কিডনি ভাল রাখতে কী কী খাবেন, ডায়েটে রাখতে হবে এই দুটি মিনারেলস

গুড হেলথ ডেস্ক

দেখতে ছোট, কিন্তু কাজে মহান। শরীরের এই দু’টি অঙ্গ যদি কাজে ইস্তফা দেয়, তাহলে শত সাধ্যসাধনাতেও জীবনের গাড়ি আর সরসরিয়ে চলবে না। কথায় বলে মানুষ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না। কিডনির (Kidney Stones) ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা অনেকটা সেরকমই। সারা শরীরের জঞ্জাল সাফাইয়ের দায়িত্ব অনেকটাই তার ঘাড়ে। দূষিত রেচন পদার্থ যদি শরীর থেকে বেরিয়ে না যায়, তা হলে তা জমা হয় ভেতরেই। আর একে একে শরীরের বাকি অঙ্গগুলিতে বিকল করতে শুরু করে। তাই কিডনিকে (Kidney Stones) সুখে রাখতে কী কী করণীয় সেটা জেনে নিতে হবে আগে।

সমীক্ষা বলছে, মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের কিডনি স্টোনের (Kidney Stones) ঝুঁকি ২-৩ গুণ বেশি। অন্য দিকে বয়স্ক ও শিশুদের তুলনায় মধ্যবয়সীদের এ রোগ বেশি হয়। তবে কিডনি স্টোন ছোট হলে অনেক সময় তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু বড় স্টোন অপসারণ করতে অপারেশন করার দরকার পড়ে। ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণরা, গর্ভবতী মহিলা, যাঁরা প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগছেন তাঁদের কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা বেশি। প্রাণিজ প্রোটিন অর্থাৎ ডিম, দুধ, মাছ, মাংস বেশি যাঁরা খান, তাঁরাও রয়েছেন ঝুঁকিতে। কিডনির রোগ রয়েছে যাঁদের তাঁদের খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিতেই হবে।

Kidney Stones

কিডনি স্টোন ঠেকাতে ডায়েটে কী কী রাখবেন?

পুষ্টিবিদেরা বলছেন, কিডনির রোগীদের সোডিয়াম আর ফসফরাসসমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাই প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া চলবে না। সেগুলোয় সোডিয়ামের আধিক্য থাকে। নুনের পরিমাণ অনেক কমাতে হবে। প্রোটিন ও দুগ্ধজাত খাবারের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনি স্টোন (Kidney Stones) ঠেকাতে ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সিম্পটোম্যাটিক কিডনি স্টোনের ঝুঁকি কমবে। যাঁদের একবার কিডনিতে স্টোন হয়ে গেছে তাঁদের জন্যও জরুরি এমন ডায়েট। আগে কিডনি রোগীদের ডায়েট নিয়ে ভিন্ন মত দিতেন বিশেষজ্ঞরা। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, রোজকার খাবারে যদি পরিমাণমতো ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে তাহলে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।

 Kidney Disease

বিটরুট, ডালিম, কলা,  মটরশুঁটি, টম্যাটোতে পটাসিয়াম থাকে। তবে পটাসিয়াম খেতে হবে মেপেই।

কিডনি (Kidney Stones) রোগীদের ডায়েটে দিনে ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকলে কিডনি স্টোন হওয়ার ঝুঁকি কমে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

Renal Diet

শরীরের টক্সিন ও বর্জ্য যত কম তৈরি হয়, এমন খাবার বাছতে হবে। ব্লু বেরিজ, স্ট্রবেরিজ, ক্র্যানবেরিজ, কালো আঙুর, অলিভ অয়েল, বাঁধাকপি, ডিমের সাদা অংশ দেওয়া যেতে পারে কিডনি রোগীদের। ভাত বা রুটির বদলে কিনোয়া, ব্রাউন রাইস খেতে পারেন। রোগীর শরীরের ওজনের ১.২ গ্রাম পরিমাণ প্রোটিন খেতে পারেন। অর্থাৎ রোগীর ওজন ৭০ কিলোগ্রাম হলে তিনি দিনে ৭০ গুণ ১.২ গ্রাম অর্থাৎ ৮৪ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারেন। তবে সেটা যদি সকালে খেয়ে নেন, তা হলে আর রাতে খাওয়া চলবে না।

নরম ঠান্ডা পানীয় মূত্রের সাইট্রেট মাত্রা সাঙ্ঘাতিকভাবে কমিয়ে দেয়। তাই এদের এড়িয়ে চলা ভাল। এ ছাড়া এ সব পানীয়তে থাকা ফসফোরিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। বিয়ার ও অন্যান্য মদেও কিন্তু কিডনির জন্য ক্ষতিকর পিউরিন থাকে। তাই মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।