দাঁতের গোড়ায় গর্ত, মাড়িতে অসহ্য যন্ত্রণা, ঘরোয়া উপায়ে সারবে কী করে?

গুড হেলথ ডেস্ক

দাঁতের সমস্যা ঘরে ঘরে। দাঁতের ব্যথায় একবারও ভোগেননি এমন বাঙালি খুব কমই আছে। বয়স্করা শুধু নয়, দাঁতের সমস্যায় এখন জেরবার ছোটরাও (Cavities)। সবসময় জাঙ্ক ফুড খাওয়া, অত্য়ধিক মিষ্টি, চকোলেট, ক্যান্ডি, আইসক্রিমে দাঁতের বারোটা বেজে যাচ্ছে। তার ওপরে দাঁতের পরিচর্যাও সেভাবে হয় না। ডেন্টাল চেকআপ শেষ কবে করিয়েছেন কেউ মনেই করতে পারবেন না। সব মিলিয়ে দাঁতের বড় বিপদ। ধকল সইতে হচ্ছে মাড়িকেও।

দাঁতের গোড়ায় গর্ত, মাড়ি থেকে রক্তপাত, দাঁতে হলদেটে ছাপ, যন্ত্রণা হামেশাই হচ্ছে। দাঁতে মূলত দু’ধরনের সমস্য়া বেশি দেখা দেয়–দাঁতের ক্ষয়জনিত রোগ এবং মাড়ির সমস্যা। দাঁতের ওপরের চকচকে এনামেল উঠে গিয়ে হলদেটে ছাপ পড়ে। তারপর একদিন দেখা যায় দাঁতের গোড়া ক্ষয়ে যাচ্ছে। গর্ত বা ক্য়াভিটি (Cavities) হয়েছে যাকে অনেকে বলেন দাঁতে পোকা হয়েছে। সেই গর্তে খাবার জমে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। একই সঙ্গে ভুগতে থাকে মাড়িও। খাবার জমে তার থেকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে মাড়িতে ক্ষত হয়, সেখান থেকে রক্ত পড়ে।

দাঁতের ক্য়াভিটি (Cavities) কী?

ক্যাভিটি হল দাঁতের ছিদ্র। যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। দাঁত ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে উপরের চকচকে অংশ ক্ষয়ে দাঁদের গোড়ায় ক্ষয়রোগ হয়ে যায়। একে বলে ক্যাভিটি। সেটা দাঁতের গোড়া পর্যন্ত চলে গেলে সমস্যা হয়। তাতে খাবার জমে পচে গিয়ে দাঁতের ক্ষতি করে। যন্ত্রণা হয়।

Dental Caries

দাঁতের ক্যাভিটি-র দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসা না হলে দাঁতের ব্যথা শুরু হয়। আলট্রাসোনিক স্কেলিং করে দাঁত পরিষ্কার করলে ক্যাভিটির ভয় কমে। প্রত্যেকের উচিত ছ’মাসে এক বার অন্তত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে দাঁতের সমস্যা রয়েছে কি না তা জানা। বছরে এক বার স্কেলিং করা যেতে পারে। সমস্যা গভীরে গেলে দাঁত না তুলে রুট ক্যানাল ট্রিটমেন্ট করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে দাঁতের যে মূলটি রয়েছে তার সঙ্গে স্নায়ুর যোগাযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ ভাবে দাঁতকে যন্ত্রণাহীন করে রাখা যায়। রুট ক্যানাল ট্রিটিমেন্টের মাধ্যমে ব্যথা হচ্ছে এমন দাঁতকে না তুলে দীর্ঘ দিন সুস্থ রাখা যায়।

Tooth Decay

ঘরোয়া উপায়েও দাঁতের সমস্য়া থেকে রেহাই মেলে

প্রতিদিন দু’বার দু’মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে এবং রাতে খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রম ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। তিন মাস পর পর ব্রাশ বদলাতে হবে।

খুব মিস্টি জাতীয় বা আঠালো খাবার বা পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। দাঁতে আটকে যায় এমন ক্যান্ডি বা চকোলেট খাবেন না, বাচ্চাদের একদমই দেবেন না।

বেশি করে জল খেতে হবে।

কুলি করার সময় আঙুল দিয়ে মাড়ি ম্যাসাজ করতে হবে (Cavities)।

Cavity

দাঁত পরিষ্কার করার জন্য খুব দামি পেস্ট ব্যবহার করার দরকার নেই। তা বলে আবার খুব সস্তা পেস্টও ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনার দাঁতের জন্য কী ধরনের পেস্ট দরকার তা বিশেষজ্ঞের থেকে জেনে নিন।

নুন গরম জলে মাঝেমধ্যে মুখ কুলি করে পরিষ্কার রাখবেন। এতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কম হয়।

ক্যাভিটির সমস্যা থাকলে নিম ডাল খুব ভাল প্রতিষেধক। নিম কাঠি দিয়ে অনেকেই দাঁত মাজেন, যা দাঁত ভাল রাখে। নিমে থাকা ফাইবার দাঁতে গর্ত বা ক্যাভিটি হতে দেবে না। কয়েকটা নিমপাতা চিবিয়ে দেখুন। তেতো স্বাদের জন্য নিম অনেকে পছন্দ না করলেও এটা ক্যাভিটি সারাতে খুব ভাল কাজ করে।

সিট্রাস জাতীয় ফল বেশি খেতে হবে যাতে ভিটামিন সি থাকে। ক্য়াভিটির ব্যথা সারাতে খুব উপকারি।
তিলের তেল বা নারকেল তেলও দাঁতের জন্য ভাল। তিলের তেল দাঁতে প্লাক জমতে দেয় না।

লবঙ্গ দাঁতের জন্য খুব উপকারি। এর অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান দাঁতে ক্যাভিটি হতে দেয় না।