
ঘামের দুর্গন্ধ (Body odor) খুবই অস্বস্তিকর। গরমে ঘামে ব্যাকটেরিয়ার কারণে গায়ে দুর্গন্ধ হয়। এই দুর্গন্ধ যেমন অস্বাস্থ্যকর, তেমনই লজ্জাজনকও।
রোজ স্নান হয়তো করেন, যথাসম্ভব নিজেকে পরিষ্কার পরিছন্নও রাখেন, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। বগলের দুর্গন্ধ সেই ফিরে ফিরে আসে। নামি-দামি সেন্ট, পারফিউম, বডি স্প্রে-তে সাময়িক সুরাহা হয় ঠিকই, কিন্তু সুগন্ধির কেরামতি শেষ হলেই দুর্গন্ধে (Body odor) নাজেহাল হতে হয়। তবে শুধু দুর্গন্ধটাই বড় সমস্যা নয়। এর পেছনে থাকতে পারে আরও বড় কোনও শারীরিক অসঙ্গতিও।
একটু-আধটু ঘামের গন্ধ (Body odor) হওয়ার মধ্যে সাধারণত কোনও অসঙ্গতি নেই। এটা একটা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার মধ্যেই পড়ে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় দুর্গন্ধ হলে উদ্বেগের কারণ আছে বইকি। খুব বেশি বাজে গন্ধ শরীরের নানা দিক ইঙ্গিত করে।
গায়ে এত দুর্গন্ধ (Body odor) হয় কেন?
জলের কমতি: শরীরে জলের চাহিদা ঠিকমতো পূরণ না হলে গায়ে দুর্গন্ধ হতে পারে। আমরা যে পরিমাণ খাবার খাই, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জল খাওয়াও জরুরি। খাবারের ভেতর নানারকম যৌগ থাকে। জল সেগুলোর সরলীকরণে সাহায্য করে। তা ছাড়া খাবারে অনেক প্রকার ব্যাকটেরিয়া থাকে। সেগুলোর জন্যও গন্ধ হতে পারে গায়ে। বেশি করে জল খেলে এই সমস্যা অনেকাংশে কমে।
সালফারের আধিক্য: আমরা সবাই জানি, সালফারের গন্ধ ভাল হয় না। তাই আমাদের শরীরে যদি সালফারের পরিমান বেশি হয়ে যায়, তাহলে গায়ে গন্ধ হওয়াটা স্বাভাবিক। আমিষ খাবার বিশেষত রসুন, পেঁয়াজ, ডিম, মাংসে সালফার থাকে ভাল মাত্রায়। সে ক্ষেত্রে এসব খাবারে একটু রাশ টানা প্রয়োজন।
মদ্যপানের অভ্যাস: শরীরের জন্য অ্যালকোহল কখনই ভাল না। শরীরে অ্যালকোহলের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে স্বেদ গ্রন্থি অ্যাসিডিক হয়ে যায়। এর ফলে গায়ে দুর্গন্ধ (Body odor) হয়।
মানসিক চাপ: খুব বেশি মানসিক চাপ গায়ের দুর্গন্ধ বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। বেশি উদ্বেগ দেহের অ্যাপোক্রিন গ্রন্থির কার্যকারিতা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে সিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমকে আরও উত্তেজিত করে তোলে এই গ্রন্থি। তাই দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পেতে স্ট্রেস ফ্রি থাকার চেষ্টা করুন। এতে শরীরও ভাল থাকবে।
থাইরয়েডের অসুখ: থাইরয়েডের অসুখ থাকলে গায়ের গন্ধ বেশি হতে পারে। বিশেষত হাইপার থায়রইয়েডিসম থাকলে দুর্গন্ধের মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। তাই থাইরয়েডটা একবার পরীক্ষা করে নেওয়া ভাল।
গায়ের গন্ধ দূর হবে কী করে?
১) কোনও ভাল অ্যান্টি-পারসপিরান্ট অবশ্যই ব্যবহার করুন। ডিওডরান্ট থেকে ব্রেস্ট ক্যানসারের আশঙ্কা থাকলেও অ্যান্টি-পারসপিরান্ট অনেক সুরক্ষিত।
২) গরম কালে ঘামের দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পেতে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা। দিনে অবশ্যই ২-৩ লিটার জল খান। যত জল খাবেন শরীর টক্সিনমুক্ত থাকবে।
৩) সাইট্রাস ফল ত্বকের অ্যাসিডিক মাত্রা বদলে দিতে পারে। বগলে লেবুর রস লাগালেও ঘামের দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পাবেন।
৪) স্নানের পর বেকিং সোডা গুঁড়ো বগলে ছড়িয়ে দিন। নিয়মিত শেভ করুন। বগলে রোম থাকলে ঘাম ও ব্যাকটেরিয়া আটকে যায়। ফলে দুর্গন্ধ বেশি হয়।
৫) টি ট্রি অয়েলের সুন্দর গন্ধ মু়ডও ভাল রাখে। যদি ত্বক জ্বালা না করে তা হলে বগলে, স্তনের নীচে টি ট্রি অয়েল লাগাতে পারেন।