি ঠিক না থাকে তাহলে তা আগাম স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। স্ট্রোক নানা ধরনের হয়। কিন্তু ইস্কেমিক স্ট্রোক দেখা যায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে। মূলত মস্তিষ্কে রক্তচলাচল কমে যাওয়ার কারণেই হয় এই ধরনের স্ট্রোক। আর এই ধরনের স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যে, এর কোনও নির্দিষ্ট লক্ষণ হয় না, যা দেখে সাবধান হওয়া যাবে। কিন্তু কিছু উপসর্গ আগে থেকে টের পাওয়া যায়, যেমন হাত ও পা দুর্বল-শিথিল হয়ে যাওয়া। স্ট্রোকের অন্যান্য সমস্যা হঠাৎ দেখা দেয়। কিন্তু এই উপসর্গটি দেখা দেয় বাকি সব লক্ষণ জানান দেওয়ার আগেই। হাত-পা নাড়াতে সমস্যা হয়। ব্যালেন্স ঠিক থাকে না। প্যারালিসিসের শুরু হয় এ সময় থেকে। আমাদের সব ধরনের নড়াচড়ার সঙ্কেতই আসে মস্তিষ্ক থেকে। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমতে শুরু করলে তা পেশিতেও প্রভাব ফেলে। পেশি শক্ত হয়ে যেতে শুরু করে। তখন হাত-পায়ের ব্যালেন্স ঠিক থাকে না।
হরমোন বা নার্ভের সমস্যা থেকেও এমনটা হতে পারে। তাই শরীরের ব্য়ালেন্স পুরোপুরি বিগড়ে যাওয়ার আগেই ডাক্তার দেখিয়ে নিন। প্রয়োজনে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে কিছু টেস্টও করিয়ে নিন। সুস্থ শরীরে থাকাটাই দরকার।